Street Food: মুম্বাইয়ের ‘বাডা পাও’ আর আমেরিকার বার্গারের মিল কোথায় জানেন?
মুম্বাইয়ে এই বাডা পাওয়ের চল খুব সাম্প্রতিক। ১৯৭১ সালের আগে অবধি এই খাবারের এতটা বেশি জনপ্রিয়তা ছিল না। এমনকি স্ট্রিট ফুডের তালিকাতেও নাম ছিল না এই খাবারের।
ভারতের ধনী শহরগুলির তালিকায় নাম রয়েছে মুম্বাইয়ের। হোটেল, রেস্তোরাঁ ব্যবসাতেও এই শহর অন্যান্য মেট্রো সিটির তুলনায় এগিয়ে। কিন্তু তাতেও জং ধরেনি এই শহরের স্ট্রিট ফুডে। মুম্বাইকারদের আবেগ ও ভালবাসা প্রতিফলিত হয় এখানের স্ট্রিট ফুডে। এরকমই একটি স্ট্রিট ফুড বাডা পাও।
বাডা পাও, বাংলায় উচ্চারিত হয় বাড়া পাও। বাডা মানে বড় এবং পাও মানে পাউরুটি। পাও হচ্ছে একটি স্কোয়ারিশ, এটি যে কোনও কিছুর মিশ্রণের সঙ্গে খাওয়া যায়, যেমন- সবজি, কিমা, বড়া এবং চাটনি। বাডা পাও তৈরি হয় মাখা আলু সেদ্ধর সঙ্গে মশালা দিয়ে। তারপর পাওকে হালকা ভেজে তার মধ্যে এই আলুর পুর দিয়ে চাটনি ও কাঁচা লঙ্কা দিয়ে পরিবেশিত হয়।
বিশ্বাস করা হয় যে, পর্তুগিজরাই গোয়ায় তাদের ঔপনিবেশিকের সময় রুটি বেক করার ধারণাটি চালু করেছিল। তারা ভারতীয় তড়কার সঙ্গে তাদের ইউরোপীয় রুচি মিশ্রিত করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিল। গোয়া থেকে এই রুটি-নির্মাতারা মুম্বাইয়ে আসেন। এখানে তাদের সুস্বাদু এবং ফ্লাফি পাউরুটি আরও জনপ্রিয়তা লাভ করে।
যেহেতু মুম্বাই ব্রিটিশদের অধীনে বাণিজ্যিক কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল, এই রুটি নির্মাতারা তাদের পরিবার এবং ছোট ব্যবসাগুলিকে সমর্থন করার জন্য এই রুটি নির্মাণের মাধ্যমে যথেষ্ট মূল্য সংগ্রহ করেছিল।
এরপর মুম্বাইয়ে আসে ইরানিরা। তার সঙ্গে মুম্বাইয়ে গড়ে ওঠে একাধিক ইরানি ক্যাফে, যার নমুনা আজও শহরে পাওয়া যায়। সেই সময় এই ইরানি ক্যাফে গুলিতে পাও আর বানের প্রচলন শুরু করে। এখান থেকেই ধীরে ধীরে মুম্বাইবাসীদের কাছে পাও সস্তা এবং গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে।
কিন্তু মুম্বাইয়ে এই বাডা পাওয়ের চল খুব সাম্প্রতিক। ১৯৭১ সালের আগে অবধি এই খাবারের এতটা বেশি জনপ্রিয়তা ছিল না। এমনকি স্ট্রিট ফুডের তালিকাতেও নাম ছিল না এই খাবারের। তারপর মুম্বাইয়ের অশোক বৈদ্য নামক একজন স্যান্ডইউচ বিক্রেতার দোকান ছিল দাদার স্টেশনের বাইরে। চাটনির সঙ্গে পাভগুলির ভিতরে মশলাদার আলু মাখা দিয়ে তৈরি ভাজা বড়াটি তারই আবিষ্কার ছিল।
এরপরেও ৭০ এবং ৮০-এর দশকে স্ট্রীট ফুড হিসাবে জনপ্রিয় হতে শুরু করে এই খাবার। মূলত শ্রমিক শ্রেণির মানুষের মধ্যেই প্রথম এই খাবারের জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। এটা তৈরি করাও সহজ এবং সময়ও কম লাগে, তাছাড়া এটা অন্যান্য খাবারের তুলনায় সস্তা। আর এই কারণগুলিই বাডা পাওয়ের জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়ে তুলেছিল। মজার ব্যাপার হল, এই একই কারণে স্যান্ডউইচ, সাব এবং বার্গারও ব্রিটিশ এবং আমেরিকান শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে এত জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছিল।
আরও পড়ুন: শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য নয়, এই রাজ্যের মিষ্টির স্বাদও অতুলনীয়!
আরও পড়ুন: গরম ধোঁয়া ওঠা কফিতে চুমুকের আনন্দ পেতে এবার দক্ষিণী স্টাইলে ফিল্টার কফি বানান বাড়িতেই!