গোয়ায় তৈরি হল ভারতের প্রথম মদের জাদুঘর!
১৭০০-এর আশেপাশে পর্তুগিজরা ব্রাজিল থেকে প্রথম কাজু গাছ গোয়ায় নিয়ে আসে। তারপর থেকেই কাজু গাছ ও ফেনি দুটোই গোয়াবাসীদের কাছে আপন হয়ে গেছে।
গোয়া সমুদ্র সৈকত, সিফুড, কার্নিভ্যাল, পর্তুগিজ ক্যালচার, গির্জা এই সবকিছুর জন্য বেশ বিখ্যাত। তাছাড়াও পর্যটকদের এর জনপ্রিয়তার কারণ হল গোয়ার অ্যাকোহল। সস্তায় বিয়ার ছাড়াও এখানে পাওয়া যায় একটি স্থানীয় মদ, যার নাম ফেনি। এবার এই ফেনির উদ্দেশ্যেই গোয়ায় তৈরি হল একটি অ্যাকোহল মিউজিয়াম।
‘অল অ্যাবাউট অ্যাকোহল’ নামক এই মিউজিয়ামটি গোয়ায় একটি সমুদ্র সৈকতে ঘেরা ছোট্ট গ্রাম ক্যান্ডোলিমে অবস্থিত। এটি শুরু করেছেন নন্দন কুচেন্দ্রকান নামক একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী, যিনি মূলত প্রাচীন বা অ্যান্টিক জিনিসপত্র সংগ্রহের জন্য পরিচিত। মিউজিয়ামটির মধ্যে রয়েছে ফেনি সম্পর্কিত কয়েকশো শিল্পকর্ম। এছাড়াও এই মিউজিয়ামে রয়েছে কাঁচের ভ্যাট, যেখানে কয়েকশো বছর আগে মদ সংগ্রহ করে রাখা হত।
গোয়ার ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করে রাখার জন্য এবং বিশ্বের মানুষের কাছে ফেনির গল্প তুলে ধরার জন্য নন্দন এই মিউজিয়ামের সূচনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, এই মিউজিয়ামের পিছনে আসল উদ্দেশ্য হল ফেনির ব্রাজিল থেকে গোয়া পর্যন্ত ঐতিহাসিক যাত্রাকে মানুষের সামনে তুলে ধরা। গোয়ার সংসদ শ্রী বিনয় তেন্ডুলকার ট্যুইটারে এই সংবাদটি শেয়ার করে লিখেছেন যে এই মিউজিয়ামটি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্রচার এবং তাদের ব্যবসার ক্ষমতায়নে সহায়তা করবে।
বেশ পর্তুগিজ ঔপনিবেশকের ছোঁয়া রয়েছে এই মিউজিয়ামে। ১৩,০০০ বর্গফুটের এলাকা নিয়ে বিস্তৃত এই মিউজিয়াম। প্রাচীন স্টোরেজ জাহাজসহ একটি গোয়ান শৈলীর ট্যাভার্নও রয়েছে এখানে। ট্যাভার্নে ১৯৪৬ সালের মতো কাজু এবং নারকেল ফেনির বোতল সহ একটি ফেনি সেলারও রয়েছে। মিউজিয়ামে আসা পর্যটকরা ফেনি টেস্টিং এবং পেয়ারিং সেশনেও অংশ নিতে পারবেন।
ফেনি হল গোয়ার একটি ঐতিহ্যবাহী পানীয়, যা কাজু থেকে তৈরি করা হয়। তবে এর যাত্রা শুরু হয় ব্রাজিল থেকে। ব্রাজিল ও গোয়া উভয় জায়গায়তেই লুসোফোনিয়ান ঔপনিবেশিক প্রভাব রয়েছে। ১৭০০-এর আশেপাশে পর্তুগিজরা ব্রাজিল থেকে প্রথম কাজু গাছ গোয়ায় নিয়ে আসে। তারপর থেকেই কাজু গাছ ও ফেনি দুটোই গোয়াবাসীদের কাছে আপন হয়ে গেছে।
কাজুর রসকে দীর্ঘ দিন ধরে পচিয়ে তৈরি হয় ফেনি। এই ফেনি তৈরির জন্য গোয়ার চাষীরা কাজু চাষ করেন। কাজু ফলনের পর শুরু হয় তার রসকে পচানো। গ্রীষ্মের সময় যে প্রথম পানীয় তৈরি হয় তাকে বলে ‘উররাক’, এরপর আবার যখন সেই পানীয়টিকে পচানো হয় তাকে বলা হয় ফেনি। এছাড়াও লবঙ্গ, গোলমরিচ, জায়ফল, দারুচিনির মতো মশলার সঙ্গে মিশিয়ে ‘মশলা ফেনি’ নামে আরেকটি পানীয় তৈরি করা হয়।
আরও পড়ুন: বিচিত্র কিন্তু স্বাস্থ্যকর! এবার সুস্থ থাকতে কোকা-কোলা লেকে ভিড় করছেন পর্যটকরা