করোনা অতিমারির জেরে ফের একবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অমরনাথ যাত্রা। তবে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কবল থেকে বাঁচতে এবারও ভক্ত ছাড়াই পুরীর জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা পালিত হবে। আগামী ১২ জুলাই, পুরী শহরে বিখ্যাত রথযাত্রা পালিত হবে করোনার কড়া নিয়মবিধি মেনেই। গত রবিবার সেই সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দিল শ্রী জগন্নাথ মন্দির অ্যাসোসিয়েশন।
ওই বৈঠকে উপস্থিত সকলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এবারের রথযাত্রায় যুক্ত যাঁরা থাকবেন, তাঁদের সকলকেই অনুষি্ঠানের আরটি-পিসিআর টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এছাড়া উপস্থিত সকলকেই ভ্যাকসিনের ২টি ডোজ় গ্রহণ করতেই হবে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে রথযাত্রা সংক্রান্ত বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান পালিত হবে মন্দির চত্বরেই। মন্দিরের সমস্ত অনুষ্ঠানের সময় ভক্তদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। শুধু প্রধান পুরোহিত ও মন্দিরের সেবাইতরাই এই পবিত্র আচার অনুষ্ঠানের সঙ্গী হতে পারবেন। অন্যদিকে, রথযাত্রা চলাকালীন পুরীতে ট্রেন, বাস বা প্রাইভেট গাড়ি ঢুকতে পারবে না বলে আগেই জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: এখনই হবে না চার ধাম যাত্রা! রাজ্য সরকারকে একহাতে নিল উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট!
রথযাত্রার পবিত্র আচার স্নান যাত্রার দিন থেকেই পুরীর মন্দির চত্বরে সিআরপিসির অন্তর্গত ১৪৪ ধারা জারি করা হবে। ভক্তরা যাতে ওই দিন জমায়েত হতে না পারেন, তাই পুরী মন্দিরের আশেপাশে এলাকায় কার্ফু জারি করা হবে। মন্দিরের মধ্যেই দেবতা জগন্নাথ-সুভদ্রা- বলরামকে দুধ দিয়ে স্নান করানোই নিয়ম। পাশাপাশি , এদিন মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রথ যাত্রা মিটে গেলে, আগামী ২৫ জুলাই বিখ্যাত জগন্নাথের মন্দিরের দরজা জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
যেতে না পারলেও, পুরীর মন্দিরের ওইদিনের আচার-অনুষ্ঠানের নির্ঘন্ট দেখে নিন…
২৪ জুন- রাত ১টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত স্নান পূর্ণিমা শুরু হবে। সেই সময় মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে দেব-দেবীদের বাইরে এনে হাঁটিয়ে প্রদক্ষিণ করার নিয়ম।
সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ পুরীর রাজা দিব্যসিং দেব স্নানের জায়াগায় উপস্থিত থেকে স্নানযাত্রার অনুষ্ঠান শুরু করবেন। তারপর ১১টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত দেবতাদের স্নান করিয়ে হাতির পোশাকে সজ্জিত করা হবে। স্নানের পর মন্দিরের একটি আলাদা ঘর রয়েছে, যেখানে দেব-দেবীদের রাখা হয়। হিন্দুদের বিশ্বাস, স্নানের পর দেবতাদের জ্বর আসে, তাই সেই ঘরে তাঁদের জন্য চলে সেবা-শুশ্রুষা চলে। প্রসঙ্গত, স্নানের স্থান থেকে অসুস্থ কক্ষে নিয়ে যাওয়ার সময় হল বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। সেই সময় শোবাযাত্রা করে সেই অসুস্থ কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: লকডাউন শিথিল হতেই কামাক্ষ্যা-কাটরা স্পেশাল ট্রেন চালু রেলের!
ওই অসুস্থ কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রায় ১৫দিন ধরে চলে দেবদেবীর সেবা-যত্ন।
১২ জুলাই- রথযাত্রার শোভাযাত্রা শুরু হওয়ার কথা সকাল সাড়ে ৮টা থেকে। রথে দড়ি টানা শুরু হবে ৪টা ৪ মিনিটে।
২১ জুলাই- সোনার বেশের অনুষ্টান হবে ২১ জুলাই বিকেল ৪টে থেরে রাত ১১টা পর্যন্ত।
২৩ জুলাই, নীলাদ্রি বিজে অনুষ্ঠান পালিত হয়। এই দিন মূল মন্দিরে ফের ফিরে আসেন জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলরাম। সেদিন শোভাযাত্রার অনুষ্ঠানটি শুরু হবে বিকেল ৪টে থেকে, শেষ হবে রাত ১০টার সময়।