প্রবল তুষারপাত ও বর্ষণের জেরে মঙ্গলবার থেকে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হল চারধাম যাত্রা (Char Dham Yatra)। যার ফলে গাড়োয়াল হিমালয়ের কেদারনাথ (Kedarnath) ও যমুনোত্রী মন্দিরে যাওয়ার পথে আটকে পড়েছেন হাজার হাজার তীর্থযাত্রী। মঙ্গলবার ভোরে কেদারনাথে তুষারপাত শুরু হয়। যদি্ও প্রবল বৃষ্টির কারণে (Heavy Rainfall) গৌরীকুন্ড ও শোনপ্রয়াগে থেকে নিরাপত্তার জন্য তীর্থযাত্রীদের যাত্রা স্থগিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, আবহাওয়া দপ্তর থেকে আগাম সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। সোমবার সকাল থেকেই উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand ) লাগাতার বর্ষণ শুরু হয়। সঙ্গে ভারী বৃষ্টিরও সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।
যমুনোত্রীর দিকে রওনা দেওয়া যাত্রীদেরও জানকি চট্টিতে থামিয়ে দেওয়া হয়। বিকেলের দিকে আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় উত্তরাখণ্ডের এই বিখ্যাত মন্দিরে না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বদ্রীনাথের আশেপাশে শৃঙ্গগুলিতে এদিন প্রবল তপষারপাত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। বাডকোট মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট (এসডিএম) শালিনী নেগি জানিয়েছেন, যমুনোত্রীগামী তীর্থযাত্রীদের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে জানকিচাট্টিতেই থামিয়ে দেওয়া হয়। তিনি জানান, আবহাওয়া যতক্ষণ না পরিস্কার হচ্ছে, ততক্ষণ কোনও যাত্রীকেই যাত্রার জন্য অনুমতি দেওয়া হবে না। খারাপ আবহাওয়ার কারণে সোমবার মন্দিরে যাওয়ার পথে তীর্থযাত্রীদের না ওঠার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার সকালে মন্দিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হলেও প্রার্থনার পরে তাঁরা সকলেই ফিরে এসেছেন।
রুদ্রপ্রয়াগ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ময়ূর দীক্ষিত জানিয়েছেন, খারাপ আবহাওয়া ও তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তার কারণে কেদারনাথ যাত্রায় সামিল পূণ্যার্থীদের শোনপ্রয়াগ ও গৌরীকুণ্ডে থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কোভিড- বিধিনিষেধ ছাড়াই এছর চারধাম যাত্রায় রেকর্ড ভিড় হয়েছে। কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে গত দুই বছরে চার ধাম যাত্রা বন্ধ ছিল। এই বছর অক্ষয় তৃতীয়া উপলক্ষে ৩ মে এই যাত্রা শুরু হয়েছে। ৬ মে কেদারনাথের ও ৮ মে বদ্রিনাথের দ্বার খোলা হয়েছিল।
উত্তরাখণ্ডের তুষার ঢাকা হিমালয় পর্বতমালার মধ্যে অবস্থিত, হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র যাত্রায় মোট চারটি উল্লেখযোগ্য মন্দির রয়েছে। চারধাম যাত্রা ধাপে ধাপে শুরুর প্রথম ধাপে চামোলি, রুদ্রপ্রয়াগ ও উত্তরকাশী জেলার বাসিন্দাদের যাত্রা করার অনুমতি দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, উত্তরাখণ্ডের বদরীনাথ চামোলি জেলায়, কেদারনাথ রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় এবং গঙ্গোত্রী ও যমুনোত্রী উত্তরকাশী জেলায় অবস্থিত। সম্প্রতি চারধাম যাত্রায় অনিয়ন্ত্রিত ভিড়ের চাপে এখনও পর্যন্ত ৬০ জন তীর্থযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নড়েচড়ে বসেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। আতঙ্ক ছড়িয়েছে তীর্থযাত্রীদের মধ্যেও। আপাতত খেপে খেপে তীর্থযাত্রীদের প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই হৃদরোগের সমস্যাজনিত কারণে হয়েছে। চারটি ধামের ১০ হাজার ফিটের কাছে উঠতেই শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা যায়।
অন্যদিকে, কোভিড ১৯ অতিমারির বিধি-নিষেধ থাকা সত্ত্বেও চারধাম যাত্রায় যে হারে তীর্থযাত্রীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে, তাতে বেসামাল দশা উত্তরাখণ্ড প্রশাসনের। কেদারনাথ মন্দির দর্শনে তীর্থযাত্রীদের ভিড় চোখে পড়ার মত। কোভিড ও তীর্থযাত্রীদের ভিড় সামাল দিতে ইতোমধ্যে রুদ্রপ্রয়াগ, কেদারনাথ মন্দিরের ভিআইপি দর্শনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।