শীত পড়লেই বাজারে আসে হরেক রঙের সবজি। আর এই প্রতিটা সবজি কিন্তু দেখতে বেশ সুন্দর। একঝুড়ি টাটকা পালং শাক, লাল শাক, মেথি শাক, গাজর, বিনস, ক্যাপসিকাম, টমেটো, বিনস, ব্রকোলি বযেমন দেখতে ভাল লাগে তেমনই সব কটি সবজি কিন্তু খেতেও বেশ ভাল। এছাড়াও এই প্রতিটি সবজির অনেক উপকারিতা রয়েছে। গাজর সারা বছর পাওয়া গেলেও বিট কিন্তু সচারচর সারা বছর পাওয়া যায় না। এই শীতেই মূলত পাওয়া যায়। গাজর, বিনস, কড়াইশুঁটি আর বিট দিয়ে রাঁধা তরকারি খেতে যেমন ভাল লাগে তেমনই শরীরেরও অনেক কাজে লাগে। এছাড়াও স্যালাড তো বানানো হয়ই। এই শীতে অনেকেই বিটরুটের জুস (Beetroot Juice) খান। এই জুস কিন্তু খুব ভাল ডিটক্স ড্রিংকস। এছাড়াও বিটের আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে।
বিটের মধ্যে প্রচুর ফাইবার ছাড়াও রয়েছে ফোলেট, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম, আয়রন আর ভিটামিন সি। কাঁচা খেতে পারেন স্যালাডে দিয়ে, সেদ্ধ বা রান্না করেও খাওয়া যায়। তবে মনে রাখবেন, বিটে কিন্তু গ্লুকোজ় আর ফ্রুকটোজ়ের পরিমাণ বেশি। তাই যাঁরা রক্তে শর্করার মাত্রাধিক্যের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা খাওয়ার আগে অবশ্যই একবার ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।
এছাড়াও বিট পাতা বেশিরভাগ বাড়িতেই ফেলে দেওয়া হয। কিন্তু এই বিট পাতারও কিন্তু অনেক গুণ। কারণ এই পাতার মধ্যে থাকে ভিটামিন এ ও ক্যারটিনয়েড। সেই সঙ্গে থাকে লুয়েটিন নামক অত্যন্ত শক্তিশালী একটি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টও। এর প্রত্যেকটিই ফ্রি র্যাডিকালসের সঙ্গে লড়াই করতে পারে। আমাদের ত্বক সুস্থ ও টানটান রাখার জন্য প্রতিদিন নতুন কোশের উৎপাদন হওয়া প্রয়োজন, ভিটামিন এ এই প্রক্রিয়াটিকে সুনিশ্চিত করে। এছাড়াও শরীরে প্রয়োজনীয় আয়রনের চাহিদা মেটায় বিট। দেখে নিন যে ভাবে খাবেন বিট-
বিটের আচার- শরীরের জন্য কিন্তু বেশ ভাল বিটের আচার। যদিও বানানোর পদ্ধতি খানিকটা আলাদা। বিট খোসা ছাড়িয়ে সিদ্ধ করে নিন। এবার ঠান্ডা হলে পিস করে কেটে নিয়ে নুন, চিনি, ভিনিগার, লেবুর রস আর লবঙ্গ দিয়ে ফোটান। এবার ঠান্ডা হলে সরষের তেল আর ভাজা মশলা দেওয়া তেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন।
বিটের রায়তা- বিটের কুচি, শসা, টমেটো, দই, নুন, চিনি এবং কাঁচালঙ্কা কুচি একটি পাত্রে নিন। ভাল করে মাখিয়ে রাখুন। তেল গরম করে নিন নন-স্টিক প্যানে, গরম হলে এতে জিরে দিয়ে দিন। জিরে ভাজা হলে এতে হিং দিয়ে মাঝারি আঁচে ভাীল করে নাড়াচাড়া করুন। এবার তা ঢেলে দিন বিটের মিশ্রণে। ভালো করে মাখিয়ে নিন। এরপর এই মিশ্রণে বাদাম, নারকেল ও ধনেপাতা মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ অন্তত এক ঘন্টা ফ্রিজে রেখে তারপর পরিবেশন করুন।
বিটের চাটনি- দেড় কাপ বিট ছোট করে কুচিয়ে নিন। নারকেল কুচি করে নিন ১/৪ কাপ। এবার একসঙ্গে গ্রাইন্ডারে পিষে নিন। এবার প্যানে ২ চামচ তেল দিয়ে ওর মধ্যে ২ চামচ বিউলির ডাল, ১ চামচ ছোলার জাল, ২ টো শুকনো লঙ্কা, ১/২ চামচ গোটা জিরে, ২ চামচ রসুন কুচি আর ১ চামচ তেঁতুলের কাথ ভাল করে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ তুলে রেখে কড়াইতে আবার তেল দিয়ে কারিপাতা, হিং আর সরষে দিয়ে নাড়িয়ে নিন। এবার এই সব মশলা ঠান্ডা করে গ্রাইন্ডারে গুঁড়ো করে নিন। এবার কড়াইতে তেল ব্রাশ করে বিটের মিশ্রণ দিন, স্বাদমতো নুন-চিনি আর নারকেল কোরা দিয়ে নাড়িয়ে নিন, সিদ্ধ হয়ে এলে ওই ভাজা মশলা মিশিয়ে দিন। উপর থেকে এক চামচ কাঁচা সরষের তেল ছড়িয়ে দিলেই চলবে।
আরও পড়ুন: Cooking Tips: আগুন ছাড়াই রান্না হবে এই ৬ খাবার, গ্যাস-ইনডাকশন কিসসু দরকার নেই!