প্রতিবছর ১২ জানুয়ারি দেশে জাতীয় যুব দিবস হিসেবে পালিত হয়। ১৯৮৪ সালে ভারত সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে ১৯৮৫ সাল থেকে প্রতিবছর স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে জাতীয় যুব দিবস পালন করা হবে। ভারতীয় যুবসমাজকে স্বামীজীর দৰ্শন ও শিক্ষা অনুপ্ৰাণিত করে আসছে। তার জ্ঞানমাৰ্গে ভারতীয় যুবক যুবতীদের অগ্রসর করতে এই দিবসের পত্তন করা হয়েছিল। আর তাই স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনের দিনটিকেই স্মরণ করতে পালন করা হয় জাতীয় যুব দিবস। তাঁর জন্মদিনের দিনটিতেই স্বামী বিবেকানন্দ জয়ন্তী হিসেবেও পালিত করা হয়।
১৮৬৩ সালের ১২ জানুয়ারি কলকাতায় তাঁর জন্ম হয় । স্বামী বিবেকানন্দ সন্ন্যাস জীবন নেওয়ার আগে নরেন্দ্র নাথ দত্ত নামে পরিচিত ছিলেন। ভারতীয় দর্শনের বেদান্ত শাখা এবং যোগচর্চার মাহাত্ম্য তিনিই প্রথম পাশ্চাত্য দুনিয়ার সামনে তুলে ধরেন। উনিশ শতকের শেষের দিকে পৃথিবীর সামনে হিন্দুধর্মের গুরুত্ব মেলে ধরেন তিনি। বিভিন্ন ধর্মমতের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক স্থাপনের কৃতিত্বও তাঁকে দিয়ে থাকেন অনেকে। রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতিষ্ঠা করেন স্বামী বিবেকানন্দ। পরাধীন ভারতে হিন্দুত্বের নবজাগরণ এবং জাতীয়তাবাদের প্রসার ঘটান তিনি। ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ব ধর্ম সম্মেলনে তাঁর বিখ্যাত বক্তৃতা, যার শুরু ‘হে আমার আমেরিকার ভাই ও বোনেরা…’, তার মাধ্যমেই পাশ্চাত্য সমাজে প্রথম হিন্দুধর্মের মাহাত্ম প্রচার করেন তিনি।
তাঁর অমূল্য দর্শন ও শিক্ষা দেশের যুবসমাজকে অনুপ্রাণিত করে আসছে। আর সেই বাণী আজকের দিনেও প্রাসঙ্গিক। স্বামীজির কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বাণী রয়েছে, যা আজ এখানে উল্লেখ করা রইল…
– “আপনাকে ভেতরের সত্তা ও আত্মার শক্তিকে বাড়াতে হবে। কেউ আপনাকে শিক্ষা দিতে পারে না, কেউ আপনাকে আধ্যাত্মিক করতে পারে না। আপনার নিজের আত্মা ছাড়া অন্য কোন শিক্ষক নেই।”
– “হৃদয় এবং মস্তিষ্কের মধ্যে দ্বন্দ্বে, আপনার হৃদয়কে অনুসরণ করুন।”
“সবচেয়ে বড় ধর্ম হল নিজের প্রকৃতির প্রতি সত্য থাকা। নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন।”
– “মুক্ত হওয়ার সাহস রাখুন, যতদূর আপনার চিন্তা বৃদ্ধি হয় ততদূর সাহস করুন, এবং আপনার জীবনে তা বহন করার সাহস করুন। ”