
তিন সপ্তাহ ধরে কলকাতার আনাচে কানাচে দাপিয়ে বেড়াল ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড বা এনএসজি এবং মার্কিন বিশেষ অভিযান বাহিনী বা এসওএফ। যৌথভাবে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালাল ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই দুই বাহিনী।

কখনও স্কুলের সিঁড়ি বেয়ে উঠে উদ্ধার করল পণবন্দিদের। কখনও হোটেলের করিডোর দিয়ে গুঁড়ি মেরে গিয়ে হাতে-নাতে ধরে ফেলল জঙ্গিদের। কখনও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালাল মেট্রোরেল স্টেশনে।

এটা অবশ্য কোনও সত্যিকারের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান ছিল না। এটা ছিল, বার্ষিক ভারত-মার্কিন যৌথ সন্ত্রাসবিরোধী মহড়া, 'তর্কশ'। 'তর্কশ'-এর সপ্তম সংস্করণ পরিচালিত হল কলকাতার বুকে।

২২ এপ্রিল থেকে কলকাতায় এনএসজির হাবে শুরু হয়েছিল এই মহড়া। বুধবার (১৫ মে) শেষ হয়েছে তিন সপ্তাহের এই যৌথ মহড়া। শহুরে এলাকায় সন্ত্রাসবাদী হামলা হলে, কীভাবে তার মোকাবিলা করা হবে, সেই বিষয়ে যৌথ প্রশিক্ষণ এবং মক ড্রিল করেছে ভারতও মার্কিন বাহিনী।

যৌথ মহড়ায় ছোট জায়গায় যুদ্ধ, ভবনে অভিযান, পণবন্দিদের উদ্ধার, নজরদারি, দীর্ঘ পরিসরের স্নাইপিংয়ের মতো, শহুরে পরিবেশে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে কাজে আসতে পারে, এমন বিভিন্ন অনুশীলন করেছেন দুই দেশের সেনাকর্মীরা। এই ধরনের অভিযান অনুশীলনের পাশাপাশি, অভিযানের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন কৌশল এবং পদ্ধতিও নিজেদের ভাগ করে নিয়েছে এনএসজি এবং মার্কিন এসওএফ।

এনএসজির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ইন্দো-মার্কিন বার্ষিক মহড়া 'তর্কশ'-এর প্রাথমিক লক্ষ্য দুই বাহিনীর মধ্যে কার্যকরী সম্পর্ক গড়ে তোলা। সেই সঙ্গে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে,বিশেষ করে শহুরে পরিস্থিতিতে, এই দুই বিশেষ বাহিনীর মধ্যে আন্তঃকার্যক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার উন্নয়ন।

বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে, দুই দেশের সামনেই নিরাপত্তাগত কড়া চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে, ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র্রের বার্ষিক মহড়া, তর্কশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। এর আগে, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে চেন্নাই শহরে এই মহড়া হয়েছিল।

প্রতি বছরই ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে এই মহড়া পরিতালনা করে এনএসজি এবং ইউএস এসওএফ। দুই বাহিনীই দ্বিপাক্ষিক, পারস্পরিক সন্ত্রাস-বিরোধী সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে, নিয়মিত সন্ত্রাসবাদ দমনের বিভিন্ন বিষয়গুলি ভাগ করে নেয়।