শীতের দিনগুলিতে সর্দি- কাশি লেগেই থাকে। আবহাওয়ার খামখেয়ালির জেরে ক্রমাগত চ্যালেঞ্জ নিতে নিতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে। তারফলে পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়ে ওঠে। নিছক সাধারণ শরীর খারাপ ভেবে অনেকে আবার এই সর্দি-কাশিকেও উপেক্ষা করেন।
শীতকালে অধিকাংশের মধ্য়ে সবচেয়ে সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম হল শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা। প্রসঙ্গত এই ঋতুতে শুষ্ক কাশির প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। শ্লেষ্মা ছাড়াই শুকনো কাশি হওয়ার কারণ রয়েছে অনেক। অ্যালার্জি, হাঁপানি, সংক্রমণ ও অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মত কারণ হতে পারে।
সাধারণত অল্প সর্দি-কাশি হলেই সহজলভ্য বা হাতের কাছে নিজের ডাক্তারি বুদ্ধি দিয়ে মেডিসিন গ্রহণ করা বাঙালিদের চিরাচরিত ধর্ম। তাতে সাময়িক আরাম পেলেও মূল রোগের কারণ অজানাই থেকে যায়। শুষ্ক কাশি নিয়ন্ত্রণের জন্য মেডিসিন নেওয়ার আগে ঘরোয়া কিছু টিপস মেনে চলতে পারেন।
ক্রমাগত বিরক্তিকর শুষ্ক কাশি নিয়ন্ত্রণ করতে ঘরোয়া কিছু টোটকা ট্রাই করতে পারেন। সেগুলি কী কী, তা দেখে নিন...
আদা চা- কাশির নিরাময়ের জন্য সেরা আয়ুর্বেদিক ভেষজগুলির মধ্যে আদা হল অন্যতম। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের বৈশিষ্ট্য। এর জেরে গলা ধরা, জ্বালা ধরা ও শ্বাসযন্ত্রের শ্বাসনালীর জ্বালাভাব প্রশমিত করতে সাহায্য করে। স্বস্তি পেতে একটি প্যানে এক কাপ মত জল নিন। তাতে এক ইঞ্চির আদা থেঁতো করে কয়েক মিনিটের জন্য ফুটতে দিন। এবার পছন্দের চা পাতা যোগ করে আদা চা বানিয়ে নিন। এতে মধু দিয়ে গরম গরম পান করুন।
কাঁচা মধু- শীতকালে শুকনো কাশি যদি প্রতি বছরই হয়ে থাকে,তাহলে প্রতি বছর টাকা খরচ করে গাদা ট্যাবলেট খেতে যাবেন না। আয়ুর্বেদ আনুসারে, জৈব ও কাঁচা মধু মিশিয়ে চা বা গরম জল পান করা যায়, তাহলে আর অ্যান্টি-বায়োটিক খেতে হবে না। গলা ব্যথা,সর্দি, কাশির মোক্ষম ভেষজ এটি।
লিকোরিস- ঐতিহ্যবাহী আয়ুর্বেদিক ভেষজগুলির মধ্যে লিকোরিস হল অন্যতম। কাশি, হাঁপানি, গলা ব্যথার চিকিত্সার জন্য দুর্দান্ত একটি উপকরণ। জলের মধ্যে লিকোরিসের একটি কাঠি জলের মধ্যে দিয়ে ফুটিয়ে নিন। এবার কাথের মত তৈরি করে প্রতিদিন ২ বার করে গ্রহণ করুন। শুকনো কাশির থেকে মুক্তি পাবেন দ্রুত।
রসুন- শুষ্ক কাশিতে জেরবার হলে হাতের কাছে দুর্দান্ত ভেষজ উপাদান হল রসুন। দুধের সঙ্গে রসুনের একটি কোয়া সিদ্ধ করতে দিন। এরপর এক চিমটে হলুদ দিয়ে ভাল করে গুলে নিন। গরম গরম ভেষজ পানীয়টি খেয়ে নিন। শুষ্ক কাশি, গলা ব্যথার মত সমস্যাগুলি এক নিমেষে প্রশমিত করতে সাহায্য করে।
থাইম চা- শুকনো কাশি সারাতে আরেকটি আয়ুর্বেদিক হার্বাল চা হল থাইম চা। সর্দি-কাশিতে যদি প্রতিবছর শীতকালে ভোগেন তাহলে এই ভেষজ চা খেতে পারেন। শুকনো কাশির পাশাপাশি হুপিং কাশির চিকিত্সার জন্য ইউরোপে সর্বাধিক ব্যবহৃত ভেষজগুলির মধ্য এটি অন্যতম।