শীত এলেই দেশের নানা প্রান্তের জলাভূমিগুলোতে ভিড় জমায় পরিযায়ী পাখিরা। সেই তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের গজলডোবা, সাঁতরাগাছি, রবীন্দ্র সরোবর, সুন্দরবনের মতো জায়গা। শীত শেষে আবার তারা পাড়ি দেয় নিজের দেশে। হঠাৎ ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় শীতের গল্প কেন বলছি জানেন? কারণ শীত গেলেও পাখি দেখার সুযোগ রয়েছে এই নববর্ষে। তবে, পরিযায়ী পাখি নয়। আপনার বাড়ির আশেপাশে যে সব পাখির দেখা পান, যাঁদের নাম জানেন, আবার যেগুলো আপনার কাছে একদম অপরিচিত, তাদের ছবি তুলে না নাম লিখে রেখে দিন। নতুন বছরের শুরুতে হচ্ছে পাখিসুমারি। রাজ্যের পাখিপ্রেমী সংস্থা ‘বার্ড ওয়াচার্স সোসাইটি’র তরফে শনি ও রবিবার (১৫ ও ১৬ এপ্রিল) আয়োজন করা হয়েছে পাখিসুমারির।
পাখিসুমারির কাজ হল পাখি গোনা। আর এই পাখি গোনার কাজে শরিক হতে পারেন আপনিও। রাজ্যের পক্ষীপ্রেমীরা তো এই পাখিসুমারির অংশ হচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে আপনিও যোগ দিতে পারেন। পক্ষীপ্রেমী বা বিশেষজ্ঞদের মতো আপনি পাখিদের নাম না-ই বা জানতে পারেন। কিন্তু আপনার বাড়ির আশেপাশে, বাগানে যদি দোয়েল, ফিঙে, ঘুঘুর দেখা পান, তাদের নাম লিখে বানিয়ে ফেলুন একটা চেকলিস্ট। এবার এই চেকলিস্ট আপলোড করে দিন ‘ই-বার্ড’ অ্যাপে।
গরমের ছুটিতে অনেকেই পাড়ি দেবেন উত্তরবঙ্গে। এমনকী নববর্ষের ছুটিতেও এখন অনেকেই দার্জিলিং, কালিম্পং জেলার আনাচে-কানাচে বসে আছেন। সেখানে বসেও আপনি এই পাখিসুমারির অংশ হতে পারেন। উত্তরবঙ্গে বসে এই পাখিসুমারির কাজ করা আরও সহজ। উত্তরবঙ্গে আপনি হিমালয়ের পাখির (Himalayan Bird) দেখা পেয়ে যাবেন সহজেই। শুধু পাখি দেখতে পেলেই তার চেকলিস্ট বানিয়ে আপলোড করে দিন ‘ই-বার্ড’ অ্যাপে। এতে আপনার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা হয়ে উঠতে পারে আরও রোমাঞ্চকর।
বাংলায় দোয়েল, ফিঙে, ময়না, ঘুঘু, টিয়ার মতো পাখির দেখা পাওয়া যায়। কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে এই পাখি দেখা নিয়ে এত বেশি আগ্রহ নেই। এই পাখিসুমারির টানে নববর্ষে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন অনেকেই। ইতিমধ্যেই কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনার বহু পক্ষীপ্রেমীরা আগ্রহ দেখিয়েছেন এই পাখিসুমারিতে অংশ নেওয়ার জন্য। এমন অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা শুধু এই পাখিসুমারিতে অংশ নেওয়ার জন্য ভ্রমণের প্ল্যানও বানিয়ে নিয়েছেন। তাঁরা নিজের বাড়ির এলাকা ছেড়ে পাহাড়ের কোলে বসে পাখি দেখার প্ল্যান করেছেন এই পয়লা বৈশাখে। আপনিও যদি তাঁদের দলে নাম লেখাতে চান, তাহলে আর কীসের অপেক্ষা?
প্রসঙ্গত, ১৯৯০ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে শীতকালে জলের পাখিসুমারি হয়ে আসছে। ফেব্রুয়ারিতে হয় ‘গ্রেট ব্যাকইয়ার্ড বার্ড কাউন্ট’। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে বাংলায় ৪৮৯টিরও বেশি প্রজাতি পাখির নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে। শীতকাল জুড়ে এই পাখিসুমারি করা অনেক সহজ। যেহেতু আমাদের দেশে তথা রাজ্যে পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনা থাকেই। গরমকালে বিহু-পোঙ্গল উপলক্ষে দেশের অন্যান্য রাজ্যের পক্ষীপ্রেমীরা সেখানে পাখিসুমারি করে থাকেন। বাংলায় পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে এই প্রথম অনুষ্ঠিত হতে চলেছে পাখিসুমারি। আপনি এবার টুক করে ‘ই-বার্ড’ অ্যাপে অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করে এই পাখিসুমারিতে অংশগ্রহণ করে ফেলুন। পাখির ছবি অথবা তাদের ডাক রেকর্ড করেও আপলোড করে যাবে এই ‘ই-বার্ড’ অ্যাপে।