উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশি জেলার নেলং উপত্যকায় ১১ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত ঐতিহাসিক ও প্রাচীন কাঠের সেতু গার্টং গালি এখন পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। পর্যটকদরে জন্য গার্টং গালি ট্রেক খুলে দিয়েছে উত্তরাখণ্ড সরকার। ভারত ও চিন সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত এই সেতুটিতে ৫০০ মিটার দীর্ঘ সিঁড়ি রয়েছে। রিপোর্ট অনুসারে, এখানকার কাঠের সেতুটিই একটি আকর্ষণের জায়গা। কারণ পাথরের গায়ে কাঠের তৈরি করা এই সিঁড়িটির একটি অপূর্ব মাহাত্ম্য রয়েছে। কাঠের তৈরির সিঁড়ি বা সেতু থেকে নেলং উপত্যকার অতুলনীয় দৃশ্য চোখে পড়বে। দূরে নীল আকাশের মধ্যিখান থেকে বরফে ঢাকা পর্বতের হাতছানি, চারিপাশে সবুজ পাইন ও পাহাড়ি গাছের ভরা উপত্যকা যেন শিল্পীর আঁকা ক্যানভাস।, করোনাকালে নির্দেশিকা পর্যালোচনা করে মাত্র ১০জন পর্যটককে এই সেতু দেখার অনুমতি দেওয়ার কথা বলেছে জেলা প্রশাসন।
স্থানীয়দের বিশ্বাস, এই সেতু নির্মাণ করেছিল পেশোয়ার-পাঠানরা। বহু বছর ধরে তিব্বত ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যপথ হিসেবে এই গার্টং গালি সেতু র ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জানা গিয়েছে, ১৯৬২ সালে , ভারত-চিন যুদ্ধের পর এলাকাটি পর্যটকদের জন্য নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। যার ফলে ওই সেতু তার পর্যটন কেন্দ্রের মাহাত্ম্য হারিয়ে ফেলেছিল। প্রায় ৫৯ বছর পর, ফের পর্যটকদের জন্য এই ঐতিহাসিক সেতুটি পরিদর্শন ও রোমাঞ্চকর অনুভূতির জন্য খুলে দিল রাজ্য সরকার।
এ প্রসঙ্গে উত্তরাখণ্ডের পর্যটন মন্তীর সাতকপাল মহারাজ জানিয়েছেন যে গার্টং গালি ট্রেক খোলার ফলে উত্তরাখণ্ডে অ্যাডভেঞ্চার পর্যটন ক্রিয়াকলাপে একটি নয়া মাত্রা যোগ হতে চলেছে। তিনি আরও জানান, উত্তরাখণ্ডের ইতিহাসে এই প্রাচীন সেতুটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক প্রদর্শন করে আসা সেতুটির গুরুত্ব অনেকখানি।
২০১৫ সালে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাদুং ও নেলং উপত্যকায় পর্যটকদের জন্য যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে কাঠের সেতুটি জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকার ফলে সেখানে মানুষের যাতায়াতের জন্য সঠিক সময় ছিল না। সম্প্রতি নতুন করে সেতু ও সিঁড়ি বানানো হয়েছে। অন্যদিকে,উত্তরাখণ্ড পর্যটন সচিব দিলীপ জাওয়ালকর বলেছেন, গার্টং গালি খোলা হলে গ্রামীন পর্যটনকে উন্নত করতে অনকেটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কর্মসংস্থান, আর্থিক উন্নতি, হোম-স্টের সুবিধার জন্য এলাকাটিও উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: পর্যটকদের জন্য সুখবর! এই প্রথম খুলল ১১ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত ভারতের ‘উচ্চতম’ হার্বাল পার্ক