প্রতিবছরের মত এবারেও ৩ মার্চ বিশ্ব বণ্যপ্রাণী দিবস পালন করা হচ্ছে। এদিন বণ্যপ্রাণীদের সংরক্ষিত করার ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পালন করা হয়। পৃথিবীতে অসংখ্য প্রাণীর আবাসস্থল। তাদের প্রত্যেকের পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাস্তুতন্ত্র, মরুভূমি, রেইনফরেস্ট, সমভূমি, পার্বত্যএলাকা ও অন্যান্য অঞ্চলেই বন্যপ্রাণীদের সমান বিচরণ।
২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ, ৬৮ তম অধিবেশনে বন্যপ্রাণী ও উদ্ভিদের বিপন্ন প্জাতির আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংক্রান্ত কনভেনশন গৃহীত হওয়ার দিন হিসেবে এই ৩ মার্চ তারিখটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশ্ব বণ্যপ্রাণী দিবস সেই সময় থেকেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিনে পরিণত হয়ে গিয়েছে। এই দিবসটি ঘোষণা করার পিছনে আসল উদ্দেশ্যই হল বন্যপ্রাণীর উপর মানুষের ক্রিয়াকলাপের ধ্বংসাত্মক প্রতিক্রিয়া হ্রাস করা।
রণথম্বোর, জিম করবেট, গির ন্যাশনাল পার্ক এবং সুন্দরবন হল ভারতের কিছু জনপ্রিয় বন্যপ্রাণী গন্তব্যস্থল। এছাডা়ও দেশে রয়েছে কম পরিচিতির বন্য়প্রাণী গন্তব্যস্থলগুলি, সেগুলি কী কী, দেখে নিন একনজরে…
নাগজিরা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য
বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণীর সম্ভার রয়েছে এখানে। বলা যেতে পারে নাগজিরা অভয়ারণ্যের সম্পদ এগুলি। মহারাষ্ট্রের গোন্দিয়া এবং ভান্ডারা জেলার মধ্যে অবস্থিত এই অভয়ারণ্যে পর্যটকরা বাইসন, সাম্বার, বন্য শূকর, প্যান্থার, স্লথ বিয়ারের মতো বিপুল সংখ্যক বন্য প্রাণী দেখতে পারবেন। এছাড়া ১৬০ টিরও বেশি এভিয়ান প্রজাতি ও প্রায় ৩৬টি বিভিন্ন ধরনের সরীসৃপ-সহ বিশাল মাপের বন্যবিড়াল দেখা যায়।
গৌতলা অটরাঘাট অভয়ারণ্য
মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদ শহর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই সংরক্ষিত বনাঞ্চলটি ৬৪,৩৯৯ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। অভয়ারণ্যটি দক্ষিণ গ্রীষ্মমন্ডলীয় শুষ্ক পর্ণমোচী বন এবং তৃণভূমির সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ। বন্য বিড়াল, লেপার্ড ক্য়াট, বার্কিং ডিয়ার, শিয়াল, শিয়াল, চিতাবাঘ, বন্য শুয়োর এবং চিঙ্করার মতো প্রচুর সংখ্যক প্রাণী পাওয়া যায়।
আচনাকমার বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য
ভারতের জাতীয় পশুকে দেখার জন্য সেরা জায়গা হল এই অভয়ারণ্য। ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাঘ সংরক্ষণালয় এটি। এখানে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, ওয়াইল্ড বাইসন এবং চিতাবাঘ সহ বেশ কয়েকটি বিপন্ন প্রাণী প্রজাতির আবাসস্থল। অভয়ারণ্যটি ছত্তিশগড় রাজ্যের বিলাসপুর বন বিভাগের একটি অংশ এবং কানহা-আচানাকমার করিডোরের মাধ্যমে মধ্যপ্রদেশের আইকনিক কানহা টাইগার রিজার্ভের সাথে যুক্ত। বিলাসপুর থেকে সহজেই আচনাকমার বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে পৌঁছাতে পারেন।
কোটিগাও বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য
গোয়ায় বেড়াতে এবার অবশ্যই কোটিগাও বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য প্রকৃতি এবং বন্যপ্রাণী দেখার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। গোয়া-কর্নাটক সীমান্তে অবস্থিত এই সংরক্ষণকেন্দ্রটিতে ৩০মিটার দীর্ঘ গাছ রয়েছে। দক্ষিণ গোয়ার এই বনাঞ্চলে উড়ন্ত কাঠবিড়ালি, ড্রাকো (উড়ন্ত টিকটিকি), ভারতীয় প্যাঙ্গোলিন, চার-শিংযুক্ত অ্যান্টিলোপ, সরু লরিস, মালাবার পিট ভাইপার, পিট ভাইপার, সোনালি-ব্যাক গ্লাইডিং সাপ ইত্যাদির জন্য উপযুক্ত আবাসস্থল। ভাগ্য ভাল থাকলে প্য়ান্থার, ভারতীয় গ্য়াজেল, সজারু, হায়নাদেরও দেখে আসতে পারেন।
চাংথাং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য
লেহ জেলার লাদাখি চাংথাং মালভূমিতে অবস্থিত এই অভয়ারণ্যটি পৃথিবীর সর্বোচ্চ হ্রদ, সো মোরিরির কাছেই। এখানে গেলে আশা না করলেও ভাগ্য যদি সহায় থাকে, তাহলে বিরল তুষার চিতাবাঘেরও দর্শন পেতে পারেন। অবিশ্বাস্য সংরক্ষণস্থলে কিয়াং বা বন্য গাধা, গাঢ় ঘাড়ের সারস, তিব্বতি নেকড়ে, বন্য ইয়াক, ভরাল, বাদামী ভালুক এবং মরমোট দেখতে পারেন। কাছেই রয়েছে কোরজোক গ্রামে কোরজোক মঠ।
আরও পড়ুন: Holi 2022: সপ্তাহান্তে দোল উত্সব! রঙিন দিনে দেশের কোথায় যাবেন, আজই প্ল্যান করুন