গরমে প্রাণ ওষ্ঠগত? ফেসবুক স্ক্রোল করলে উঠে আসছে পাহাড়ের ছবি? এই দেখে মনটা আরও দার্জিলিং করে উঠেছে। এই সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। বরং মন খারাপ দূর করতে পাড়ি দিন পাহাড়ে। তবে, ‘খাদের ধারে দার্জিলিং’-এ নয়। দার্জিলিং থেকে আরও ৩৫ কিলোমিটার এগিয়ে পৌঁছে যান সামালবংয়ে। যদিও এই পাহাড়ি গ্রামে দার্জিলিং জেলায় হলেও, কালিম্পংয়ের খুব কাছে অবস্থিত। যাঁরা অফবিট পাহাড়ি গ্রামের সন্ধানে মুখিয়ে থাকেন, তাঁদের জন্য রইল এই সামালবংয়ের ঠিকানা।
খুব ছোট গ্রাম, তা কিন্তু নয়। কিন্তু সামালবং জুড়ে রয়েছে চাষজমি। ধান থেকে শুরু করে আদা, এলাচ, ভুট্টা সব কিছুই চাষ হয় সামালবংয়ের পাহাড়ে। পাহাড়ের ঢাল কেটে তৈরি হয়েছে চাষজমি। তারই মাঝে একটা-দু’টো করে বাক্সবাড়ি। পাহাড়ের একধারে গড়ে উঠেছে সামালবং। আর অন্যদিকেই খাদ। ঘন সবুজে ঢাকা। কিন্তু সামালবংয়ের উপরে দাঁড়ালে নৈসর্গিক দৃশ্য দেখার সুযোগ।
সামালবংয়ের প্রতিটা কোণাই যেন ভিউ পয়েন্ট। গ্রামের যে প্রান্তই ভিউ পয়েন্ট। তবে, গ্রামের একদম উপরে হেঁটে গেলে দেখা মেলে কালিম্পং আর কাঞ্চনজঙ্ঘার। সামনের পাহাড়ই কালিম্পং। সামালবংয়ের বুকে দাঁড়িয়ে কালিম্পং শহরের ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ দেখতে পাবেন। আর ঠিক তার উপর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে তুষারাবৃত কাঞ্চনজঙ্ঘা। আর নীচে বয়ে চলেছে রেলি নদী। সামালবংয়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে স্পষ্ট দেখা যায় রেলি নদীর প্রতিটা বাঁক। চারদিকে ঢেউ খেলানো পাহাড়, তার নব্বই ভাগই সবুজে ঢাকা। আর উপত্যকার মাঝে বয়ে চলেছে রেলি। এমনই এক দৃশ্য চাক্ষুষ দেখতে পাবেন সামালবং থেকে।
কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ায় সূর্যের প্রথম ছটা এসে পড়ে আর তার সঙ্গে সকাল হয় সামালবংয়ে। তবে, সামালবংয়ের রাতের দৃশ্য বেশি মনোরম। সাধারণত, সূর্য অস্ত যাওয়ার পর পাহাড়ে ঘোরা যায় না। এ দিক থেকে সামালবং বেশ ভাগ্যবান। সামালবংয়ে সূর্য যখন অস্ত যায়, শ্বেতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘাও রং বদলায়। সাদা বরফে মোড়া পাহাড় তখন দেখা কমলা। আর যখনই পাহাড়ের কোলে সূর্য ডুব দিলেই আলোর রোশনায় জ্বলে ওঠে গোটা কালিম্পং শহর। সন্ধেবেলা ভিউ পয়েন্টে বসে উপভোগ করতে পারবেন এই দৃশ্য।
সামালবং থেকে ঘুরে আসতে পারেন চারখোল, পানবু, লাভা, লোলেগাঁ। এমনকী পুরনো সিল্ক রুট ঘুরেও আসতে পারেন সামালবং থেকে। এমনকী সামালবং থেকে বিজনবাড়ি, ঝেপি, রেলিং, জহওর পর্বত ঘুরতে যেতে পারেন। তবে, সামালবংয়ে রাত কাটানোর জায়গা সীমিত। হাতেগোনা কয়েকটি হোমস্টে রয়েছে এখানে। সেখানে থাকা-খাওয়া নিয়ে জনপ্রতি ১,৫০০ টাকা খরচ। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে সামালবংয়ের দূরত্ব মাত্র ৭০ কিলোমিটার। দার্জিলিং, কালিম্পং, শিলিগুড়ি ও গ্যাংটক সব জায়গা থেকেই অনায়াসে ঘুরে নিতে পারেন সামালবং।