কলকাতার কাছেই এক টুকরো তিব্বত। ওড়িশার এই বিশেষ জায়গাটির সমন্ধে এক বাক্যে বলতে গেলে এটাই বলতে হয়। দক্ষিণ ওড়িশায় পূর্বঘাট পর্বতমালায় ঘেরা গজপতি জেলা। তারই মধ্যে ছোট্ট শহর জিরাং। যা ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে ওড়িশার তিব্বত নামেই পরিচিত।
ওড়িশার রাজধানী ভুবনেশ্বর থেকে ২৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই পাহাড়ি শহরেই রয়েছে মুক্ত বাতাস, আর তিব্বতের ছোঁয়া। ষাটের দশকে ডালহৌসি, বমডিলা এবং চাম্বা থেকে কিছু তিব্বতী উদ্বাস্তু এসে এই জনপদে বসতি গড়ে তোলেন। পরে ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৭ সালে সারা ভারতের নানা জায়গা থেকে এসে এখানে ঘাঁটি গাড়ে। তিব্বতীরা এই জায়গাটিকে বলেন ‘ফুইসিং’, অর্থাৎ বাংলা ভাষায় যার মানে ‘সুখ এবং প্রাচুর্যের দেশ’। আবার এই জায়গা অনেকের কাছে চন্দ্রগিরি নামেও পরিচিত।
কেন যাবেন চন্দ্রগিরি?
শহুরে কোলাহল, আর ক্রংক্রিটের জঙ্গল থেকে দূরে নিরিবিলতে কটা দিন কাটাতে চাইলে ছুটে যেতেই হবে চন্দ্রগিরিতে।
কী দেখবেন?
এখানকার মহেন্দ্রগিরি পর্বতের সৌন্দর্য্য মুগ্ধ করবে আপনাকে। লোকবিশ্বাস ভগবান পরশুরাম এই পর্বতে বসে ধ্যান করতেন। আবার এই শৃঙ্গ ওড়িশার দ্বিতীয় সর্বোচ্চচ শৃঙ্গ। তাছাড়াও পূর্বঘাট পর্বমালায় বেষ্টিত এই ছোট্ট শহরের মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যেও আটকে যাবে আপনার চোখ।
তবে এখানকার মূল আকর্ষণ হল বৌদ্ধ বিহারগুলি। চন্দ্রগিরিতে বৌদ্ধ মঠে রয়েছে ভগবান বুদ্ধের প্রায় ২৩ফুট উঁচু ব্রঞ্জের মূর্তিও। আর রয়েছে উত্তর পূর্ব ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ মঠ পদ্মসম্ভাবা মহাবিহার মঠ। এখানে গেলে এই মঠে যেতে ভুলবেন না কিন্তু।
কী ভাবে যাবেন?
হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে করে পৌঁছে যান ব্রহ্মপুর স্টেশন। সেখান থেকে গাড়ি বুক করে পারি দিন জিরাং-এর উদ্দেশ্যে। ব্রহ্মপুর থেকে জিরাং-এর দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার।
বিমান পথে যেতে চাইলে গিয়ে নামতে হবে ভুবনেশ্বর বিমানবন্দরে। সেখান থেকে সড়ক পথে জিরাং। পূর্বঘাট পর্বতমালার মধ্যে দিয়ে জিরাং যাওয়ার এই যাত্রাপথ বেশ উপভোগ্য।