অনেকে শুনে থাকবেন, আবার অনেকে জানেন না। ১৯৮৬ সাল থেকে ধুমধাম করে পালিত হয়ে আসছে নালন্দা ও রাজগীরের ঐতিহাসিক ও সংস্কৃতি-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ মহোত্সব। রাজগীর মহোত্সব (Rajgir Mahotsav 2022) শুধু বিহারের নয়, সারা ভারতের গর্ব বলা যেতে পারে। ইতিহাস, ধর্ম, শিল্প, সংস্কৃতির একি সুন্দর উপস্থাপনা। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে এই মহোত্সবের খ্যাতি রয়েছে। বিশাল ও গুরুত্বপূর্ণ এই মহোত্সবটি আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গিয়েছে।
তিনদিনের এই সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যবাহী গালা সেলিব্রেশনটি রাজগীর কনভেনশন সেন্টারে পালিত হবে বলে জানানো হয়েছে। যেখানে এক ছাদের তলায় দেশের প্রখ্যাত ও বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী ও নৃত্যশিল্পীরা উপস্থিত থাকেন। এবছর এই জনপ্রিয় মহোত্সবে কোন কোন সেলেব্রিটি ও বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত থাকবেন? হেমা মালিনী থেকে যুক্তা পানিগ্রাহী. রবীন্দ্র জৈন, নিদা ফজলি, তালাত আজিজ, গজল সম্রাট গুলাম আলি, জাসবিন্দর নারুলা, অলকা ইয়াগনিক, পণ্ডিত শিবকুমার শর্মার মত জাতীয় স্তরের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত থাকতে চলেছেন। তারার মেলায় এই মহোত্সবের গরিমা আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
ভারতের প্রাচীন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে অক্ষুন্ন রেখে এই উত্সবের মাধ্যমে নতুন করে অন্য মাত্রা যোগ করা হয়েছে। এই রঙিন উত্সবের মাধ্যমে নালন্দা ও রাজগীরের মত ঐতিহ্যবাহী শহরকে বিশ্ব পর্যটনের দরবারে উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবছরের মত এবারেও পুরনো ও আধুনিক সংস্কৃতির মিশেল, প্রাচীন ভারতীয় নৃত্য কৌশল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সকলকে মুগ্ধ করে তুলবে।
রাজগীর মহোত্সব শুধুমাত্র বিহারেই নয়, সারা দেশ ও বিশ্ব দরবারে ইতিহাস, শিল্প, ধর্ম ও সংস্কৃতির এক আশ্চর্য দৃষ্টান্ত। বিখ্যাত এই উত্সবের আলাদা, নিজস্ব ঐতিহ্য রয়েছে। সেই ঐতিহ্য এখনও পর্যন্ত অব্যাহত। ১৯৮৬ সাল থেকে রাজগীর ও নালন্দার মত সমৃদ্ধশালী, ঐতিহ্যবাহী ও সাংস্কৃতিক দিকটিকে তুলে ধরার জন্য এই বিশাল আয়োজন।
ইতিহাস
বিহারের রাজগীর শহরটি সাতটি মালভূমি দিয়ে ঘেরা। রাজগৃহ ছাড়াও রাজগীরের অপর নাম প্রাকৃত। এর অর্থ হল রাজাদের বাড়ি। প্রাচীন ভারতের মৌর্য সাম্রাজ্যের মহান রাজা বিম্বিসার হলে এই শহরের প্রতিষ্ঠাতা। ৫ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত, রাজগীর মগধ সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসেবে পরিচিত ছিল। পরবর্তীকালে মৌর্য সাম্রাজ্যের নতুন রাজধানী হয় পাটলিপুত্র। মহাভারতেও রাজগীরের নাম উল্লেখ রয়েছে। সেইসময় ভারতীয় বাণিজ্যে একটি উল্লেখযোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ বন্দর হিসেবে পরিচিত ছিল। অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও ঐতিহ্যবাহী শহরের ইতিহাসকে সামনে রেখে এই উত্সবের আয়োজন করা হয় প্রতিবছর।