গ্রেটার নয়ডায় আয়োজিত অটো এক্সপো-র 16 তম সংস্করণে দেশের প্রথম সৌরচালিত গাড়িটি আত্মপ্রকাশ করেছে। উন্নত প্রযুক্তি এবং অত্যাধুনিক বৈশিষ্ট্যের গাড়িটি একটি কনসেপ্ট কার। পুণের স্টার্ট-আপ Vayve Mobility সেই গাড়ি তৈরি করেছে। দেশের প্রথম সোলার পাওয়ার্ড কারের নাম Vayve EVA, এবারের অটো এক্সপোতে যার প্রোটোটাইপ দেখানো হয়েছিল।
পুণের ওই Vayve Mobility নামক স্টার্ট-আপ সংস্থা দাবি করেছে, এটিই দেশের প্রথম সৌরচালিত বৈদ্যুতিক গাড়ি। শহুরে এলাকায় মানুষজনের প্রতিদিনেপ যাতায়াতের কথা মাথায় রেখেই ডিজ়াইন করা হয়েছে সেই গাড়িটি। দৈনন্দিন ছোট-ছোট দূরত্বে ভ্রমণের জন্য গাড়িটি উপযুক্ত বিকল্প হতে পারে।
Vayve Mobility-র প্রোগ্রাম ম্যানেজার অঙ্কিতা জৈন বলেছিলেন, এটি একটি প্রোটোটাইপ মডেল এবং শহুরে এলাকায় প্রতিদিনের যাতায়াতের জন্য তৈরি করা হয়েছে। দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক এবং একজন শিশু সহজেই এই গাড়িতে বসতে পারে। ছোট এই ইলেকট্রিক গাড়িতে দুটি দরজা রয়েছে। দৃশ্যত, এই গাড়িটি Mahindra-র E2O-এর সঙ্গে অনেকাংশে মিল রয়েছে।
Vayve EVA গাড়িতে চালকের জন্য সামনের অংশে একটি সিঙ্গেল সিট রয়েছে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ও একজন শিশুর জন্য পিছনের সিটটি বেশ কিছুটা চওড়া করা হয়েছে। ড্রাইভিং সিটের পাশে দরজার ভিতরের দিকে একটি ফোল্ডিং ট্রে দেওয়া হয়েছে, যার উপরে আপনি ল্যাপটপ রাখতে পারেন। ড্রাইভিং সিটটি 6-ওয়ে অ্যাডজাস্টেবল। এছাড়াও গাড়িটিতে প্যানোরমিক সানরুফ রয়েছে।
গাড়ির দৈর্ঘ্য 3060mm, প্রস্থ 1150mm, উচ্চতা 1590mm এবং গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স 170mm। Vayve EVA-য় সামনের দিকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট কয়েল স্প্রিং সাসপেনশন এবং পিছনে ডুয়াল শক সাসপেনশন রয়েছে। এছাড়া এর সামনে ডিস্ক ব্রেক এবং পিছনে ড্রাম ব্রেক দেওয়া হয়েছে। বৈদ্যুতিক পাওয়ার স্টিয়ারিং দিয়ে সজ্জিত এই গাড়িটির টার্নিং রেডিয়াস 3.9 মিটার। রিয়ার হুইল ড্রাইভে গাড়িটির সর্বোচ্চ গতি 70 কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।
ছোট হওয়া সত্ত্বেও গাড়িটির ইন্টিরিয়ারে ভাল জায়গা দেওয়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করা হয়েছে। এতে অ্যাপল কার প্লে এবং এয়ার কন্ডিশন (এসি)-সহ অ্যান্ড্রয়েড অটো কানেক্টিভিটি রয়েছে। এর প্যানোরামিক সানরুফ গাড়ির অভ্যন্তরটিকে আরও প্রশস্ত দেখায়। আপনি যখন গাড়ির ভিতরে বসবেন, তখন মনেই হবে না যে এই গাড়ি এত ছোট।
এটি একটি প্লাগ-ইন বৈদ্যুতিক গাড়ি এবং এতে 14Kwh (Li-iOn) ব্যাটারি প্যাক রয়েছে। লিকুইড-কুলড ইলেকট্রিক মোটর ব্যবহৃত হয়েছে গাড়িটিতে, যা 12kW শক্তি এবং 40Nm টর্ক জেনারেট করে। সিঙ্গেল স্পিড স্বয়ংক্রিয় গিয়ারবক্স দিয়ে সজ্জিত, এই গাড়িটি রিজেনারেটিভ ব্রেকিং সিস্টেম ব্যবহার করে, যা ব্যাটারির শক্তিকে কিছুটা বাড়িয়ে দেয়।
কোম্পানির দাবি, এই গাড়িটি একবার চার্জে 250 কিলোমিটার পর্যন্ত ড্রাইভিং রেঞ্জ দেয়। এতে যে সোলার প্যানেলটি রয়েছে, তা সানরুফের জায়গায় ব্যবহার করা যেতে পারে। এই গাড়ির ব্যাটারি পুরোপুরি চার্জ করার পরে, এটির চালানোর খরচ প্রতি কিলোমিটারে মাত্র 80 পয়সা। তাছাড়া এই গাড়িটি মাত্র 5 সেকেন্ডে ঘণ্টায় 0 থেকে 80 কিলোমিটার স্পিড তুলতে সক্ষম।