রেস্তোরাঁ মানেই সুসজ্জিত। চারদিক আলো দিয়ে সাজানো। ঝকঝকে কাচের বাসনে খাবার পরিবেশন। এখন আবার রেস্তোরাঁর সংজ্ঞায় যোগ রয়েছে থিম ক্যাফে। অর্থাৎ কোনও থিমকে কেন্দ্র করে সাজানো হয়েছে গোটা ক্যাফে। সেখানে মূলত জ়েন ওয়াই এবং জ়েন জেড-এরই ভিড় বেশি। কিন্তু ভারতে এমনও একটি চায়ের দোকান রয়েছে, যেখানে গ্রাহকেরা বছরের পর বছর ধরে চা খান মৃতদেহের পাশে বসে। শুনতে অদ্ভুত লাগছে? হ্যাঁ—কবরের সঙ্গে গড়ে উঠেছে চায়ের দোকান। তাও ভারতবর্ষে।
কোনও ঝাঁ চকচকে রেস্তোরাঁ নয়। অথচ এখানে সারাদিন গ্রাহকের আনাগোনা লেগে থাকে। সেখানে আবার রয়েছে মৃতদেহ। সে সব কবরের পাশেই পাতা চেয়ার টেবিল। সেখানে বসেই গরম চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছেন গ্রাহকেরা। এমন চায়ের দোকান দেশের কোথায় অবস্থিত, জানেন? গুজরাটের আহমেদাবাদে।
আহমেদাবাদের লাল দরওয়াজায় রয়েছে ‘লাকি টি স্টল’। এই চায়ের দোকান গড়ে উঠেছে কবরস্থানের উপর। হালের সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা গিয়েছে এই চায়ের দোকান বিশেষত্ব। কিন্তু এই চায়ের দোকান আহমেদাবাদের মানুষের কাছে মোটেও নতুন নয়। বিগত ৭২ বছর ধরে লাল দরওয়াজায় ‘লাকি টি স্টল’-এ মানুষ চা খাচ্ছেন মৃতদেহের পাশে বসে। সম্প্রতি একজন ফুড ব্লগার সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘লাকি টি স্টল’-এর বিশেষত্ব নেটিজ়েনদের কাছে তুলে ধরেছেন। hungrycruisers নামের একটি ইনস্টাগ্রাম পেজ থেকে পোস্ট করা হয়েছে ‘লাকি টি স্টল’-এর ভিডিয়ো।
কিন্তু কবরস্থানের উপর কেন চায়ের দোকান? এই উত্তর খুঁজে পাওয়া গিয়েছে hungrycruisers-এর ভিডিয়োতে। ‘লাকি টি স্টল’-এর মালিক হলেন কৃষ্ণান কুট্টি। কিন্তু রেস্তোরাঁ খোলার জন্য আহমেদাবাদের লাল দরওয়াজায় জমিটি কেনেন। কিন্তু জমিটি কেনার সময় তিনি জানতেন না, এই জমিতে রয়েছে কবরস্থান। যদিও এটি জানার পর তাঁর সিদ্ধান্ত বদলায়নি। বরং, রেস্তোরাঁ হয়ে গিয়েছে ‘থিম ক্যাফে’। যে থিম ক্যাফেতে আপনি চা খেতে পারবেন মৃতদেহের পাশে বসে।
কবরস্থানটি অক্ষত রেখেই গড়ে তোলা হয় ‘লাকি টি স্টল’। কবরস্থান বলে সেখানে যে গ্রাহকেরা আসেন না, তা কিন্তু নয়। এখানে গ্রাহকের ভিড় লেগে থাকে। তাছাড়া এই ‘লাকি টি স্টল’ গড়ে উঠেছে ৭২ বছর আগে। এই ৭২ বছর ধরে ক্রেতাদের আনাগোনা রয়েছে ‘লাকি টি স্টল’-এ। বরং, স্থানীয় মানুষদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘লাকি টি স্টল’। পাশাপাশি তাঁরা নিজেরাই কফিনগুলো পরিষ্কার করে দেন। তাঁরাই প্রতিদিন ফুল দেন কবরস্থানে। এক সময় এখানে আসতেন শিল্পী এম এফ হুসেন। তাঁরা আঁকা ছবিও টাঙানো রয়েছে চায়ের দোকানে।