প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে সিকিমের পর্যটন মানচিত্র থেকে মুছে গিয়েছে অনেক ‘অফবিট’ গ্রাম। পুজোর ছুটিতে হয়তো সেখানে অনেকেরই বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখে অনেকেই সিকিম ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। কিন্তু নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন বা বাগডোগরা বিমানবন্দর পর্যন্ত টিকিট কনফার্ম রয়েছে। সে টিকিট আপাতত বাতিল করার কোনও প্রয়োজন নেই। সিকিম বা কালিম্পং না গিয়ে, দার্জিলিংয়ের আনাচে-কানাচে লুকিয়ে থাকা চা বাগানে রাত কাটাতে যেতে পারেন। চা বাগানের কোলে কাটাতে পারেন পুজোর ছুটি। এমনই ৩টি টি এস্টেস-র খোঁজ রইল আপনার জন্য।
মকাইবাড়ি চা বাগান
একসময় এখানে ভুট্টা চাষ হত। সেখান থেকেই নাম মকাইবাড়ি। ১৮৫৯ সালে তৈরি হয় চা বাগান। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বর্তমানে অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে কার্শিয়াংয়ের মকাইবাড়ি। চা বাগান ছাড়াও আশেপাশের জঙ্গল ও বন্যপ্রাণী এই অঞ্চলকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। এছাড়াও রয়েছে বেশ কয়েকটি জলপ্রাত। চা বাগানের মধ্যে রাত কাটাতে গেলে আপনি এখানকার হেরিটেজ মকাইবাড়ি বাংলো বুক করতে পারেন। এটা অন্যান্য হোটেল বা হোমস্টে-র তুলনায় ব্যয়বহুল। তবে, মকাইবাড়ি চা বাগানে থাকার জন্য আরও হোমস্টে রয়েছে। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটারের পথ মকাইবাড়ি।
রঙ্গারুন টি এস্টেট
পুজোয় অনেকের দার্জিলিং যাওয়ার পরিকল্পনা থাকে। এ বছর দার্জিলিং থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রঙ্গারুন চা বাগানে ছুটি কাটাতে পারেন। প্রায় ৫০ হেক্টর জমি নিয়ে বিস্তৃত এই চা বাগান ১৭৭৬ সালে বাংলার তৎকালীন রাজ্যপাল লর্ড অ্যাডেন অ্যাসলের হাত ধরে জনপ্রিয় হয়। ৬,০০০ ফিট উচ্চতায় দাঁড়িয়ে রঙ্গারুনের পাশেই রয়েছে সিঞ্চল স্যাংচুয়ারি। সামনে তুষারাবৃত কাঞ্চনজঙ্ঘা, নিচে সবুজে ঘেরা চা বাগান আর পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে রংডং নদী। রঙ্গারুন চা বাগানের পাশে রাত কাটানোর জন্য হোমস্টে পরিষেবা পেয়ে যাবেন।
মিম চা বাগান
ক্রংকিটের জঙ্গল ছেড়ে সবুজের মাঝে পুজোর ছুটিতে কাটাতে চলে আসুন মিম চা বাগানে। লেপচাজগত ও সুকিয়াপোখরির ঠিক মধ্যিখানে অবস্থিত মিম চা বাগান। চায়ের বাগান ছাড়াও এখানকার জীববৈচিত্র্য মিমের অন্যতম আকর্ষণ। বাগানের মধ্যে ঘুরতে ঘুরতে দেখা মিলতে পারে হরিণ সহ অন্যান্য বন্যজন্তুর। চা বাগানের উপরে রয়েছে একটি মনাস্ট্রি। আর নিচে রয়েছে খরস্রোতা নদী। খুব কাছেই অবস্থিত বিজনবাড়ি। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে মিম চা বাগানের দূরত্ব প্রায় ৮৫ কিলোমিটার। দার্জিলিংও মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে। চা বাগানের ধারে ধাপে ধাপে গড়ে উঠেছে হোমস্টে। সেখানেই ছুটি কাটান।