হলুদ রং সরস্বতীর খুব প্রিয়। সরস্বতী পুজোর সবেতেই তাই থাকে হলুদের ছোঁয়া। হলুদ আসন, বস্ত্র, ফুল, প্রসাদ এমনকী পুজোর উপকরণ হিসেবেও থাকে কাঁচা হলুদ। সর্বত্র সরস্বতী পুজোর রেওয়াজ না থাকলে বসন্ত পঞ্চমী পালনের রীতি রয়েছে নানা জায়গায়। বসন্ত পঞ্চমী মানেই হলুদ শাড়ি, পাঞ্জাবি, কুর্তা-পায়জামায় সেজে ওঠার দিন। কেন হলুদ রঙের পোশাক পরা হয় এ দিনে? ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, হলুদ সূর্যের রঙ এবং সূর্যের রশ্মি যেমন অন্ধকারকে ধ্বংস করে, তেমনি মানুষের অন্তরের অশুভ অনুভূতিকে ধ্বংস করে। হলুদ সাফল্যের ইঙ্গিত বহন করে একই সঙ্গে আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে দেয়। হলুদ আমাদের মনের মধ্যে অনেক চিন্তা ভাবনার জন্ম দেয়, জ্ঞানের জ্বার উন্মুক্ত করে। তাইতো এই রং পড়ুয়াদের এত প্রিয়।
যে কোনও শুভ কাজ তাই হলুদ দিয়ে শুরু করা হয়। বসন্ত ঋতু বহু মানুষেরই অত্যন্ত প্রিয়। এই ঋতুতে ফুলের মাধ্যমেই যেন বসন্ত আসে। এই ঋতুতেই ক্ষেতে সরষের ফুল যেন সোনার মতো ঝলমল করে, বার্লি ও গমের শীষ ফুটতে শুরু করে, আম গাছে মুকুল আসে, রঙিন প্রজাপতির চলাচলের মাধ্যমেই যেন বসন্তের আগমন ঘটে। শীতের বিদায়বেলায় ও বসন্তের আগমনের সময়কাল থেকেই গোটা প্রকৃতিই যেন সেজে ওঠে। শাস্ত্রে এই পঞ্চমীকে তাই ঋষি পঞ্চমীও বলা হয়।
সরস্বতী পুজোর সকালে কাঁচা হলুদ মেখে স্নান করার রীতি রয়েছে। এর নেপথ্যে অবশ্য একটি কারণও রয়েছে। এই সময় নানা রকম সংক্রমণ জনিত অসুখের প্রকোপ বাড়ে। পক্স, হাম ইত্যাদি। কাঁচা হলুদের মধ্যে অনাক্রম্যতা রয়েছে। ইনফেকশনের সম্ভাবনা কমায়। এছাড়াও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। হলুদের মধ্যে কারকিউমিন নামের এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা ম্যাজিকের মত কাজ করে। হলুদের মধ্যে অ্যান্টিসেপ্টিক উপাদান রয়েছে। শীতের ত্বকের শুষ্কতা দূর করা, ব্রণর সমস্যা, ত্বকের দাগছোপ দূর করার ক্ষেত্রে হলুদের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। কাঁচা হলুদ বেটে ওর মধ্যে বেসন, দুধের সর, মধু, লেবু মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে মাখুন। নইলে হলুদ তেলও চলতে পারে।