গরমের ছুটি দরজায় কড়া নাড়ছে। আর তার সঙ্গে ডাকছে পাহাড়। গরমের ছুটিতে পাহাড় বেড়াতে না গেলে, অনেক কিছু যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। কিন্তু গরম খরচে কিংবা অল্প দিনের মধ্যে কোথায় যাবেন, বুঝতে পারছেন না? আপনার জন্য রইল ফিক্কাল গাঁওয়ের খোঁজ। উত্তরবঙ্গের অফবিট ডেস্টিনেশন এই ফিক্কালে গাঁও। কালিম্পংয়ের কোলে লুকানো গ্রাম। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই ফিক্কালে গাঁওয়ের খুঁটিনাটি।
কালিম্পং শহর থেকে মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত ফিক্কালে গাঁও। এখান থেকে ডেলো মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। সাংসের গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যেই রয়েছে এই ফিক্কালে গাঁও। ফিক্কালে গাঁওয়ের হোমস্টেতে বসে দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য। তার জন্য অবশ্যই আকাশ পরিষ্কার থাকা চাই। আকাশে মেঘে ঢাকা থাকলেও মন খারাপের কোনও কারণ নেই। কারণ ফিক্কালে গাঁওয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন ভোলানো। আর এখানকার আবহাওয়াও বেশ মনোরম। সুতরাং, বছরের যে সময়তেই আপনি ফিক্কালে গাঁও যান না কেন, কোনও শারীরিক কষ্ট নেই এখানে।
ফিক্কালে গাঁওয়ের পাহাড়ি রাস্তা ধরে কিছুটা দূর এগোলেই পৌঁছে যাবেন গ্রামের গুম্ফায়। মনেস্ট্রির নাম কুণ্ডেলিং। খুব বেশি পুরনো নয় এই গুম্ফা। তবে ফিক্কালে গাঁও আসা পর্যটকেরা একবার হলেও ঘুরে যান এখান থেকে। এই গুম্ফার পাশের রাস্তা ধরে আরও কিছুটা পথ হেঁটে গেলে পৌঁছে যাবেন ফিক্কালে গাঁওয়ের ভিউ পয়েন্টে। নাম ডেওরালি দাঁরা ভিউপয়েন্ট।এই ভিউ পয়েন্টই ফিক্কালে গাঁওয়ের মূল আকর্ষণ। ভিউ পয়েন্টে পৌঁছে কিছুক্ষণ জন্য ভাষা হারিয়ে ফেলতে পারেন। এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কালিম্পংয়ে কোলে বসে দেখা সৌভাগ্যের চেয়ে কম কিছু নয়। উপরের ভিউ পয়েন্ট থেকে দাঁড়িয়ে দেখা যায় তিস্তার বয়ে চলা। আর দেখা যায় দার্জিলিং, ডেলো, কালিম্পং শহর, রামধুরা, ইচ্ছাগাঁও, সিকিম, রংপো বাজার। আর তার সঙ্গে সদা বিদ্যমান তুষারাবৃত কাঞ্চনজঙ্ঘা।
ফিক্কালে গাঁওয়ের ভিউ পয়েন্টের দাঁড়িয়ে যেমন উত্তরবঙ্গ ও সিকিমের বেশ কিছু অংশ দেখতে পাবেন, তেমনই এখান থেকে ঘুরে নিতে পারবেন বেশ কিছু জায়গা। কাছেই রয়েছে ডেলো পার্ক, কালিম্পং শহর, রামধুরা ও ইচ্ছাগাঁও। ফিক্কালে গাঁওয়ের খুব কাছেই রয়েছে একটি হনুমানের মন্দির, যেটা ১৯৯৭ সালে তৈরি। যাঁরা অ্যাডভেঞ্চারের খোঁজে রয়েছেন, তাঁরা ফিক্কালে গাঁও থেকে যেতে পারেন ডেলো। এই ডেলো পাহাড় থেকে রয়েছে প্যারাগ্লাইডিং করার সুযোগ। এই ডেলো পাহাড়ের রাস্তা শুরুর আগে রয়েছে কালিম্পং সায়েন্স সেন্টার। এছাড়া ফিক্কালে গাঁও থেকে যেতে পারেন কালিম্পং বাজারেও।
ফিক্কালে গাঁওয়ে থাকা-খাওয়া নিয়ে কোনও চিন্তা নেই। একটা ছেড়ে একাধিক হোমস্টে পেয়ে যাবেন এই ফিক্কালে গাঁওয়ের বুকে। সেখানে জনপ্রতি ১,৮০০ টাকা খরচ হতে পারে। কালিম্পং বা ডেলো থেকে ফিক্কালে গাঁও আসা অনেক সহজ। আর যদি নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ফিক্কালে গাঁও আসতে চান, তাহলে দূরত্বে প্রায় ৮৫ কিলোমিটার। তবে, ফিক্কালে গাঁওয়ের শান্ত পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনার সমস্ত ক্লান্তি কেড়ে নেবে।