দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তি আমাদের যে ভাবে গ্রাস করেছে, তাতে আমাদের জীবনযাত্রা সহজ হয়ে উঠলেও কোথাও গিয়ে ক্ষতি হচ্ছে আমাদেরই। আমাদের দৈনন্দিন জীবন যেমন মোবাইল, ইন্টারনেট, লাইট, ফ্যান ছাড়া অচল, ঠিক সেরকমই আরেকটি ইলেকট্রনিক বস্তু রয়েছে, যা না থাকলে হয়তো আমরা প্রতি মুহূর্ত সমস্যায় পড়ব, তা হল ফ্রিজ। খাবার সঞ্চয় করে রাখার একমাত্র সহজ পদ্ধতি হল এই ফ্রিজ।
বাজার থেকে কিনে আনা সবজি হোক বা কোনও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, কিংবা বাড়ির রান্না করা খাবার, সব কিছুইকেই আমরা সংগ্রহ করে রাখি এই ফ্রিজে। কিন্তু আপনি কি জানেন এই ফ্রিজে সব ধরনের খাবার সংগ্রহ করে রাখা উচিত নয়। তাহলে আসুন আজকে আমরা আপনাকে জানাব যে কোন খাবার আপনি ফ্রিজে রাখতে পারবেন না এবং কেন।
প্রতিদিন বাজার যাওয়া সম্ভব নয়, তাই সপ্তাহে একদিন বা দু’দিন বাজার গেলেন। প্রয়োজনীয় সব শাক, সবজি, ফল কিনে আনলেন এবং যথারীতি তা ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখলেন। কিন্তু আসল বিষয় হল, এই শাক সবজি দ্রুত পচনশীল বস্তু। এগুলি সতেজ থাকবে ভেবে আপনি এগুলিকে ফ্রিজে রাখেন। পরমুহূর্তে তা ফ্রিজ থেকে বার করলেই নেতিয়ে যায়। অর্থাৎ আপনার পরিশ্রম বৃথা হয়ে যায় এখানে। তাই ফ্রিজে এই শাক সবজিকে না পচিয়ে তা দিনের দিন খেয়ে নেওয়াই ভাল।
একই ভাবে, ফলকেও ফ্রিজের মধ্যে রাখবেন না। ফল স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেই ভাল থাকে। ফল ফ্রিজে রাখলে এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্রেন্ট ভেঙে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়, এর অর্থ হল ফলের কার্যক্ষমতা শেষ হয়ে যায়। ফ্রিজে রেখে ফল খেলে তা আপনার শরীরে কোনও প্রভাব ফেলতে পারবে না। ঠিক একই কারণে চাল কুমড়ো বা টমেটোকে ফ্রিজে রাখা উচিত নয়।
শর্করা জাতীয় খাবারের মধ্যে আলু ও মিষ্টি আলুকে ভুল করেও ফ্রিজের মধ্যে রাখবেন না। এতে আলুর স্বাদ এবং গঠন পরিবর্তন হয়ে যায়। আলু ফ্রিজে রাখলে আলুর শ্বেতসার ভেঙে যায়, যে কারণে আলু নরম হয়ে যায়। এছাড়া আলুর (বিশেষত মিষ্টি আলু) মধ্যে থাকা শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। পেঁয়াজ, আদা ও রসুনও কোনওদিন ফ্রিজে রাখবেন না, এতে এর স্বাদ ও গুণ নষ্ট হয়ে যায়।
কফি, পাউরুটি ফ্রিজে না রাখলেই ভালো। ফ্রিজে রাখলে আর্দ্রতা ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশের কারণে কফি বিন বা পাউডার নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এর থেকে পাউরুটি স্বাভাবিক তাপমাত্রায় দুই থেকে চার দিন পর্যন্ত ভাল থাকে। অন্যদিকে, মিষ্টি, কেক, কুকিজ ফ্রিজে রাখলে ঠান্ডায় এগুলোর স্বাদও নষ্ট হয়ে যায়। একই কারণে শুকনো ফল বা ড্রাই ফ্রুটসও কখনও ফ্রিজে রাখা উচিত না। এমনকি কলা, আনারস, অ্যাভোকাডো, পিচ, চেরি, লেবু ও কমলার মতো সাইট্রাস জাতীয় ফলও ফ্রিজে রাখবেন না।
আরও পড়ুন: মুম্বাইয়ের ‘বাডা পাও’ আর আমেরিকার বার্গারের মিল কোথায় জানেন?
আরও পড়ুন: শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য নয়, এই রাজ্যের মিষ্টির স্বাদও অতুলনীয়!