
জলপাইগুড়ি: ফের লোকালয় থেকে উদ্ধার লুপ্তপ্রায় অতি বিরল প্রজাতির ইয়েলো পিট ভাইপার স্নেক বা হলুদ বোড়া সাপ। মেটেলি ব্লকের বাতাবাড়ির একটি রিসর্টে বাহারি গাছের মধ্যে পেঁচিয়ে বসেছিল বিষধর। দূর থেকে দেখে এক কর্মী ভেবেছিলেন ফুল বুঝি! কাছে যেতেই ফোঁস করে ওঠে সরীসৃপ!

সাপটিকে দেখতে পেয়েই সঙ্গে সঙ্গে চালসা রেঞ্জের বনকর্মীদের খবর দেওয়া হয়। গ্রামবাসীরা প্রথমটায় মনে করেছিলেন লাউডগা সাপ। কিন্তু বনকর্মীরা নিশ্চিত করেন সাপটি আসলে অত্যন্ত বিষধর ইয়েলো ভাইপার।

লম্বায় প্রায় আড়াই ফুট এই সরীসৃপটি চা-বাগান ও পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দা। মূলত ঠাণ্ডা ও স্যাঁতস্যাঁতে জায়গাই এদের বিশেষ পছন্দ। তবে, লোকালয়ে সাপটি উদ্ধার হওয়ায় বিশেষ চিন্তায় পরিবেশবিদরা। কারণ, লোকালয় থেকে কিছুটা দূরে থাকতেই পছন্দ করে এই বিষধর। আচমকা লোকালয়ে তার আগমনের নেপথ্যে সম্ভাব্য কী কী কারণ থাকতে পারে তা নিয়ে সন্দিহান সর্পবিশারদরা।

১৯৯৯ সালে গরুমারা জাতীয় উদ্য়ানে সর্প সমীক্ষার সময়ে প্রথম দেখা মেলে এই ভাইপারের। পরবর্তীতে ২০০৫ সালে, উত্তরবঙ্গের চার জেলা জলপাইগুড়ি , আলিপুরদুয়ার , কোচবিহার এবং দার্জিলিঙে গ্রিন ও ইয়েলো ভাইপারের দেখা মেলে। এই প্রজাতির চারটি প্রকারভেদই অত্যন্ত বিষধর। মূলত, লাল-নীল-হলুদ-সবুজ, এই চার রঙেই এই বিশেষ ভাইপারের দেখা মেলে।

সর্পবিষারদ মিন্টু চৌধূরী বলেন, "এই সাপ অন্যান্য সাপের মতো ডিম পাড়ে না। সরাসরি বাচ্চা প্রসব করে। উদ্ধার হওয়া সাপটির পেটেও বাচ্চা রয়েছে বলে মনে হয়। তবে সাপটি কীভাবে গ্রামে এল তা চিন্তার বিষয়। এই একটি ছাড়াও আর এই ভাইপার এই চত্বরে রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা দরকার।"

জলপাইগুড়ির ‘অনারারি ওয়াইল্ডলাইফ ওয়ার্ডেন’ সীমা চৌধুরী বলেন, "এই ইয়েলো পিট ভাইপার অত্যন্ত বিষাক্ত। এই সাপ কামড়ালে সঠিক সময়ে চিকিত্সা না করালে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েই রোগী মারা যান। অন্য়ান্য বিষধরদের থেকে অনেক দ্রুতগতিতে কাজ করে এর বিষ। সাপটিকে উদ্ধার করে গরুমারা জাতীয় উদ্যানে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।"