বিশ্ব জুড়ে ক্রমেই জটিল হচ্ছে ডায়াবেটিসের থাবা। এই মুহূর্তে প্রায় সব বাড়িতেই একজন করে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রয়েছেন। ডায়াবেটিস ২ রকমের হয়। টাইপ ১ আর টাইপ ২। আজকাল অধিকাংশই আক্রান্ত হচ্ছেন টাইপ ২ ডায়াবেটিসে। এই ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী আমাদের পরোজকারের জীবনযাত্রা। নিয়মিত ভাবে জাঙ্ক ফুড, শর্করা বেশি খেলে এবং কোনও রকম শরীরচর্চা না করলে তখনই জাঁকিয়ে বসে এই সব সমস্যা। সেই সঙ্গে রক্তে চিনির মাত্রা অতিরিক্ত হলে সেখান থেকে কিডনি, হার্টের সমস্যা, লিভারের সমস্যার ঝুঁকি থেকে যায়। এমনকী আচমকা স্ট্রোকও হতে পারে। আর তাই রক্ত পরীক্ষায় ডায়াবেটিস ধরা পড়লে প্রথম থেকেই সাবধানে থাকতে হবে। সেই সঙ্গে রোজকারের খাবারের তালিকাতেও আনতে হবে বদল।
ডায়াবেটিসে রক্ত শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইনসুলিন ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু এটা মোটেও স্থায়ী সমাধান নয়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে রোজ কী খাবার খাচ্ছেন, কত ঘন্টা ঘুম হচ্ছে, কেমন ঘুম হচ্ছে, কত ঘন ঘন খাবার খাচ্ছেন সেদিকেও নজর রাখতে হবে। ডায়াবেটিসের রোগীদের শরীরের নিত্য কার্যকলাপেও প্রভাব পড়ে। যে কারণে রোজ শরীরচর্চাী জরুরি। অনেক সময় ডায়াবেটিসের রোগীরা এমন কিছু খাওয়ার খেয়ে ফেলেন যেখান থেকে শরীরে একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। রক্তে শর্করার মাত্রা ১০০ mg/dl-এর মধ্যে থাকাটাই বাঞ্ছনীয়। খাবার খাওয়ার আগে ৭০mg/dl এবং খাবার খাওয়ার ২ ঘন্টা পর ১৮০ mg/dl এর মধ্যে থাকলে তবেই তা স্বাভাবিক। এর চেয়ে বেশি হলেই তখন সমস্যা আরও জাঁকিয়ে বসে। আর তাই যে সব খাবার ডায়াবেটিসের রোগীরা ছুঁয়েও দেখবেন না-
কলা- কলার মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি ৬। কলা সারা বছর পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টিও আসে কলা থেকে। তবে ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য তা একেবারেই ভাল নয়। একটি মাঝারি আকারের পাকা কলায় শর্করা থাকে ১৪ গ্রাম। তবে সুগার রোগীরা কাঁচা কলা খেতে পারেন।
ব্রাউন রাইস- স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভাল হল ব্রাউন রাইস। এই চালের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার। এছাড়াও ব্রাউন রাইসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট থাকে। যে কারণে এই চাল হজমের পরই অতিরিক্ত পরিমাণ শর্করা তৈরি হয়। আর এই শর্করা দ্রুত গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। তাই ব্রাউন রাইস খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
মিষ্টি আলু- ডায়াবেটিসের রোগীদের মিষ্টি আলু খাওয়াও একেবারে ঠিক নয়। এই আলুতে ফাইবার আর ভিটামিন থাকলেও স্টার্চের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি থাকে। যে কারণে তাড়াতাড়ি রক্ত শর্করা বেড়ে যায়।
প্রাকৃতিক চিনি- সুগারে চিনি খাওয়া মানা। পরিবর্ত হিসেবে অনেকেই প্রাকৃতিক চিনি খান। তবে এই চিনি শরীরের জন্য একেবারেই ভাল নয়। এতে শরীরের একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। তাই চিনি এড়িয়ে চলুন। বিনা চিনিতে চা খান। তরকারিতে মিষ্টি খাবেন না।