Food: বিরিয়ানির শেষপাতে ‘ফিরনি’র গল্প জানেন?

TV9 Bangla Digital | Edited By: megha

Dec 17, 2021 | 3:33 PM

বিরিয়ানি শেষ পাত সব সময় দখল করে রাখে এই ফিরনি। ভারতে এই খাবারের জনপ্রিয়তা থাকলেও এটির জন্মদাতা পারস্যরা।

Food: বিরিয়ানির শেষপাতে ফিরনির গল্প জানেন?
ফিরনি

Follow Us

ভারতীয় খাবারের একটি বিশেষ পদ হল মিষ্টি। ভারতের যে রাজ্যেরই বাসিন্দা হন না কেন শেষ পাতে মিষ্টি থাকতেই হবে। আর দেশের বৈচিত্রের মধ্যে খাবারেরও বিচিত্রতা বেশ লক্ষ্য করা যায়। এরকমই একটি মিষ্টি জাতীয় পদ হল ফিরনি।

বিরিয়ানি শেষ পাত সব সময় দখল করে রাখে এই ফিরনি। ভারতে এই খাবারের জনপ্রিয়তা থাকলেও এটির জন্মদাতা পারস্যরা। মনে করা হয় যে পারস্য এবং মিডল ইস্টের দেশ গুলিতেই প্রথম ফিরনি খাওয়ার চল শুরু হয়। সেখান থেকে মোঘলরা খাওয়া শুরু করে ফিরনি। আর মোঘলদের হাত ধরেই ভারতে প্রবেশ করে ফিরনি। মুঘল সাম্রাজ্যেই প্রথম মাটির বাটিতে দুধ, বাদামী এবং সুগন্ধি চাল দিয়ে তৈরি করা ফিরনি।

তবে ফিরনির উৎপত্তি স্থল হল পারস্য। সেই সময় পারস্যে ক্রিমি রাইস পুডিংকে দেবদূতদের খাবার হিসাবে বিবেচনা করা হত। সেই সময় ‘ফিরনি’ নয়, শির বিরিঞ্জ নামে পরিচিত ছিল এই খাবার। মনে করা প্রোফেট মুহাম্মদ যখন ঈশ্বরের সঙ্গে দেখা করার জন্য স্বর্গের ৭ম তলায় উঠে ছিলেন, তখন তিনি প্রথম এই খাবারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

ঘন দুধে চাল গুঁড়ো, গোলাপ জল, কাওরা এসেন্স, শুকনো ফল, জাফরান, পেস্তা এবং বাদাম, কাজু, কিশমিশ এবং এলাচ দিয়ে তৈরি করা হয় ফিরনি। ভারতে এই ফিরনির অনেক সংস্করণ রয়েছে, যার মধ্যে ক্ষীর এবং পায়সাম জনপ্রিয়। ইরানে এটি ফেরেনি নামে পরিচিত। অন্যদিকে মিশর এবং তুরস্কে এই সুস্বাদু খাবারকে মুহাল্লাবিয়া বলা হয়।

ইউরোপে এই খাবারের গল্প একটু আলাদা। ইউরোপে চালের পুডিং প্রথম সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে প্রবর্তিত করেছিল রোমানরা। তারা এই খাবারকে পেটের সমস্যা এবং হজমের সমস্যা নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করত। এগুলি চালের পাত্র হিসাবে বিবেচিত হত, যেখানে ভাত সেদ্ধ করে গরুর দুধের সাথে মিশ্রিত করা হত এবং তারপরে চিনি দিয়ে এটিকে মিষ্টি পদে পরিণত করা হত।

চিনে এই সুস্বাদু খাবারটিকে “চীনা আট জুয়েল রাইস পুডিং” বলা হত কারণ এটি আটটি বিভিন্ন ধরণের বিদেশী ফল এবং মধু দিয়ে তৈরি করা হত। সেই আটটি ফলের মধ্যে ছিল আখরোট, কাঠবাদাম, শীতের তরমুজ, লিচু, মারাশ্চিনো চেরি এবং জুজুবস।

ভিন্ন দেশে ভিন্ন নামে ফিরনি খাওয়ার রীতি রয়েছে। বেশ কিছু রাজ্যে এর রন্ধনপ্রণালীও বেশ আলাদা। কিন্তু ভারতের মত দেশে বিরিয়ানির পর ফিরনি, শুভ কাজে ক্ষীর এবং ওনামের সময় পায়েস হিসাবে খেতে পারেন। ভারতীয় সংস্কৃতিতে এই তিনটি সম্পূর্ণ ভিন্ন পদ। কিন্তু এরা প্রত্যেকেই ‘ফিরনি’র বংশধর। এই খাবারগুলি তৈরি করতেও প্রায় একই সামগ্রীর প্রয়োজন হয়, শুধু কোনওটা তরল তো কোনওটা কঠিন।

আরও পড়ুন: মোগ মোগ থেকে মোমো হয়ে ওঠার গল্প জেনে নিন!

Next Article