ভারতীয় রেল হল বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্ক। ১১৫,০০০ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত ভারতীয় রেলের নেটওয়ার্ক। দেশের মোট ৭,৩৪৯ স্টেশন থেকে প্রতিদিন ১৩,১৬৯ যাত্রীবাহী ট্রেন এবং ৮,৪৭৯ পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করে। দেশের প্রায় ৩ কোটি মানুষের নিত্যদিন যাতায়াতের সঙ্গী ভারতীয় রেল। কিন্তু এমনও এক স্টেশন রয়েছে, যেখানে যেতে গেলে আপনার পাকিস্তানের ভিসা প্রয়োজন। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এটাই সত্যি। ভারতে অবস্থিত এই স্টেশনে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন পাসপোর্ট এবং পাকিস্তানের ভিসা। কোন স্টেশন, দেশের কোথায় অবস্থিত, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
পাঞ্জাবের অমৃতসরে অবস্থিত আটারি শ্যাম সিং রেলওয়ে স্টেশন। এক সময় এই রেল স্টেশন দিয়ে চলাচল করত সমঝোতা এক্সপ্রেস। এই স্টেশন ভারতে অবস্থিত হলেও, প্রবেশের জন্য প্রয়োজন পাসপোর্ট ও পাকিস্তানের ভিসা। পাঞ্জাবের দিক থেকে আটারি হল ভারতের শেষ রেল স্টেশন। স্টেশনের এক দিকে রয়েছে অমৃতসর আর অন্য দিকে রয়েছে লাহোর। খুব একটা বড়ও নয় এই আটারি। কিন্তু অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করলেই জেল হতে পারে আপনার।
সমঝোতা এক্সপ্রেসের জন্যই তৈরি করা হয়েছিল আটারি শ্যাম সিং রেলওয়ে স্টেশন। একমাত্র সমঝোতা এক্সপ্রেসই এই স্টেশন দিয়ে চলাচল করত। এখন আর এই আন্তর্জাতিক ট্রেন আটারি দিয়ে যাতায়াত করে না। কিন্তু আটারিতে প্রবেশ নিয়ে আজও কড়াকড়ি রয়েছে। আপনি যদি আটারি শ্যাম সিং রেলওয়ে স্টেশনে নামার জন্য ট্রেনের টিকিট কাটেন, তাহলে দিতে হবে পাসপোর্ট নম্বর। পাসপোর্ট নম্বর দিয়েই আপনাকে টিকিট কাটতে হবে। পাশাপাশি প্রয়োজন পাকিস্তানের ভিসাও।
যাত্রীদের পাশাপাশি এই স্টেশনে যে মানুষ কাজ করেন কিংবা নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁদেরও সরকারি অনুমতি নিতে হবে। বিনা অনুমতিতে এই স্টেশনে ঘোরাঘুরি করারও অনুমতি নেই। এমন করে আপনাকে জরিমানা দিতে হবে। এমনকী জেলও হতে পারে। এছাড়া যদি কেউ বলপূর্বক এই স্টেশনে প্রবেশের চেষ্টা করে, তাহলে বিদেশ আইনের ১৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী এবং পাকিস্তানের ভিসা না থাকায় সেই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হতে পারে। এতে সহজে জামিনও মেলে না।
সমঝোতা এক্সপ্রেসের পাশাপাশি দিল্লি-আটারি এক্সপ্রেস, অমৃতসর-আটারি ডিইএমইউ, জব্বলপুর-আটারি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করে এই স্টেশন দিয়ে। তবে, এগুলো আটারি-লাহোর লাইনের উপর দিয়ে যায় না। ২০১৯ সালের ৮ অগস্ট আটারি রেল স্টেশন বন্ধ ছিল। তারপর থেকে এই লাইন দিয়ে সমঝোতা এক্সপ্রেসের চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। তবে, আটারি স্টেশনের নিরাপত্তা নিয়ে কড়াকড়ি কমেনি।