ইতিহাসে সমৃদ্ধ বর্ধমান। মসজিদ থেকে শুরু করে এই জেলায় রয়েছে ১০৮ শিব মন্দির, পাল-সেন যুগের স্থাপত্য, সর্বমঙ্গলা মন্দির ইত্যাদি। এছাড়া কাটোয়া মহকুমায় রয়েছে চার সতীপীঠ। দেবীর ৫১ পীঠস্থানের মধ্যে চারটি রয়েছে এই অঞ্চলে। এখানে দেবীর ভিন্ন রূপের পুজো করা হয়। তাই সারাবছর ভক্তদেরও ভিড় লেগে থাকে এখানে। এবার এই চার সতীপীঠকে নিয়ে ‘সার্কিট ট্যুরিজম’ শুরু করার উদ্যোগ নিচ্ছে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি এই চার সতীপীঠ পর্যটকদের ঘুরিয়ে দেখানোর জন্য বিশেষ প্যাকেজেরও পরিকল্পনা করছে পর্যটন দফতর। তাছাড়া চার সতীপীঠকে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠলে এখানে অর্থনৈতিক উন্নতির পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগও হবে।
পর্যটক টানতে নয়া উদ্যোগ নিয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পর্যটন দফতর। ‘সতীপীঠ দর্শন’ প্যাকেজের মাধ্যমে ঘুরিয়ে দেখানো হবে চার সতীপীঠ। কাটোয়া মহকুমার মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রাম থানা এলাকায় রয়েছে চারটি সতীপীঠ। মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্রামে রয়েছে যোগাদ্যা মন্দির। কথিত রয়েছে, এই ক্ষীরগ্রামে সতীর ডান পায়ের বুড়ো আঙুল পড়েছিল। তাই এই ক্ষীরগ্রামের যোগাদ্যাদেবীর টানে বহু পর্যটক আসে এখানে। বছরের নির্দিষ্ট সময়ে এখানে পুজোও হয়। পাশাপাশি প্রতিদিনই ভোগ খাওয়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে।
মঙ্গলকোটের আর এক সতীপীঠ রয়েছে উজানিতে। এই জায়গা কোগ্রাম নামেও পরিচিত। এখানে দেবী মঙ্গলচণ্ডীর পুজো হয়। এই সতীপীঠে সতীর বাম হাতের কনুই পড়েছিল। এছাড়া কেতুগ্রামে রয়েছে সতীপীঠ বাহুলক্ষ্মী। এই কেতুগ্রামে আর এক সতীপীঠও রয়েছে, অট্টহাস। এখানে দেবীর অধ ওষ্ঠ পড়েছিল। কেতুগ্রামের বাহুলক্ষ্মী ও অট্টহাসের সতীপীঠে সারাবছর রাজ্যজুড়ে পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। এই চার সতীপীঠকে এবার একসঙ্গে ঘুরে দেখাতে উদ্যোগ নিচ্ছে পর্যটন দফতর।
এই প্রসঙ্গে ‘এই সময়’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পূর্ব বর্ধমান জেলা পর্যটন বিভাগের আধিকারিক মহম্মদ হোসেন চৌধুরী জানিয়েছেন, একই দিনে ঘুরে দেখতে পারবেন কাটোয়া মহকুমার চার সতীপীঠ। কাটোয়া শহর লাগোয়া রেল স্টেশন থেকে পর্যটকদের রিসিভ করা হবে। চার সতীপীঠ ঘুরিয়ে দেখানোর জন্য থাকবে গাড়ির ব্যবস্থা। পাশাপাশি সকালের জলখাবার থেকে শুরু করে দুপুরের খাবার, চা-বিস্কুট, স্ন্যাকসের ব্যবস্থা থাকবে পর্যটকদের জন্য। ‘সতীপীঠ দর্শন’ প্যাকেজের অনুমোদন এসে গেলেই নির্দিষ্ট পোর্টালও চালু করবে পর্যটন দফতর। অনলাইনে গিয়ে চার সতীপীঠ ঘুরে দেখার জন্য পর্যটকরা বুকিং করতে পারবেন।