৯১৫ দিন পর খুলতে চলেছে ভারত-ভুটান সীমান্ত। আগামী শুক্রবার অর্থাৎ ২৩ সেপ্টেম্বর ভারতীয়দের পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে ফুন্টশোলিংয়ের ইন্দো-ভুটান গেট। কোভিডের কারণে আড়াই বছর ধরে বন্ধ ছিল ভারত-ভুটান সীমান্ত। সম্প্রতি ঘোষণা করা হয়েছে যে, অসম সীমান্তের সামদ্রুপ জংখার ও গেলফুতে সীমান্তের গেটগুলিও খুলে দেওয়া হবে। পুজোর আগে এই সুখবরে উচ্ছ্বাসিত পর্যটক মহল। সবচেয়ে খুশির জোয়ার কলকাতা ও শিলিগুড়ি পর্যটন শিল্পে।
পুজোর সময় বাংলার এক বড় অংশের মানুষ ভ্রমণ উদ্দেশ্যে বের হন। আর পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভুটান ঘুরতে যাওয়া সবচেয়ে সহজ। আকাশপথে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে পৌঁছে যেতে পারেন ভুটানে। এছাড়াও উত্তরবঙ্গ দিয়ে সড়কপথে যেতে পারেন ভুটানে। আর এই সুযোগই হাসি ফোটাচ্ছে পর্যটক এবং পর্যটন শিল্পে।
২৩ সেপ্টেম্বর থেকে পারো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ফুয়েন্টশোলিং, গেলফু, সামদ্রুপ জংখার এবং সামতসে হয়ে ভারতীয় পর্যটকরা প্রতিবেশি দেশে ভ্রমণের সুযোগ পাবেন। এ দিন যে চারটি বিমান পারো বিমানবন্দরে অবতরণ করবে সেই সকল অতিথিদের জন্য রয়েছে বিশেষ চমক। ভারতীয় পর্যটকদের জন্য থাকবে একটি করে উপহার। পাশাপাশি বিমানবন্দরে এবং টার্মিনালের ভিতরে টারম্যাক সঙ্গীত, নাচ এবং বিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে।
জানা গিয়েছে, ভুটান এয়ারলাইন্স কলকাতা এবং পারোর মধ্যে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট যাতায়াত করবে। আর ইতিমধ্যেই প্রতি ফ্লাইটেই ৩০০টির মতো টিকিট বুক করা হয়েছে। যদিও মহামারীর আগে এই সব ফ্লাইটে ১,০০০টি টিকিট বুক থাকত। তবে, পুজো উপলক্ষ্যে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলো বিমান ভাড়া বেড়ে গিয়েছে। আর হোটেল ভাড়াও এই সময় তুলনামূলক একটু বেশিই থাকে। কিন্তু উদ্বেগ তৈরি করছে ‘সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট ফি’।
ভুটান বেড়াতে গেলে কোনও বাড়তি টাকা লাগছে না ঠিকই, কিন্তু ভারতীয় পর্যটকদের ১,২০০টাকা করে ‘সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট ফি’ দিতে হবে। ‘সাসটেই ফিনেবল ডেভলপমেন্ট’-এর অর্থ ভুটানের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও পরিবেশ রক্ষা এবং স্থিতিস্থাপকতা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। ইতিমধ্যে এই ‘সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট ফি’ নিয়ে ভারতীয় পর্যটন সংস্থাগুলি মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। এবার আশঙ্কায় রয়েছে প্রতিবেশি দেশের পর্যটন শিল্পও। তবে, বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই টাকার অঙ্ক খুব একটা প্রভাব ফেলবে না পর্যটন শিল্পে।
২০১৯ সালে মোট ২.৩০.৩৮১ জন ভারতীয় ভ্রমণের জন্য ভুটানকে বেছে নিয়েছিল। মহামারীর আগে ভুটান-ভারত সীমান্তে পর্যটন শিল্প থেকে মাসিক আয় ছিল ৫০০ কোটি টাকা। আড়াই বছর বন্ধ থাকায় দুই দেশেরই পর্যটন শিল্পে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এবার আবার চাঙ্গা হতে চলেছে সিমান্তের পর্যটন শিল্প।