মে মাসের শুরুতেই স্কুলের গরমের ছুটি পড়ে যাবে। ঘরে বসে না থাকে, পরিবারের সকলকে নিয়ে বেড়িয়ে আসুন পাহাড় থেকে। অনেকেরই হয়তো মনে হবে, পাহাড় বেশ খরচ সাপেক্ষ। তার উপর উঁচুতে পরিবারের বয়স্কদের সমস্যা হতে পারে। তাই আজকে আমরা আপনার জন্য নিয়ে এসেছি ডুয়ার্সের ঠিকানা। কম খরচে এবং কম সময়ে পাহাড়ের কাছাকাছি ঘুরতে যাওয়ার সেটা ডেস্টিনেশন ডুয়ার্স। যদিও ডুয়ার্স অফবিট নয়। তবে, এমন অনেক জায়গা রয়েছে যেটা অনেকেই এড়িয়ে যান। তেমনই একটি জায়গা হল প্যারেন। ঝালং-বিন্দু রুটে পড়ে এই প্যারেন। অফবিট নয়, কিন্তু অপরূপ সুন্দর একটি জায়গা এই প্যারেন।
ঝালং ও বিন্দু দু’টোই খুব জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। এই ঝালং যাওয়ার পথে পড়ে এই প্যারেন। যদিও এই প্যারেন যাওয়ার রাস্তা সবচেয়ে বেশি মনোরম। জলদাপাড়া থেকে বেরিয়ে ফালাকাটা হয়ে যেতে হয় প্যারেন। জলদাপাড়া থেকে প্যারেন যেতে সময় লাগে প্রায় ৩ ঘণ্টা। সেই পথে পড়বে সবুজে মোড়া চা বাগান। পথে বিরতি নিয়ে চাও খেতে পারেন এখানে। প্রথমে পড়বে ডায়না নদী, তারপরেই জলঢাকা। গরুমারা অভয়ারণ্য ছুঁয়ে যাবেন প্যারেন যাওয়ার পথে। পথের বেশিরভাগ অংশে পড়বে চাপড়ামারির জঙ্গল।
চাপড়ামারি হয়ে সোজা পৌঁছে যেতে হবে ঝালং। এই ঝালং দিয়ে বয়ে গিয়েছে জলঢাকা নদী। উপরে রয়েছে ছোট্ট ব্রিজ। দিনের কোনও সময় যদি নিরিবিলিতে কাটাতে চান, তাহলে যেতে পারেন ঝালংয়ে। ঝালংয়ে রাত কাটানো যায়। বাক্সবাড়ির দেশ। আর এই ঝালং থেকেই যাওয়া যায় প্যারেনে। ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম। কিন্তু প্যারেন গ্রামের বৈশিষ্ট্য হল। এটা ভারত-ভুটান সীমান্তের শেষ জনপদ। পাহাড়ের গায়ে লুকিয়ে থাকা সবুজ গ্রাম।
প্যারেনে ঢুকে যাওয়া মানেই শহুরে জীবন থেকে একদম বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া। চারদিক ঘেরা সবুজ ঘন জঙ্গলে। কান পাতলে পাখির ডাক আর নদীর শব্দ শোনা যায় শুধু। যাঁরা নিরিবিলিতে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে চান, তাঁদের জন্য সেরা ডেস্টিনেশন হতে পারে এই প্যারেন। রাতের প্যারেনও মায়াময়। আলো-আঁধারিতে মায়াবী দেখায় প্যারেনকে। তখন পাখির ডাক নয়, শোনা যায় শুধু ঝিঁ ঝিঁর ডাক। আর আকাশের দিকে তাকালে দেখা যায় তারায় ভরা আকাশ।
ট্রেনে চেপে প্যারেন গেলে আপনাকে নামতে হবে নিউমল জংশন। সেখান থেকে ঝালং ৪৫ কিলোমিটার। আর ঝালংয়ের খুব কাছেই রয়েছে প্যারেন। প্যারেনে পশ্চিমবঙ্গ বন দফতরের কটেজ রয়েছে। আপনি চাইলে সেখানে রাত্রিযাপন করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে অনলাইনে বুক করে প্যারেন যেতে হবে। তাহলে আর দেরি কীসের। বেড়িয়ে আসুন প্যারেন থেকে।