Lakshmi Puja Special: গঙ্গাজলি ছাড়া কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো অসম্ভব! রইল তার রেসিপি
পুরনো কলকাতায় বিজয়াদশমী ও কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় চিরা জিরা ও গঙ্গাজলি বানানো হত। বাংলার বুক থেকে হারিয়ে যাওয়া এই প্রসিদ্ধ ও অসাধারণ স্বাদের মিষ্টি বর্তমানে পুরনো আমলের মানুষের কথা ও বইয়ের শেষ পাতায় পাওয়া যাবে।
প্রতি বছরে আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো পালিত হয়। বলা হয় এই পুজো করলে তার ঘরে রাজলক্ষ্মী,ভাগ্য লক্ষ্মী, কুল লক্ষ্মী ও যশ লক্ষ্মী অচলা থাকেন। তার কোনও কিছুরই অভাব থাকে না। লক্ষ্মী মানে শ্রী, সুরুচি। লক্ষ্মীসম্পদ আর সৌন্দর্যের দেবী। বৈদিক যুগে মহাশক্তি হিসেবে তাকে পুজো করা হত।
এসো মা লক্ষ্মী বোসো ঘরে… আমার এ ঘরে থাকো আলো করে… এই প্রার্থনা বাংলার ঘরে ঘরে করা হয় এই বিশেষ তিথিতে। এই দিন প্রতিটি বাঙালির বাড়িতেই লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়। তবে লক্ষ্মীপুজোকে কেন্দ্র করে বাঙালির ঘরে ঘরে মিষ্টি তৈরি, নানারকম নিরামিষ ও সুস্বাদু খাবার তৈরি প্রচলন ছিল। পুরনো কলকাতায় বিজয়াদশমী ও কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় চিরা জিরা ও গঙ্গাজলি বানানো হত। বাংলার বুক থেকে হারিয়ে যাওয়া এই প্রসিদ্ধ ও অসাধারণ স্বাদের মিষ্টি বর্তমানে পুরনো আমলের মানুষের কথা ও বইয়ের শেষ পাতায় পাওয়া যাবে।
সাধারণত লক্ষ্মীপুজোয় নারকেল নাড়ু, চিনির নাড়ু, মুড়ির মোয়া, ক্ষীরের নৈবেদ্য ভোগ হিসেবে দেওয়া হয়। তারসঙ্গে গঙ্গাজলি ছাড়া কোজগরা পুজো সম্পন্ন হয় না।
গঙ্গাজলি বানাতে কী কী লাগবে
নারকেল বাটা বা কোড়া- ১ কাপ, চিনি ১ কাপ, জল আধ কাপ, ছোট এলাচ ৪টে, কর্পূর-এক চিমটে,
পদ্ধতি
নারকেলটা প্রথমে জলে বেশকিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখতে হবে যাতে কোড়ানোর সময় তার দু’এক গাছা খয়েরি রঙের দাঁড়িগোঁফ ধবধবে সাদা নারকেল কোড়ার সঙ্গে না মিশে যায়। এরপর নারকেলের সাদা অংশটা ছাড়িয়ে বেটে নিতে হবে। অনেকে গরমজলে ধুয়ে তেলটা বের করে নেন।
এবার খুব কম আঁচে চিনি ও জল দিয়ে তাতে এলাচ গুলো আধ থেঁতো করে দিতে হবে যাতে দানাগুলো বেরিয়ে না আসে। এবার চিনির রস গাঢ় হলে এলাচ গুলো তুলে ফেলে তাতে নারকেল বাটা দিয়ে নেড়ে ছেড়ে নারকেলের সঙ্গে রস একেবারে মিশিয়ে দিতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন রস ক্যারামেলাইস না হয়ে যায় বা নারকেল লাল না হয়।
এবার একচিমটে কর্পূর মিশিয়ে একটা বড় ট্রে বা থালায় ঢেলে শুকোনোর জন্য অপেক্ষা করতে হবে। শুকিয়ে গেলে তাকে আর একবার শীলে বা মিক্সিতে বেটে গুঁড়ো পাউডারের মতো তৈরী করতে হবে। অনেকে এইভাবেই রাখেন গঙ্গাজল বা গঙ্গাজলিকে। অনেকে আবার এটা দিয়ে ছাঁচ বানান। সেক্ষেত্রে একটা মাড় ছাড়া সুতি বা মলমলের কাপড় একটা বাটির মধ্যে পেতে দিয়ে তার ওপর গঙ্গাজলির পুরটা খুব চেপেচেপে ভরতে হবে যাতে বাটির আকার ধারণ করে। এবার সাবধানে কাপড়টা টানলেই গঙ্গাজলি বা গঙ্গাজলি মিষ্টির ছাঁচটা বেড়িয়ে আসবে।