ভারতীয় রান্নাঘরে এমন কিছু মশলা থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আর এই তালিকায় লবঙ্গ, এলাচ, দারচিনি থেকে শুরু লকরে স্টার অ্যানিস এই সবই কিন্তু রয়েছে। আর এই মশলার সুগন্ধ যেমন রান্নায় স্বাদ বাড়ায় তেমনই কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্যেও (sugar cravings) খুব উপকারী। আগেকার দিনে মুনি-ঋষিরা ভরসা রাখত এই সব মশলাতেই। মশলা ব্যবহার করে যেমন শরীর সুস্থ রাখতেন তেমনই ওষুধও তৈরি হত। এছাড়াও ঋতুভিত্তিক বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধেও কাজে লাগে এই সব মশলা। মিষ্টি খেতে কিন্তু কমবেশি আমাদের সবারই ভাল লাগে। তেমনই ভাল লাগে মিষ্টি কথাও। কিন্তু এই মিষ্টির প্রতি লোভ যদি মাত্রাছাড়া হয়ে যায় তাহলে কিন্তু জীবন একেবারে তেতো হয়ে যায়।
মিষ্টি খেতে ভাল, কিন্তু শরীরের জন্য তা মোটেই উপকারী নয়। মিষ্টি খেলে যেমন রক্তে বাড়ে সুগারের মাত্রা তেমনই কিন্তু শরীরের অনেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গও বিকল হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও বেশি মিষ্টি খেলে ওজনও বাড়ে। কিন্তু কী ভাবে এই মনিষ্টির লোভ সংবরণ করবেন? কী ভাবেই বা সুগার রাখবেন নিয়ন্ত্রণে! এর দাওয়াই হিসেবে প্রাচীন আর্য়ুবেদ শিলমোহর দিয়েছে লবঙ্গকেই। বেশি মিষ্টি খেলে দাঁতে পোকা হবে, এমনটা ছোটবেলা থেকেই শাসিয়ে আসেন বড়রা। আরদাঁতের ব্যথা কমাতে খুবই ভাল কাজ করে লবঙ্গ। তেমনই মনকে মিষ্টি খেতেও দূরে রাখতে সাহায্য করে লবঙ্গ।
লবঙ্গের মধ্যে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্যের জন্যই কিন্তু লবঙ্গ সর্দি-কাশিতে ভাল কাজ দেয়। এছাড়াও লবঙ্গ ভাল অ্যান্টিসেপটিকও। যে কারণে গলা ব্যথা কিংবা খুশখুশে কাশিতে মুখে লবঙ্গ রাখার কথা বলা হয়। লবঙ্গের মধ্যে থাকা ঝাঁঝই যে কোনও ব্যথা কমিয়ে দেয় নিমেষের মধ্যে। খেয়াল করে দেখবেন লবঙ্গ বেশিক্ষণ মুখে রাখলে কিন্তু জিভ মোটা হয়ে যায়।
সেই সঙ্গে ঝাল লাগে, এমনকী অনেকক্ষণ পর্যন্ত জিভ বিস্বাদ লাগে। আর লবঙ্গের মধ্যে থাকা তেলই এর জন্য দায়ী। যে কারণে যাঁরা অতিরিক্ত পান খান, তাঁদেরও নেশা ছাড়তে মুখে লবঙ্গ রাখার কথা বলা হয়। এছাড়াও লবঙ্গের কিন্তু অনেক উপকারিতা রয়েছে। যেমন
ম্যাঙ্গানিজের ভাল উৎস হল লবঙ্গ। ১ চামচ লবঙ্গের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ভিটামিন কে থাকে। আর এই ম্যাঙ্গানিজ কিন্তু হাড় ও দাঁতের গঠনে সাহায্য করে।
লবঙ্গের মধ্যে থাকে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। যা আমাদের সংক্রমণ রোধ করে। সেই সঙ্গে লবঙ্গের মধ্যে থাকা ইউজেনল আমাদের ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে।
এছাড়াও কিন্তু লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে নাইজেরিসিন। বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই উপাদানের জন্যই রক্ত থেকে শর্করা বিভিন্ন কোষে পৌঁছে দেওয়া, ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলির কার্যক্ষমতা বাড়ানো ও ইনসুলিন নিঃসৃত হওয়ার পরিমাণ বাড়ানোর মতো কাজ ভাল ভাবে হয়। তাই মধ্য মাত্রার ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে লবঙ্গ ভাল কাজে দেয়।