অক্ষয় তৃতীয়ার দিনটি লক্ষ লক্ষ ভারতীয়দের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হিন্দু ক্যালেন্ডারের চারটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনের মধ্যে একটি। বৈশাখ মাসে অক্ষয় তৃতীয়াকে নতুন উদ্যোগ শুরু করার জন্য একটি চমৎকার দিন বলে মনে করা হয়। বছরের অত্যন্ত শুভ দিনগুলির মধ্য অন্যতম মঙ্গলকারক দিন অক্ষয় তৃতীয়া। এই দিবসে, কিছু সতর্কতা অবশ্যই অবলম্বন করা উচিত যাতে ঈশ্বরের আশীর্বাদ সর্বদা ভক্তদের উপর বর্ষিত হয়। পাঁজি অনুসারে, বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতে অক্ষয় তৃতীয়া উদযাপন করা হয়। অক্ষয় তৃতীয়ার দিনটি থেকেই সূচনা হয়েছিল ত্রেতা যুগের।
চলতি বছরে মে মাসের ৩ তারিখে পড়ছে অক্ষয় তৃতীয়া। বিশ্বাস করা হয়, এই দিনটিই হল ধন ও সমৃদ্ধির দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য উৎকৃষ্ট! তাই অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে প্রথা মেনে নানা আচার-উপচারে দেবী লক্ষ্মীর পুজো করা হয়। অক্ষয় তৃতীয়ায় সাধারণত গৃহপ্রবেশ এবং উপনয়ন ছাড়া যেকোনও শুভ কাজ করা যায়।
অক্ষয় তৃতীয়া নিয়ে পুরাণে বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনি লুকিয়ে রয়েছে। অক্ষয় শব্দের অর্থ হল যার ক্ষয় হয় না। বৈদিক মতে এই পবিত্র তিথিতে কোন শুভকার্য সম্পন্ন হলে তা অনন্তকাল অক্ষয় হয়ে থাকে। এই বিশেষ দিনে ঘটেছিল অনেক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। সেগুলি কী কী , তা জানুন…
১) কথিত আছে এই শুভদিনে জন্ম নিয়েছিলেন বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম।
২) এদিনই সত্যযুগ শেষ হয়ে ত্রেতাযুগের সূচনা বলে ধরা হয়।
৩) এদিনেই রাজা ভগীরথ গঙ্গা দেবীকে মর্ত্যে নিয়ে এসেছিলেন।
৪) বেদব্যাস ও গনেশ এই দিনে মহাভারত রচনা শুরু করেন।
৫) কেদারবদ্রী-গঙ্গোত্রী-যমুনত্রীর মন্দির ছয়মাস বন্ধ থাকে। আর এইদিনেই মন্দিরের দ্বার উদঘাটন করা হয়। দ্বার খুললেই দেখা যায় সেই অক্ষয়দীপ যা ছয়মাস আগে জ্বালিয়ে আসা হয়েছিল, ঠিক তেমনভাবেই জ্বলছে।
৬) এদিন থেকেই পুরীধামে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উপলক্ষে রথ নির্মাণ শুরু হয়।
৭) এদিনই দুঃশাসন দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করেন ও লজ্জা থেকে সখী কৃষ্ণাকে রক্ষা করেন শ্রীকৃষ্ণ। বনবাসে থাকাকালীন অক্ষয় তৃতীয়াতেই শ্রীকৃষ্ণ দ্রৌপদীকে অক্ষয়পাত্র দান করেন। যাতে বনবাসে তাঁদের কখনও খাদ্যাভাব না হয়।
৮) অক্ষয় তৃতীয়ায় শ্রীকৃষ্ণের বন্ধু সুদামা তাঁকে অন্ন ভোগ দেন। তার পরিবর্তে কৃষ্ণ তাঁর এই প্রিয় বন্ধুকে সুখ ও সমৃদ্ধির আশীর্বাদ করেন।
৯) এদিনই দেবী অন্নপূর্ণার আবির্ভাব ঘটে।
১০) কুবেরের তপস্যায় তুষ্ট হয়ে এদিনই মহাদেব তাঁকে অতুল ঐশ্বর্য প্রদান করেছিলেন। যেহেতু কুবেরের লক্ষ্মী লাভ হয়েছিল তাই এদিনটিকে বৈভব-লক্ষ্মীর পূজা করা হয়।