সায়ম কৃষ্ণ দেব
Jan 14, 2025 | 3:11 PM
সাধু-সন্ন্যাসী, অঘোরি, নাগা সাধু, সাধারণ মানুষ থেকে ভিআইপি, প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ মেলায় দলে দলে প্রতিদিন ভিড় করছেন কোটি কোটি ভক্ত। কেউ আসছেন গঙ্গাস্নান করে পুণ্য অর্জন করতে, কেউ আসছেন সাধু-সঙ্গ লাভ করতে।
সাধুদের আছে নানা প্রকারভেদ। কেউ অঘোরি, গলায় মুন্ডমালা, লাল চোখ, যেন যে কোনও মুহূর্তে প্রলয় ঘটাবে তাঁর তেজ। কেউ আবার নাগা সন্ন্যাসী। ধর্ম রক্ষা করাই এঁদের প্রধান কাজ। কারও গায়ে গেরুয়া বসন, তো কেউ আবার এই ঠান্ডাতেও উলঙ্গ হয়ে গায়ে ছাই-ভস্ম মেখে ব্যস্ত সাধনায়।
এমনই নানা দৃশ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে গোটা কুম্ভ মেলা জুড়ে। সাধুদের এই কঠোর তপস্যা প্রত্যক্ষ করতেই ছুটে আসছেন বহু মানুষ। গায়ে একটা সুতো নেই, হাতে তরবারি, গদা, ত্রিশূল, ডমরু নিয়ে মহাদেব নাম জপছেন নাগা সাধুরা।
কিন্তু প্রশ্ন কেন এই ঠান্ডাতেও নগ্ন থাকেন নাগা সাধুরা? কখন তাঁরা পরিত্যাগ করেন নিজেদের বস্ত্র? এই প্রশ্নের উত্তর রইল এই প্রতিবেদনে।
নাগা সন্ন্যাসী হওয়ার প্রক্রিয়া খুব কঠিন এবং দীর্ঘ। একজন সাধারণ মানুষের নাগা সন্ন্যাসীর হয়ে উঠতে কমপক্ষে প্রায় ছয় বছর সময় লাগে। নিয়ম মতে একজন উলঙ্গ নাগা সাধু শুধুমাতর কটি ছাড়া আর কিছুই পড়তে পারেন না।
কুম্ভমেলাতেই সন্ন্যাসী হওয়ার জন্য চূড়ান্ত শপথ নেন তাঁরা। এই সময় অনেকেই জীবন থেকে শেষ বস্ত্রটুকু ত্যাগ করেন। এর পর সারা জীবন ওই ভাবেই জিবন অতিবাহিত করেন নাগা সন্ন্যাসীরা। এই কারণেই বহু নাগা সন্ন্যাসী কেবল কটি পরেই ঘুরে বেড়ান।
সন্ন্যাসী হওয়ার আগে প্রথমে কোনও ব্যাক্তিকে দীর্ঘকাল ব্রহ্মচারী থাকতে হয়, তারপর তাকে মহাপুরুষ ও অবধূত করা হয়। নাগা সন্ন্যাসী হওয়ার চূড়ান্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় এই কুম্ভের সময়েই। পুণ্য লগ্নে স্নান করে নিজের পিন্ড নিজেকে দান করতে হয়। সারতে হয় ডান্ডি সংস্করণ প্রথা সহ আরও অনেক নিয়ম কানুন।
নাগা সন্ন্যাসীরা নিজেদের শরীরে যে ছাই মাখেন তাও কোনও সাধারণ ছাই নয়। বিশেষ নিয়ম মেনে যজ্ঞকুন্ডে পিপল, রসালা, বেলপাতা, কলা এবং গরুর গোবর পুড়িয়ে তারপরে প্রস্তুত করা হয় বিশেষ ছাই। বিশেষজ্ঞদের মতে নাগা শব্দের অর্থ ধর্মের রক্ষক। ধর্মকে রক্ষা করাই তাঁদের একমাত্র কাজ।