AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Vishwakarma Puja: হস্তীবাহী নবীন পুরুষ না রাজহাঁস বাহী প্রবীণ দেব, বিশ্বকর্মার আসল রূপ কোনটি?

Vishwakarma Puja: কোনও কোনও ছবিতে তিনি ধরা দিয়েছেন তরুণ বেশে। সুপুরুষ বিশ্বকর্মা অধিষ্ঠান করছেন তাঁর বাহন হাতির উপরে। চারটি হাতে রয়েছে কুঠার সহ নানা যন্ত্রপাতি। তবে আসল বিশ্বকর্মা কে? কোন রূপ সত্য?

Vishwakarma Puja: হস্তীবাহী নবীন পুরুষ না রাজহাঁস বাহী প্রবীণ দেব, বিশ্বকর্মার আসল রূপ কোনটি?
| Updated on: Sep 17, 2024 | 4:20 PM
Share

গুগল গিয়ে বিশ্বকর্মা লিখে ‘সার্চ’ করলেই চলে আসবে অনেক অনেক ছবি। যাঁর মধ্যে মূলত দু’ধরনের ছবি দেখতে পাওয়া। একটিতে দেখা যায় বিশ্বকর্মার মুখে সাদা দাড়ি-গোঁফ, তাঁর বাহন হাঁস। তাঁর চার হাতে রয়েছে নানা যন্ত্রপাতি, কমণ্ডল। কোথাও আবার তিনি বসে আছেন চার চারটি হাতির উপরে।

আবার কোনও কোনও ছবিতে তিনি ধরা দিয়েছেন তরুণ বেশে। সুপুরুষ বিশ্বকর্মা অধিষ্ঠান করছেন তাঁর বাহন হাতির উপরে। চারটি হাতে রয়েছে কুঠার সহ নানা যন্ত্রপাতি। তবে আসল বিশ্বকর্মা কে? কোন রূপ সত্য?

এই বিবাদ বেশ পুরনো। দেবশিল্পীর রূপ কেমন? তাঁর বয়স কত? এই নিয়ে রয়েছে দ্বিমত। পশ্চিমবঙ্গে সাধারণত দেব শিল্পী পুজিত হন তাঁর যুব রূপেই। সুদর্শন দেবতা তিনি। বিশেষ করে যন্ত্রপাতি নিয়ে যাঁদের কারবার, তাঁদের মধ্যে দেবশিল্পীর জনপ্রিয়তা আরও বেশি। তবে বাংলার বাইরেও কিন্তু নানা জায়গায় দেবশিল্পী পুজিত হন, তবে অনেক জায়গায় তিনি পুজিত হন প্রবীণ রূপেই।

এই বিষয়ে ইতিহাসবিদদের একাংশের মত, বিশ্বকর্মার ‘আদি রূপে’ সাদা গোঁফ, দাড়ি ছিল। সেই রূপে তাঁর বাহন ছিল রাজহাঁস। উত্তর ও পশ্চিম ভারতে আজও সেই রূপেই পূজিত হন দেবশিল্পী। আবার হিমাচল প্রদেশের মান্ডিতে বিশ্বকর্মার মন্দিরেও সেই প্রবীণবেশের মূর্তি দেখা যায়।

তবে বাংলায় এসে তাঁর রূপ বদলেছে। রাজহাঁসের জায়গায় তাঁর বাহ্ন হয়েছেন হাতি। যদিও খড়্গপুরের অনেক জায়গায় এই প্রবীণ বেশে পুজোর করার রীতি রয়েছে।

আমেরিকার ইতিহাসবিদ জে গর্ডন মেল্টন তাঁর ‘রিলিজিয়াস সেলিব্রেশন: অ্যান এনসাইক্লোপিডিয়া অব হলিডেজ, ফেস্টিভ্যাল’ বইতে অবশ্য লিখেছেন, বিশ্বকর্মার প্রথম উল্লেখ রয়েছে বৈদিক সাহিত্যে। ঋগ্বেদের দশম মণ্ডলে উল্লিখিত বিশ্বকর্মা আদতে বিশ্বের স্রষ্টা। এমনকি সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার সঙ্গেও তাঁর বহু মিল রয়েছে। তাই অনেক ছবিতেই প্রবীণ বিশ্বকর্মাকে কোলে পৃথিবী নিয়ে তা নির্মাণ করতেও দেখা গিয়েছে।

ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ আর্থার অ্যান্টনি ম্যাকডোনেল তাঁর ‘বেদিক মাইথলজি’ বইয়ে লিখেছেন বৈদিক সাহিত্যে বিশ্বকর্মার চারটি মুখের উল্লেখ রয়েছে।

হিন্দু শাস্ত্রে শিল্প এবং কারিগরীর দেবতা রূপে পরিচিত বিশ্বকর্মা। তাই দেব-কারিগর রূপে পরিচিত তিনি। কথিত লঙ্কাপুরী এবং দ্বারকা তিনিই নির্মাণ করেছেন। এমনকি পুরীর জগন্নাথ ধাম ও জগন্নাথের, বলরাম, সুভদ্রার মূর্তিও তিনিই নির্মাণ করছিলেন প্রথমবার।

তবে বাংলায় আজ এই বিশ্বকর্মা পুজোর রমরমা হলেও একটা সময় কিন্তু তা মোটেও ছিল না। ঊনবিংশ শতক থেকে বাংলায় কলকারখানার আধিক্য বাড়লে তার সঙ্গে সঙ্গেই বৃদ্ধি পেয়েছে দেব শিল্পীর কদর। ইতিহাসে অনেক ক্ষেত্রেই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক দেব-দেবীর রূপেও পরিবর্তন হয়েছে। আবার ভৌগোলিক স্থান পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেও অনেক ক্ষেত্রে দেব-দেবীর ভিন্ন রূপের সন্ধান মিলেছে। এক্ষেত্রে বাংলায় নবীন বিশ্বকর্মার আরাধনার বিষয়টিও তাই।