পুজোর আমেজ সদ্য কেটেছে। কিন্তু উৎসবের আমেজ থেকে এখনও বেরোতে পারেনি বাঙালি। এর মধ্যেই অনেকেই প্ল্যান বানিয়ে নিচ্ছেন ডিসেম্বরে পাহাড়ে যাওয়ার। যদিও নভেম্বরের মধ্যভাগ পেরিয়ে গিয়েছে। আর এখন পাহাড়ে আকাশ একদম পরিষ্কার। মেঘমুক্ত আকাশে দার্জিলিংয়ের ম্যালে দাঁড়িয়েই দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। শীতকাল এলে এই দৃশ্য আরও মনোরম হয়ে উঠবে। দার্জিলিং ম্যাল থেকে স্লিপিং বুদ্ধা রেঞ্জ দেখার সৌভাগ্য সবসময় হয় না। তাই অনেকেই এমন ভিউ পয়েন্টের খোঁজে থাকেন, যেখান থেকে হিমালয়ের প্যানারমিক ভিউ দেখতে পাওয়া যায়। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র বা পাহাড়ের বাঁকে বহু ভিউ পয়েন্ট রয়েছে। সেখান থেকে কখনও দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা, আবার কখনও তিস্তার বাঁক। তবে, আজকে আমরা এমন একটি ভিউ পয়েন্টের খোঁজ এনেছি, যার গুরুত্ব ও জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি।
এই ভিউ পয়েন্টের নাম ঈগলস ক্র্যাগ। কার্শিয়াংয়ের সর্বোচ্চ ভিউ পয়েন্ট হল এই ঈগলস ক্র্যাগ। ঈগলস ক্র্যাগে দাঁড়িয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া তো দেখা যায়ই, তার সঙ্গে স্লিপিং বুদ্ধার রেঞ্জও দৃশ্যমান হয়। অবশ্যই আকাশ ঝকঝকে, মেঘমুক্ত থাকা চাই। কার্শিয়াং বেড়াতে গেলে অনেকেই এই ভিউ পয়েন্টে ঘুরতে যান। যদি কার্শিয়াং নাও যান, তাতেও ঈগলস ক্র্যাগ মিস করা উচিত নয়।
দার্জিলিং থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত ঈগলস ক্র্যাগ। অষ্টভুজাকার পাখির খাঁচার মতো দেখতে ওয়াচ টাওয়ার হল এই ঈগলস ক্র্যাগ। এই ওয়াচ টাওয়ারের উপরে দাঁড়িয়ে দেখতে পাওয়া যায় হিমালয়ের প্যানোরমিক ভিউ। মেঘমুক্ত আকাশে দেখা যায় তুষারাবৃত স্লিপিং বুদ্ধার রেঞ্জ। পাশাপাশি দেখা যায় নীচের শিলিগুড়ি শহর, দূরে নেপালের পাহাড়। তার সঙ্গে রয়েছে সবুজে ঘেরা চা বাগান। এমন চোখ জুড়ানো দৃশ্য যে কারও মন কেড়ে নিতে বাধ্য।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে ঈগলস ক্র্যাগে এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস। হিমালয়ের প্যানোরমিক ভিউ দেখার পাশাপাশি ঈগলস ক্র্যাগে রয়েছে সাজানো ফুলের বাগান। আর রয়েছে একটি ‘খুকরি’-র স্মৃতিস্তম্ভ। এটা হল নেপালের ঐতিহ্যবাহী ছুরি। গোর্খা যুদ্ধে নিহতদের স্মরণে এটি ‘শহিদ স্মারক’ হিসেবে নির্মাণ করা হয়েছে।
কার্শিয়াং যাওয়ার পথে আপনি পৌঁছে যেতে পারেন ঈগলস ক্র্যাগে। শিলিগুড়ি থেকে মাত্র ৪৭ কিলোমিটার গেলেই পৌঁছে যাবেন কার্শিয়াং। সেখান থেকে বাঁ দিকের রাস্তা ধরে পৌঁছে যেতে পারেন ঈগল ক্র্যাগ।