এবারেও হচ্ছে না বোলপুরের শান্তিনিকেতনের পৌষমেলা। পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যার কারণে এ বছর মেলা করা সম্ভব হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার বোলপুর পুরসভাকে চিঠি দিয়ে এ কথা জানিয়ে দিয়েছে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। পৌষমেলার আয়োজনে জটিলতা দেখা দেওয়ার কারণেই এ বছর মেলা হচ্ছে না।
কয়েক মাস আগে বিশ্বভারতী কর্মী পরিষদের তরফে মেলার দায়িত্ব থাকা শান্তিনিকেতন ট্রাস্টকে মেলা করতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। মেলার আয়োজন নিয়ে ট্রাস্ট মাস দুয়েক মাস কর্মী পরিষদকে বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু এখন অবধি সেই চিঠিও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট জানিয়েছে তাদের পক্ষে পৌষমেলা শান্তিনিকেতনের মেলা মাঠে করা সম্ভব নয়। তবে বিকল্প পৌষমেলা করা যায় কি না কিংবা পৌষমেলা করার অন্য কোনও উপায় রয়েছে কি না তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
২০২০-তে অতিমারীর জন্য শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা বন্ধ ছিল। ২০২১-এও খুব একটা জাঁকজমকভাবে পৌষমেলা হয়নি। বোলপুরের ডাকবাংলো ময়দানে বোলপুর পুরসভার উদ্যোগে ‘বিকল্প পৌষমেলা’-এর আয়োজন করা হয়েছিল। দায়িত্বে ছিল ব্যবসায়ী সমিতি ও বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ। আশা করেছিল, কোভিড পরিস্থিতি কিছু স্বাভাবিক হওয়ায় ছোট করে হলেও পৌষমেলা হবে। সেরকম কিছুই হয়নি।
এ বছর কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তাই এ বছর যাতে সুষ্ঠ ভাবে পৌষমেলা আয়োজিত হয় তার জন্য জুলাই মাসেই বিশ্বভারতী কর্মী পরিষদের কাছে মেলা করতে চেয়ে চিঠি দিয়েছিল শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয় ওই চিঠিতে। কিন্তু ওই চিঠির কোনও উত্তর না পেয়ে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট জানিয়ে দিয়েছে তাদের পক্ষে পৌষমেলা করা সম্ভব নয়।
শান্তিনিকেতনের পৌষমেলা বাঙালির কাছে উৎসবের মতো। অনেকেই পৌষমেলার জন্য সারা বছর মুখিয়ে থাকেন না। গত দু’বছর সেই অর্থে পৌষমেলা হয়নি শান্তিনিকেতনে। আশা করা হয়েছিল, এ বছর হয়তো আগের মতোই আয়োজিত হবে পৌষমেলা। কিন্তু তা হচ্ছে না।
শান্তিনিকেতন মেলার মাঠ সংলগ্ন এলাকায় ভুবনডাঙার চারটি বাঁধ আবর্জনা ও কচুরিপানার ভর্তি হয়ে রয়েছে। আর এই বাঁধগুলো বিশ্বভারতীয় মালিকানাধীন। এই জায়গা এই মুহূর্তে পরিষ্কার করা সম্ভব নয়। তাই এ বছর ওই মাঠে পৌষমেলা আয়োজিত হচ্ছে না। কোভিড অন্যান্য কারণে এর আগেও বন্ধ ছিল পৌষমেলা। এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচবার বন্ধ হল এই ঐতিহ্যবাহী মেলা।