পুরোদমে বর্ষা ঢোকেনি বঙ্গে। কিন্তু উইকএন্ডগুলোতে ভিড় জমতে শুরু করেছে মন্দারমণি, দিঘার সমুদ্র সৈকতে। বর্ষা এলেই বাংলার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ভিড় বাড়ে। হোটেল পাওয়া বেশ মুশকিলের হয়ে যায়। যদিও এখন দিঘার পাশাপাশি মন্দারমণি, তাজপুর, জনপুটের জনপ্রিয়তাও বেড়েছে। ম্যারিন ড্রাইভ তৈরি হওয়ায় গাড়ি নিয়ে যাতায়াতেও সুবিধা হয়েছে। কিন্তু গুগলে যদি ‘ভার্জিন বিচ অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’ সার্চ করা হয়, তখন উঠে আসে বাঁকিপুটের নাম। ‘ভার্জিন বিচ’-এর আক্ষরিক অর্থ হয়তো অনেকেরই অজানা। কিন্তু বাঁকিপুট গেলে আপনি কাটাতে পারবেন নিরিবিলিতে একটা উইকএন্ড।
বাঁকিপুট সমুদ্র সৈকত নতুন কোনও সি বিচ নয়। কোভিড পরিস্থিতির অনেক আগে থেকেই বাঁকিপুটে পর্যটকদের যাতায়াত ছিল। কিন্তু সেই অর্থে ভিড় হয় না বাঁকিপুটে। জনপুট নামের সমুদ্র সৈকতের খুব কাছেই অবস্থিত এই বাঁকিপুট। পূর্ব মেদিনীপুরের স্বল্প পরিচিত এই সমুদ্র সৈকত হতে পারে আপনার মনসুন ডেস্টিনেশন। বৃষ্টির দিনে, ছোট্ট উইকএন্ডে বন্ধু, পরিবার, কাছের মানুষের সঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার আদর্শ জায়গা।
সারিবদ্ধ ঝাউবন, সেখানে পাখির ডাক আর শান্ত সমুদ্রতট। কান পাতলা সমুদ্রের ঢেউ আর ঝিঁঝিঁর ডাক ছাড়া সেরকম কিছু শোনা যায় না। আর বালুচর জুড়ে রয়েছে লাল কাঁকড়ার ভিড়। এসব নিয়েই বাঁকিপুট। বঙ্গোপসাগরের তীরে এমন নিরিবিলি সমুদ্রতট রয়েছে, বাঁকিপুট না গেলে তা বিশ্বাস করা কঠিন। বাঁকিপুটে একবার ঢুকে পড়লে আপনি শহুরে জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন। আর এই কারণেই বাঁকিপুট ‘ভার্জিন বিচ’। মোহনার খুব কাছেই বাঁকিপুট অবস্থিত। তাই জোয়ার এলেই ফুলে ফেঁপে ওঠে সমুদ্রে জল। ভাঁটা থাকলে বাঁকিপুট খুব একটা ভাল লাগবে না। তখন শুধুই কাদা আর বালি। তবে, ঝাউবনের সৌন্দর্য আপনার মন খারাপকে দূরে ঢেলে দেবে।
এসব ছাড়াও বাঁকিপুটে রয়েছে প্রাচীন বাতিঘর। বাঁকিপুট থেকে প্রায় আধ কিলোমিটার হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন ব্রিটিশ আমলে তৈরি দরিয়াপুরের ৯৬ ফুট বাতিঘর। বিকেলে সেই বাতিঘরে উঠে আপনি উপভোগ করতে পারবেন বাঁকিপুটের সৌন্দর্য। এছাড়া বাঁকিপুট থেকে ৫ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে বঙ্কিমচন্দ্রের স্মৃতি বিজড়িত কপালকুন্ডলা মন্দির। যেতে পারেন মোহনায়। রসুলপুর নদী যেখানে বঙ্গোপসাগরে মিশছে, সেখানে যেতে পারেন। এছাড়া রয়েছে পেটুয়াঘাটের মৎস্যবন্দরে।
কলকাতা থেকে ৪ নং জাতীয় সড়ক ধরে যেতে হবে বাঁকিপুট। দিঘা, কাঁথি পেরিয়ে বাঁকিপুট। কাঁথি থেকে বাঁকিপুট প্রায় ১৩ কিলোমিটারের পথ। ট্রেনে গেলে আপনাকে নামতে হবে কাঁথিতে৷ সেখান থেকে রিকশা বা টোটোয় চেপে পৌঁছে যান বাঁকিপুট। বাঁকিপুটে রাত কাটার জন্য ট্যুরিস্ট লজ, হোটেল পেয়ে যাবেন। সেখানে ঘরভাড়া ১,২০০টাকা থেকে শুরু। রয়েছে খাওয়ার ব্যবস্থাও।