সিঙ্গুরে ‘শিল্প পার্ক’, উদ্যোগপতিদের জমি দেবেন মমতা

সৌরভ পাল |

Dec 24, 2020 | 7:28 PM

“আমরা কারও জমি দখল করব না। জমির দখল থাকলে, সেখানে বাড়ি ঘর করে দিয়ে, চাকরি দিয়েই জমি নেব। কোথাও জোর করে জমি দখল করব না।”

সিঙ্গুরে ‘শিল্প পার্ক’, উদ্যোগপতিদের জমি দেবেন মমতা
ফাইল চিত্র।

Follow Us

হাওড়া: সিঙ্গুরে ‘শিল্প পার্ক’, সঙ্গে ইচ্ছুক উদ্যোগপতিদের জমি বিতরণ, বৃহস্পতিবার বিকেলে নবান্ন থেকে এই ঘোষণাই করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “সিঙ্গুরে অ্যাগ্রো-ইনডাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরি করবে সরকার। ।” যার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করে দেওয়া হয়েছে। এনএইচটু-র (NH2) ওপর, সিঙ্গুর রেল স্টেশনের কাছে, সিঙ্গুর ট্রমা কেয়ার সেন্টারের পাশে এগারো একর জমির ওপরে এই পার্ক তৈরি হবে। তৈরি করবে  ওয়েস্ট বেঙ্গল স্মল স্কেল ইনডাস্ট্রিয়াল ডেভলেপমেন্ট কর্পোরেশন। ওখানে বাউন্ডারি ওয়াল দেওয়া শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

সিঙ্গুরে অ্যাগ্রো-ইনডাস্ট্রিয়াল পার্ক

সিঙ্গুরের ফলন ও ফসল, দুই-ই ভাল। চাষিরা যেন তাঁদের উৎপাদিত ফসল যোগ্য দামে বিক্রি করতে পারেন এবং নিজেদের তৈরি সামগ্রীর প্রদর্শনীও করতে পারেন, সেই ভাবনা থেকেই এই শিল্প পার্ক তৈরি করার কথা ভাবা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, এই অ্যাগ্রো-ইনডাস্ট্রিয়াল পার্ক (Singur Agro-Industrial Park) রাজ্যের ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়নের আওতাধীন।

সিঙ্গুরে ইচ্ছুক উদ্যোগপতিদের জমি

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন পরিষ্কার করে জানিয়ে দেন, এগারো একর জমির ওপর তৈরি হওয়া পার্কের জমি দেওয়া হবে ছোট, বড় ও মাঝারি উদ্যোগপতিদের। আবেদন পত্র অনুযায়ী ১০ কাঠা থেকে ৩০ কাঠা পর্যন্ত জমি দেবে সরকার। যার যেমন চাহিদা, সেই অনুযায়ী জমি বণ্টন হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, “বড় উদ্যোগপতিদের জন্য বড় প্লট। ছোট উদ্যোগপতিদের জন্য ছোট প্লট। মাঝারি উদ্যোগপতীরা পাবেন মাঝারি প্লট।” শিল্পের প্রয়োজনে যদি পার্কের সামগ্রিক উন্নয়নের প্রয়োজন হয়, তাও করে দেবে সরকার। শুধু সিঙ্গুরই নয়, হাসিমারাতেও এমন ইনডাস্ট্রিয়াল পার্ক গড়বে রাজ্য সরকার। তার নকশাও যে  তৈরি, এদিন সেকথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

পানাগড় ইনডাস্ট্রিয়াল পার্কে ৪০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ

একই সঙ্গে পানাগড় ইনডাস্ট্রিয়াল পার্কে ৪০০ কোটি টাকার বিনিয়োগের কথাও সাংবাদিকদের কাছে ব্যক্ত করেছেন তিনি। সেখানে ফুড প্যাকেজিং সংক্রান্তের জন্য জমি চাওয়া হয়েছিল। সরকার তা দিয়েছে।  এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বিপুল কর্মসংস্থান হবে বলেও আশাবাদী বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: আমাকে বিশ্বভারতী কোনও আমন্ত্রণ জানায়নি, নবান্নে মুখ খুললেন মমতা

এই ঘোষণার পর স্বাভাবিক ভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিল্পমুখী ভাবমূর্তি নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন চর্চা। বামেদের অনেকেই বলছেন, সেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের দেখানো পথেই হাঁটতে হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যিনি সিঙ্গুরের কৃষি জমিতে শিল্প হবে না বলে আন্দোলন করেছিলেন, সেই তিনিই এবার শিল্প-পার্ক করতে উদ্যোগ নিয়েছেন।

আরও পড়ুন: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের সঙ্গেই জোট, সিলমোহর কংগ্রেস হাইকমান্ডের 

তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে বামেদের মতো কোনও ‘ভুল’ যে করবে না, তাও স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা কারও জমি দখল করব না। জমির দখল থাকলে, সেখানে বাড়ি ঘর করে দিয়ে, চাকরি দিয়েই জমি নেব। কোথাও জোর করে জমি দখল করব না।”

Next Article