হিমাচল প্রদেশ নিঃসন্দেহে একটি অসাধারণ ও অপূর্ব জনপ্রিয় হলিডে ডেস্টেনেশন। হিমালয়ের কোলে প্রাকৃতিক দৃশ্য ও শান্তিতে ছুটি কাটানোর হটস্পট হল পার্বতী উপত্যকা। একে ভারতের আমস্টারডম হিসেবেও পরিচিত। ক্যানভাসে শিল্পীর তুলিতে আঁকা চিত্রপটের মতো এই উপত্যকা। অনেকেই একে ঈশ্বরের দেশ হিসেবে মনে করেন, এমনই এর প্রকৃতির রূপ। শুধু প্রাকৃতিক দৃশ্যই নয়, এই উপত্যকা ঘিরে রয়েছে প্রচুর পৌরাণিক লোককাহিনি, যা অনেকেই তা জানেন না…
পার্বতী উপত্যকা কেন বলা হয়?
জনশ্রুতি অনুসারে, ভগবান শিব এই উপত্যকায় প্রায় ৩০০০ বছর ধরে ধ্যান করেছিলেন। হিন্দুদের বিশ্বাস, এখানে বলে ধ্য়ান করতেন ও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ছাই-গন্ধ মেখে নাগা সন্ন্যাসীর রূপ ধারণ করেছিলেন। বহু যুগ পর দেবাদিদেব মহাদেব চোখ খোলেন ও আশেপাশের মনোরম অপূর্ব দৃশ্য দেখে তিনি স্ত্রী পার্বতীর নাম উচ্চারণ করেছিলেন।
মনিকরণের পিছনেও রয়েছে লোককাহিনি
১৭৬০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই পবিত্র স্থানটিতে দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ভিড় করেন। বসন্তকালে এই এলাকায় ভিড় চোখে পড়ার মতো। লোকমতে, ভয়ংকর বন্যার পর মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য মানু উপস্থিত ছিলেন। হিন্দু পুরাণ অনুসারে, ভগবান শিব ও দেবী পার্বতী উপত্যকায় একান্তে সময় কাটানোর জন্য হেঁটে ঘুড়ে বেড়াচ্ছিলেন, সেইসময় দেবী পার্বতী তাঁর একটি কানের দুল হারিয়ে ফেলেছিলেন। শিবের কাছে এসে তাঁকে খুঁজতে বললে, তিনি নিজে না গিয়ে সহকারীদের কানের দুল খুঁজে আনতে বলেন। কিন্তু তাঁরা সেই কাজে ব্যর্থ হলে ভগবান শিব ক্রুব্ধ হয়ে যান, যার পরিণতি বিশ্বজুডডে ধ্বংস যজ্ঞ শুরু হয়ে যায়।
মালানার পৌরানিক কাহিনি
লোকমতে, মালানার গ্রামবাসীররা মেসিডোনিয়ান বিজয়ী আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের গ্রিক সৈন্যদের বংশধর। এই এলাকায় প্রাচীন গ্রিক স্থাপত্যের প্রতিফলন দেখা যায়। রোমানদের সঙ্গে সদৃশ্যপূর্ণ হওয়ায় এখানকার সংস্কৃতিতে তার সন্ধান পাওয়া যায়।
ক্ষীরগঙ্গার কাহিনি
বহু বছর আগে, ভগবান শিব ও দেবী পার্বতীর ছোট ছেলে কার্তিক এখানে হাজার হাজার বছর ধরে ধ্যান করেছিলেন। হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, তিনি যেসময় এখানে এসেছিলেন, সেই সময় শিব-পার্বতীও তাঁকে দেখার জন্য উভয়ই যেতেন ও পার্বতী তাঁর জন্য সুস্বাদু পায়েস তৈরি করতেন। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, এই কারণের জেরেই এই এলাকায় দিয়ে প্রবাহিত গঙ্গা নদীর রঙ ধূসর রঙের।
আরও পড়ুন: পুজোয় পর্যটকদের জন্য সুখবর! এবার পাহাড়ের কোলে ছুটবে কাচের ট্রেন!