Ganesh Chaturthi 2023: তুলসী নয়, এই ঘাস ছাড়া গণেশ পুজো অসম্পূর্ণ! অলৌকিক উপায়ে বদলে যাবে গোটা জীবন
Mythology: পুরাণ ও শাস্ত্র মতে, ভগবান গণেশ দূর্বা ঘাস অত্যন্ত পছন্দ করেন। দুর্বা ছাড়া হিন্দু দেবদেবী ও গণেশের যে কোনও পুজো অসম্পূর্ণ বলে মনে করা হয়। গণেশ কেন দূর্বাকে এত পছন্দ করেন, দুর্গা ও কৃষ্ণ পুজোতেও কেন দূর্বা নিবেদন করা হয়, তা অনেকেই জানেন না।
হিন্দুদের কাছে গণেশ চতুর্থীর গুরুত্ব অপরিসীম। এই শুভ দিন থেকেই বাড়িতে বাড়িতে গণপতি বাপ্পার মূর্তি স্থাপন করে পুজো করা হয়ে থাকে। সারা দেশ জুড়েই পালিত হচ্ছে গজাননের বন্দনা। হিন্দু পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে টানা ১০দিন ধরে গণেশের মূর্তি স্থাপন করা থাকে, এই ১০ দিন ধরে অনুষ্ঠিত হয় গণেশোৎসব। এই সময় থেকে থেকেই গণপতি বাপ্পা মোরিয়ার ধ্বনিতে সারা দিক মুখরিত হয়ে ওঠে। গণেশ স্বভাবে খুব পেটুক। তাই এই সময় তাঁর ভোগে মোদক ও নানারকম মিষ্টি নিবেদন করা হয়। এছাড়া নিবেদন করা হয় দূর্বা ঘাস। গণেশ পুজোয় দূর্বা ঘাস অর্পনের বিশেষ তাত্পর্য রয়েছে। কারণ দূর্বা ছাড়া গণেশ পুজো অসম্পূর্ম বলে মনে করা হয়। তাই দূর্বা নিবেদন করলে সব সুখ ও সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়। ফুলে ফেঁপে ওঠে ব্যবসা ও উন্নতি হয় আর্থিক অবস্থার। গণেশ বন্দনায় দূর্বা বেশ কিছু প্রতিকার মেনে চললে জীবনে সব বাধা কেটে যায় বলে ধারণা করা হয়।
গণেশের কাছে দূর্বা কেন প্রিয়?
পুরাণ ও শাস্ত্র মতে, ভগবান গণেশ দূর্বা ঘাস অত্যন্ত পছন্দ করেন। দুর্বা ছাড়া হিন্দু দেবদেবী ও গণেশের যে কোনও পুজো অসম্পূর্ণ বলে মনে করা হয়। গণেশ কেন দূর্বাকে এত পছন্দ করেন, দুর্গা ও কৃষ্ণ পুজোতেও কেন দূর্বা নিবেদন করা হয়, তা অনেকেই জানেন না। এর পেছনে রয়েছে একটি পৌরাণিক কাহিনি। কাহিনি অনুসারে, অনালসুর নামে এক ক্ষমতাশালী অসুর ছিল। তাঁর শক্তিতে আকাশ-পাতাল, উভয় স্থানেই ত্রাস সৃষ্টি করেছিলেন। ঋষিরা তো বটেই, দেবতারাও অনালসুরের আতঙ্কে ভীত হয়ে মহাদেবের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। তাঁর কাছে অভিযোগ জানিয়ে প্রার্থনা জানিয়েছিলেন, অনলাসুর থেকে মুক্তি পেতে যে কোনও উপায় খুঁজে বের করুন।
দেবতাদের দুরাবস্থা দেখে সেই সময় মহাদেব জানিয়েছিলেন, একমাত্র সিদ্ধিদাতা গণেশই অনলাসুরকে বধ করতে পারবেন। যুদ্ধে বেশি কিছু করতে হয়নি, কারণ গণেশ অনলাসুরকে গিলে ফেলেন। এর জেরে গণেশের পেটে প্রচণ্ড জ্বালা ধরতে শুরু হয়। তার পেটের যন্ত্রণা ও জ্বালা কমাতে অনেক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও কিছুতেই স্বস্তি পাচ্ছিলেন না। গণেশের এই অবস্থা দেখে ঋষি কাশ্যপ ২১টি দূর্বার পিণ্ড তৈরি করে গণেশকে খাইয়ে দেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর পেটের জ্বালাপোড়া কমে যায়। সেই থেকে দূর্বা হল গণেশের খুব প্রিয় একটি দ্রব্য। গণেশোৎসবের সময় দূর্বা নিবেদন করে ভগবান গণেশের আশীর্বাদ পাওয়া সম্ভব।
গণেশ বন্দনার সময় কী ভাবে দূর্বা নিবেদন করবেন?
– গণেশকে বিশেষ উপায়ে দূর্বা নিবেদন করা হয়। ২১টি দূর্বাকে একত্র করে ১১ জোড়া দূর্বা প্রস্তুত করা হয়। এই ১১টি সন্ধি গণেশের পায়ে নিবেদন করা উচিত। গণেশ আরাধনার জন্য শুধুমাত্র মন্দিরের বাগানে বা পরিষ্কার জায়গায় জন্মানো দূর্বা নেওয়া উচিত। নিবেদনের আগে পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে তারপর গণেশের পায়ের কাছে রাখুন।
– দূর্বা অর্পণের সময়, ভগবান গণেশের ১১ মন্ত্র জপ করতে হবে। মন্ত্রগুলি হল – ওম গণ গণপতয়ে নমঃ, ওম গণধিপায় নমঃ, ওম উমাপুত্রায় নমঃ, ওম বিঘ্ননাশনায় নমঃ, ওম বিনায়কায় নমঃ, ওম ইশপুত্রায় নমঃ, ওম সর্বসিদ্ধিপ্রদায়ে নমঃ। ওম ইভবক্তায় নমঃ, ওম মুষকাবাহনয় নমঃ, ওম কুমারগুর্বে নমঃ।