Gupo sandesh: বিজয়াদশমীর মিষ্টিমুখ করাতে বাড়িতেই বানিয়ে ফেলুন বাংলার প্রাচীন ও সুস্বাদু ‘গুপো সন্দেশ’!
ময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ঐতিহ্যবাহী ও বহু পুরনো বাঙালি মিষ্টির চাহিদা এখন নেই বললেই চলে। আগেকার সময়, কাঠের জ্বালে ছানার পাক করে তাকে পিটিয়ে পিটিয়ে জল বের করা হত। সেই ছানা হাতে করে পাকিয়ে সন্দেশের আকার দেওয়া হত।
গুপো সন্দেশ। গুপ্তিপাড়ার এক অসাধারণ বাঙালি মিষ্টি। কাটোয়া-নদীয়া রুটের গুপ্তিপাড়াকে আগে গুপ্ত বৃন্দাবন বলা হয়। লোকমুখে সেই নাম বিবর্তন ঘটতে ঘটতে এই এলাকার নাম হয়ে গিয়েছে গুপ্তিপাড়া। এই গুপ্তিপাড়াতেই জন্ম হয়েছিল ভোলা ময়রা, এখানে প্রথম তৈরি হয়েছিল মাখাসন্দেশ। এই মাটিতে সৃষ্টি হয়েছিল গুপো সন্দেশ। কলকাতার অভিজাত মহলে একসময় তুমুল আলোড়ণ তুলেছিল এই অসাধারণ স্বাদের মিষ্টিটি। বাড়ির অনুষ্ঠান কিংবা শুভ অনুষ্ঠানে গুপ্তিপাড়ার এই জনপ্রিয় সন্দেশটি নৌকো করে পাঠানো হত। নরম পাকের ডবল সন্দেশের স্বাদ যে পেয়েছে, তা ভোলার নয়।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ঐতিহ্যবাহী ও বহু পুরনো বাঙালি মিষ্টির চাহিদা এখন নেই বললেই চলে। আগেকার সময়, কাঠের জ্বালে ছানার পাক করে তাকে পিটিয়ে পিটিয়ে জল বের করা হত। সেই ছানা হাতে করে পাকিয়ে সন্দেশের আকার দেওয়া হত। দেখতে অনেকটা ডবল সন্দেশ জোড়া দেওয়ার মতো। খাঁটি ছানার তৈরি এই সন্দেশকে গুপো সন্দেশ বলা হয়। শীতকালে এই সন্দেশ খেজুর গুড় দিয়ে বানানো হয়। অন্য সময় চিনি দিয়ে মিষ্টির স্বাদ আনা হয়। এখনও গুপ্তিপাড়ায় গেলে কয়েকটি মিষ্টির দোকানে এই সন্দেশ পাওয়া যাবে। কলকাতাতেও পাওয়া যায়। তবে খদ্দেরদের চাহিদা অনুযায়ী বানানো হয়।
জানা যায়, ১৮৫৪ সালে বাংলায় প্রথম রেলপথ হওয়ার আগে থেকেই গুপ্তিপাড়া থেকে নৌকা পথে সন্দেশ যেত কলকাতা-সহ বাংলার বিভিন্ন স্থানে। উৎসবে অনুষ্ঠানে কলকাতার অভিজাতরা গুপ্তিপাড়ায় ছুটতেন গুপো সন্দেশ কিনতে। ঊনবিংশ শতকের প্রথম ভাগে পানিহাটির গুপো সন্দেশ কলকাতায় খুব জনপ্রিয় হয়।
বাঙালি মিষ্টির মাহাত্ম্য বিশ্বজোড়া। খাঁটি ছানা, ময়রার হাতের জাদু ও সঠিক পাক তৈরির কৌশল, এগুলি হল বাঙালি মিষ্টি তৈরির উপাদান। এই বছর বিজয়াদশমীতে বাড়িতে অতিথি এলে তাঁদেরকে এই মিষ্টি তৈরি করে পরিবেসন করতে পারেন। ঐতিহ্যবাহী তো বটেই,মুখে দিলেই যে মিষ্টির গুরুত্ব বোঝা যায়, সেই মিষ্টি যদি এবার বাড়িতেই বানিয়ে ফেলা যায়, তা হবে এই বছরের সবচেয়ে বড় সাফল্য।
পদ্ধতি
গুপো সন্দেশের মূল উপাদান গরুর দুধের ছানা, চিনি এবং খেজুর গুড়। আদিতে মাখা সন্দেশ থেকে গুপো সন্দেশ তৈরি হলেও, বর্তমানে মাখা সন্দেশের থেকে গুপো সন্দেশের পাক অনেকটাই আলাদা। বিশাল কড়াইতে প্রথমে ছানা পাক দেওয়া হয়। তারপর সেই ছানা কাপড়ে মুড়ে তাতে কাঠ দিয়ে বারি মেরে মেরে অতিরিক্ত জল বের করে দেওয়া হয়। এরপর সেই ছানা হাতে পাক দিয়ে দু’টি করে সন্দেশ জুড়ে জুড়ে তৈরি হয় গুপো সন্দেশ।
আরও পড়ুন: Durga Puja Recipe: পুজোর শেষে মিষ্টিমুখ মাস্ট! বিজয়াদশমীতে তৈরি করুন নরম-তুলতুলে কমলাভোগ