বয়স ৪৪। দুই সন্তানের মা। নিরবিচ্ছিন্নভাবে ৬০ ঘণ্টা সাইকেলে পাড়ি দিয়ে বিশ্বরেকর্ড (World Record Cycling) গড়ার পথে এগিয়ে চলেছেন পুনের মেয়ে প্রীতি। পুনের প্রীতি মাস্ককে (Preeti Maske) চেনেন? চেনেন না এখনও? তাহলে চিনে নিন। ইতিমধ্যেই তিনি লেহ-এর উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েছেন। সেখান থেকেই তিনি প্যাডেলে ভর দিয়ে উড়ে আসবেন মানালিতে (Leh to Manali)। ৪৪ বছর বয়সে যেখানে সকলে হাঁটুর ব্যথার ওষুধ খেতে শুরু করেন, সেখানে দুই সন্তানের মা প্রীতি নিজেকে ৬০ ঘণ্টায় ৪৮০ কিমি পাড়ি দেওয়ার আলট্রা সাইক্লিং রেকর্ডের জন্য প্রস্তুত করেছেন। আগামী ২২ জুন সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৬০০ মিটার উঁচু থেকে তাঁর যাত্রা শুরু হবে। ‘আমাকে পাঁচটি সঙ্কীর্ণ গিরিপথ পেরতে হবে রাতের মধ্যে। সেই সময় উষ্ণতা সম্ভবত শূন্যের পাঁচ ডিগ্রি নীচে চলে যাবে। তবে আমি নিজেকে তৈরি করেই এসেছি।’— জানিয়েছেন মাস্ক। ইতিমধ্যে মাস্কের গলায় ঝুলছে ভারতের সোনালি চতুর্ভুজের (৬ হাজার কিমি) সবচাইতে দ্রুতগামী মহিলা সাইকেল আরোহীর (Fastest Woman Cyclist) খেতাব! তাই যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী তিনি।
মাস্কের প্রতিদিনের ট্রেনিং রুটিন জানলে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য সকলের। পুনের পাহাড় এবং দুর্গ হল তাঁর ট্রেনিং-এর জায়গা। ‘চাকুরিজীবী এবং দুই সন্তানের মা হওয়ার কারণে ট্রেনিং-এর জন্য খুবই কম সময় পাই আমি। তবে সপ্তাহে ১ দিন সকাল সকাল ট্রেক আমি করবই’। এছাড়া প্রতিদিন তাঁর ট্রেনিং-এর মধ্যে থাকে সাঁতার এবং স্ট্রেন্থনিং এক্সারসাইজ।
লেহ থেকে মানালি অবধি একটানা সাইকেল চালিয়ে মাস্ক যেতে পারবেন বলেই সকলে আশা করছে। তবে মাস্ক বলেছেন, একটানা সাইক্লিং-এর মধ্যে পাওয়ার ন্যাপ এবং টিফিন বিরতিও অন্তর্ভুক্ত থাকছে।
যাত্রার ১০ দিন আগে থেকেই লেহ’তে ঘাঁটি গেড়েছেন মাস্ক। মূলত পাহাড়ি আবহাওয়ার সঙ্গে শরীর যাতে মানিয়ে নিতে পারে সেই কারণেই এতদিন আগে মাস্ক লেহ’তে পৌঁছে গিয়েছেন। তিনি স্বীকার করেছেন, বহু লোকেই তাঁর বয়স শুনে আশ্চর্য হয়ে যান। ‘আমি চল্লিশের পর সাইক্লিং শুরু করেছি। আমার বিশ্বাস, বয়স শুধুমাত্র একটি সংখ্যা বই আর কিছু নয়। দরকার শুধু নিজের উপর বিশ্বাস রাখা। এরপর আর কোনও শক্তিই আপনাকে বেঁধে রাখতে পারবে না। ২০১৮ সালে শুরু করেছিলাম। তারপর থেকেই কয়েকশো মহিলা আমাকে ফোন করেছেন ও টিপস চেয়েছেন। আমার মনে হয় কয়েকজনকে আমি অনুপ্রাণিত করতে সক্ষম হয়েছি।’
প্রীতির ৪৪ বছর বয়সে এহেন প্রচেষ্টা দেখে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যের পক্ষে সাইক্লিং অত্যন্ত উপকারী একটি ব্যায়াম। সবচাইতে বড় কথা, হাঁটুর বাতের রোগীও এই ব্যায়াম নিশ্চিন্তে করতে পারেন ও থাকতে পারেন ফিট। নিয়মিত সাইক্লিং-এ ফুসফুস শক্তিশালী হয়ে ওঠে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। রক্তে সুগার ও কোলেস্টেরল বৃদ্ধির আশঙ্কা কমে যায়। হার্ট শক্তিশালী হয়। ওজন ঝরে। বয়স কম দেখায়।