যুগ যুগ ধরে যে কোনও উত্সবে বাঙালি মিষ্টিকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। ১৯০৪ সাল থেকে শুরু। বর্ধমানের মিষ্টি প্রস্তুতকার ভৈরবচন্দ্র নাগ সর্বপ্রথম মিহিদানা তৈরি করেন। বর্ধমানের ভূস্বামী বিজয়চাঁদ মহতাব বড়লাট জর্জ ল্যাথালিয়েল কার্জনের বর্ধমান ভ্রমণ স্মরণীয় করতে অসাধারণ মিহিদানা মিষ্টি বানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ঐতিহ্যবাহী এই মিষ্টি ছোট ছোট আকারে বুন্দিয়ার আদলে তৈরি রঙ-বেরঙের এই অসাধারণ মিষ্টিটি ভোজনরসিকদের মন জয় করে নিয়েছিল অনায়াসে। বেসন, ঘি, চিনি, জাফরন, ও চাল দিয়ে তৈরি মিহিদানা বিশ্ববিখ্যাত। তবে এবার দোকানের নয়, বাড়িতেই বানিয়ে নিন মন ভাল করা মিহিদানা। রইল সহজ রেসিপি
উপকরণ –
১৫০ গ্রাম বেসন
সামান্য ফুড কালার
১ থেকে দেড় কাপ চিনি
১ কাপ জল
পদ্ধতি
প্রথমে একটি পাত্রে বেসনটিকে নিয়ে ভাল করে চেলে নিতে হবে। বেসন ভাল করে চেলে নিলে ব্যাটারটি স্মুথ হবে। এরপর একেবারে জল না দিয়ে অল্প অল্প জল দিয়ে গুলে একটা ব্যাটার বানিয়ে নিতে হবে। তারপর তাতে ফুড কালার দিয়ে মিশিয়ে নিন। ব্যাটারটি খুব ঘন করে তৈরি করবেন না। একটু পাতলা করবেন যাতে চামচের গায়ে হালকা লেগে থাকে। এরপর ঢাকা দিয়ে ৩০মিনিটের জন্য রেখে দিন।
এরপর একটি পাত্র বা কড়াতে ১ কাপ জল নিয়ে তাতে এক থেকে দেড় কাপ চিনি ঢেলে দিন। চিনিটা জলে ঢেলে বেশ কিছুক্ষণ নাড়তে থাকুন। এক টুকরো পাতি লেবু কেটে জলে দিয়ে দিন। চিনিটা ভাল মতো গুলে মিষ্টির রস বানিয়ে ফেলুন। চাইলে কয়েকটা এলাচও দিয়ে দিতে পারেন। পাতি লেবু দিলে রসটা ঠান্ডা হয়ে এলেও জমে যায় না। কিছুক্ষণ জাল হলে দেখে নিন রসটা চটচটে হয়ে এসছে কিনা তারপর গ্যাস বন্ধ করে ঠান্ডা হতে দিন।
অন্য একটি কড়াতে বেশি পরিমাণে তেল দিয়ে তেল গরম করে নিন। এরপর মিহিদানা বানানোর জন্য একাধিক ছিদ্রযুক্ত ছাঁকনি নিয়ে তাতে বেসনের ব্যাটারটা দিয়ে কড়ার উপর ধরে রাখুন। এবং ছাঁকনিটা নাড়তে থাকুন। ছোটো ছোটো গোল বলের মতো হয়ে ভাজা হতে থাকবে। এক থেকে দেড় মিনিট নেড়ে চেড়ে ভেজে নিন। হালকা রঙ বদলালে দানাগুলোকে একটি ছাকনি হাতা দিয়ে তুলে নিয়ে একটি পাত্রে ঢেলে রাখুন। এইভাবে বাকি মিহিদানাগুলোকেও ভেজে নিন।
এরপর রসের থেকে এলাচ আার লেবুর টুকরোটা তুলে রাখুন। তারপর মিহিদানা গুলোকে হালকা গরম রসের মধ্যে দিয়ে দিন। রঙ আরও গাঢ় করার জন্য আরও একটু ফুড কালার দিয়ে দিতে পারেন। অল্প আঁচে তারপর মিহিদানা গুলোকে ফুটিয়ে নিতে হবে। যাতে রসটা সুন্দর ভাবে ঢুকে যায়। ১৫ মিনিট পর গ্যাস বন্ধ করে দিন। এরপর ঢাকা দিয়ে এক থেকে দেড় ঘন্টা ঢাকা দিয়ে রেখে দিন। দেড় ঘন্টা পর ঢাকাটা খুলে দেখে নিন এবং নেড়ে নিন।