Kaushiki Amavasya 2023: তন্ত্রসাধনায় কাটবে সব সমস্যার মেঘ, তারাপীঠের মহাশ্মশানে হাজির বিদেশিনীরাও!
Hindu Rituals: ভাদ্রমাসের অমাবস্যা তিথিকে কৌশিকী অমাবস্যা যেমন বলা হয়, তেমনি এই পুণ্য়তিথিকে আলোকামাবস্যা ব্রত পালনেওর বিশেষ রীতি রয়েছে। শুধু কালী ঠাকুরই নয়, ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অমাবস্যা তিথিতে শ্রীহরি ও লক্ষ্মীরও পুজো করা হয়ে থাকে।
কৌশিকী অমাবস্যার ব্রত ভাদ্রমাসের এক অনন্য ও গুরুত্বপূর্ণ শুভক্ষণ বলা চলে। একটানা ৬ বছর ধরে পালন করার নিয়ম। এই ব্রত পালনের জন্য ব্রতীকে প্রতিবছর লক্ষ্মী-নারায়ণের পুজো করার পাশাপাশি দুটি ঘিয়ের প্রদীপ ও চারটি তিলের তেলের প্রদীপ জ্বালিয় ব্রত পালন করতে হয়।
পাশাপাশি ২ বছর টানা হবিষ্যির অন্ন ও একবছর শুধু ফলাহার করে থাকা নিয়ম। ব্রত শেষে ব্রাহ্মণভোজন ও দক্ষিণা দান করতে হয়। ভাদ্রমাসের এই পুণ্যতিথিকে তারানিশি-ও বলা হয়। দশমহাবিদ্যার অন্যতম দেবী তারাকে এদিন বিশেষ আচার মেনে পুজো করা হয়।
কথিত আছে, এই তিথিতেই তারামায়ের একনিষ্ঠ ভক্ত তথা সাধক বামাক্ষ্যাপা মহাশ্মশানে শ্বেতশিমূল গাছের নীচে উগ্রতারার সাধনা করে তারা মায়ের দর্শন পেয়েছিলেন। সাধনার মাধ্যমে পেয়েছিলেন সিদ্ধিলাভও।
তাঁর সাধনায় তুষ্ট হয়ে দেবী তারা বামাক্ষ্যাপাকে দর্শন দিয়েছিলেন। মহাশ্মশান নাকি এক মহাজাগতিক আলোয় আচ্ছন্ন হয়েগিয়েছিল। সেই দৃশ্যের প্রত্য়ক্ষদর্শীরাও সেই শোভায় প্রভাবিত হয়েছিল।
এই সময় তারাপীঠের মহাশ্মশানে ভিড় করেন দেশ-বিদেশের সাধু-সন্ন্যাসীরাও। তন্ত্রসাধকদের কাছে এক পবিত্র ও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ তিথি। বিশ্বাস করা হয়, এই তিথিতে শুভক্ষণে স্বর্গ ও নরকের দরজা খুলে যায়। এদিনেই সাধক কুণ্ডলিনী চক্রকে জয় করতে পারেন।
এদিন তন্ত্রসাধনা ও বৈদিক মতে ইষ্টদেবতা ও নবগ্রহকে পুজো করার রীতি রয়েছে। শ্মশানে যজ্ঞের মাধ্যমে তুষ্ট করারও রেওয়াজ রয়েছে। সারারাত ধরে মহাশ্মশানে চলে সাধনা ও যজ্ঞ।
তারাপীঠের মায়ের টানে চলে এসেছেন সুদূর রাশিয়ার সাধকরাও। কৌশিকী অমাবস্যার শুরু বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই তারাপীঠের মহাশ্মশানে আশ্রয় নিয়েছেন দুই বিদেশিনী সাধিকা। হিন্দুধর্ম ও তারামায়ের টানে উপস্থিত হয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, তারা মায়ের মাহাত্ম্য ও তন্ত্রসাধনার উদ্দেশ্যেই এখানে এসেছেন।
সিদ্ধপীঠ হিসেবে প্রসিদ্ধ এই তারাপীঠ আসলে তন্ত্রসাধকদের পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান। কালীপুজোয় তো বটেই, এই কৌশিকী অমাবস্যার মতো পুণ্যতিথিকে কেউই অবহেলা করতে পারেন না। তপস্যা করে সিদ্ধিলাভের আশায় হাজার হাজার সাধু-সন্ন্যাসীরা ভিড় করেন এখানে।
কথিত আছে, এদিন তারা মায়ের পুজো করলে ও দ্বারকা নদীতে স্নান করলে পুণ্যলাভ যেমন হয়, তেমনি কুম্ভস্নানের সমান ফল পাওয়া যায়। তারামায়ের পাশাপাশি এদিন শ্মশান কালীরও পুজো করা হয়ে থাকে। মহাশ্মশানেই রয়েছে তারা পায়ের আসল শিলা পাদুকা। তার পাশেই রয়েছে বামাক্ষ্যাপার সমাধি।
পঞ্চাঙ্গ মতে, কৌশিকী অমাবস্যা পালিত হবে ১৩ সেপ্টেম্বর। শেষ হবে ১৪ সেপ্টেম্বর অমাবস্যায়। হিন্দুরাই শুধু নয়, বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের কাছেও এই অমাবস্যার গুরুত্ব রয়েছে।