TV9 Bangla Digital | Edited By: Sneha Sengupta
Aug 18, 2021 | 1:17 PM
মাত্র ৮ বছর বয়সে পাকিস্তানের মাটি ছেড়ে বাবার হাত ধরে ভারতে চলে এসেছিলেন গুলজার। তারপর নিজের জন্মস্থান দিনায় গিয়েছিলেন ৭০ বছর পর। ৪ দিনের জরুরি ভিসা নিয়ে গুরু আহমেদ নাদিম কাসমির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। গুরুজির হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পর সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। প্রায় ৭ দশক পর জন্মভূমিতে গিয়ে পূর্ব স্মৃতি সব মনে পড়ে গিয়েছিল কবির।
এক বহুমুখী প্রতিভার নাম গুলজার। কবিতা, গান, উপন্যাস, চিত্রনাট্য লেখার পাশাপাশি ছবিও পরিচালনা করেছেন তিনি। বেশ কিছু ছবির জন্য অনবদ্য কিছু গান রচনা করেছেন।
১৯৩৪ সালের ১৮ অগাস্ট পাকিস্তানের দিনায় জন্মগ্রহণ করেন গুলজার। তাঁর আসল নাম সমপূরণ সিং কালরা। দেশভাগের পর ভারতে এসেছিলেন। কলেজে থাকাকালীন সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ জন্ম নেয় তাঁর। প্রতিবেশীর বাড়িতে সঙ্গীতচর্চা করতেন। স্ট্রাগল করার সময় গ্যারাজ মেকানিক হিসেবেও কাজ করেছেন।
বলিউডে প্রথম ব্রেক পেয়েছিলেন বিমল রায়ের ছবি 'বন্দিনী'তে। ছবির সাফল্যের পর তাঁর কাজেই সহকারী হিসেবে পুরোপুরি নিযুক্ত হয়ে গিয়েছিলেন গুলজার।
ছবিতে প্রায়সই ফ্ল্যাশব্যাক ব্যবহার করতেন গুলজার। মনে করেন, অতীত না দেখালে কখনওই তাঁর ছবি সম্পূর্ণ হয় না। বহুবার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। তাঁর পরিচালনায় কিছু কালজয়ী ছবি তৈরি হয়। সেগুলির মধ্যে অন্যতম 'মৌসম', 'কোশিশ', 'মাচিস'। 'ইজাজৎ' ছবিতে 'মেরা কুছ সামান' গানটির জন্য সেরা গীতিকারের জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন গুলজার।
অভিনেত্রী রাখিকে বিয়ে করেছিলেন ১৯৭৩ সালে। সেসময় দু'জনেই নিজের কেরিয়ারের শীর্ষে ছিলেন। বহু পার্টিতে তাঁদের দেখা হয়। বাংলার প্রতি শ্রদ্ধার কারণেই রাখির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক এগিয়ে চলে। রাখিও গুলজারের প্রতিভাবকে শুরু থেকে কদর করতেন। কিন্তু সেই সম্পর্ক টেকেনি। কন্যা মেঘনার জন্মের একবছর পরই রাখি-গুলজারের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। শোনা যায়, রাখির সিনেমায় ফেরার সিদ্ধান্ত ও যশ চোপড়ার 'কভি কভি' ছবিটি গুলজারের সঙ্গে আলোচনা না করেই সাইন করার ঘটনা তাঁদের মধ্যে সমস্যা তৈরি করে। রাখির সঙ্গে তাঁর ছাড়াছাড়ি ব্যথিত করেছিল গুলজারকে। সেই কথা তিনি ব্যক্তি করেছিলেন লেখার মাধ্যমে।
গুলজারের কন্যা পরিচালক মেঘনা বলেছেন, তাঁর বাবার মধ্যে এমন একটি দিক আছে, যা নারীদের দুঃখ-যন্ত্রণা অনুভব করতে পারে। বাবা নাকি তাঁকে ছোট থেকে মায়ের স্নেহে বড় করেছেন। মাথার চুল আঁছড়ে দিতেন গুলজার, জুতোর ফিতে বেঁধে দিতেন মেয়ের, স্কুল ছুটির পর তাঁকে বাড়ি নিয়ে আসতেন। কারও উপর উঁচু গলায় কথা বলেন না আজও। মেঘনা জানিয়েছেন, বাবা-মা একসঙ্গে থাকেন না ঠিকই, কিন্তু তাঁদের আইনীভাবে কোনওদিনও ছাড়াছাড়ি হয়নি।