Durga Puja 2025: এখানে দেবীজ্ঞানে পূজিত হয় উইঢিবি, গল্প শুনলে চমকে যাবেন
Puja Rituals: শোনা যায়, বহু বছর আগে দূর্গামূর্তির সামনে রেখে দেওয়া হয়েছিল ধূপ এবং প্রদীপ। কিন্তু প্রদীপের শিখা থেকে দুর্গাপ্রতিমার চুলে আগুন ধরে যায়। দ্রুত সেই আগুন নেভানো হলেও পুজোয় খুঁত হয়ে যায়। এরপর আর ওই মূর্তিকে পুজো করা সম্ভব ছিল না।

প্রতিপদ থেকে শুরু, দেবী ৯ রূপে নবরাত্রির ৯ দিন পূজিত হন গোটা ভারতে। বঙ্গে নবরাত্রি পালন খুব একটা প্রসিদ্ধ না হলেও বেশ কিছু জায়গায় তা পালিত হয়। বাংলায় মূল উৎসব দুর্গাপুজো। ৫ দিনের জন্য চার সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়ি আসেন দেবী। পূজিত হন। অবশ্য বহু বনেদি বাড়িতে রয়েছে নানা ভিন্ন পুজোর চলনও। দেবী মূলত সিংহবাহিনী হলেও কোথাও কোথাও সেই সিংহ হয় ঘোটক মুখী। কোথাও দেবীর সঙ্গে চার ছেলেমেয়ে তো থাকেন, সঙ্গে আসেন মহাদেবও। কোথাও আবার পরিবার ছেড়ে নিজের সখী জয়া-বিজয়াকে সঙ্গে নিয়ে আসেন দেবী। এমনকি কিছু কিছু জায়গায় মূর্তির পুজো বদলে ঘট পুজোর প্রচলন রয়েছে। কিন্তু তাই বলে দুর্গা রূপে উই ঢিবিকে পুজো করা হয় শুনেছেন কখনও?
হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন, মাতৃ জ্ঞানে পুজো করা হয় উইয়ের ঢিবিকে। তাও প্রায় দু’শো বছর ধরে। এই রীতি প্রচলিত আছে আসানসোলের ঊষাগ্রাম সংলগ্ন নিউ ঘুসিক গ্রামের হাজরা পরিবারে।
শোনা যায়, বহু বছর আগে দূর্গামূর্তির সামনে রেখে দেওয়া হয়েছিল ধূপ এবং প্রদীপ। কিন্তু প্রদীপের শিখা থেকে দুর্গাপ্রতিমার চুলে আগুন ধরে যায়। দ্রুত সেই আগুন নেভানো হলেও পুজোয় খুঁত হয়ে যায়। এরপর আর ওই মূর্তিকে পুজো করা সম্ভব ছিল না। এই ঘটনার পরে হাজরা পরিবার মূর্তিপুজো বন্ধ করে দেয়। করা হয় ঘট পুজো।
এদিকে সময়ের সঙ্গে পুজোর দায়িত্ব এসে পড়ে দিবাকর হাজরার কাঁধে। তিনি দেখেন দুর্গামন্দিরের চাতালে রয়েছে এক উইঢিবি। কয়েকদিনের মধ্যে সেই ঢিবি বেশ বড় এবং উঁচু হয়ে যায়। উইঢিবি ভেঙে ফেলার কথা ভাবতেই দিবাকরকে স্বপ্নাদেশ নিয়ে নাকি দেবী বলেন, ওই উইঢিবিকে মাতৃজ্ঞানে পুজো করার কথা। কী অদ্ভুত! এই ঘটনার পরেই মূল ঢিবির পাশে গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী এবং কার্তিকের মুখের আদলে আরও কয়েকটি ঢিবি তৈরি হয়েছে। ব্যস! ওই উইঢিবিকে কাপড় পরিয়ে শুরু করেন পুজোর।
মূর্তি না থাকলেও নিয়মে কোনও ত্রুটি নেই। দুর্গাপুজোর সব আচার পালন করা হয়। ঢিবির সামনে ঘট স্থাপন করে পুজোর নিয়মকানুন মেনে জল এনে পুজো হয়। কাপড় এবং বাঁশ দিয়ে নৌকোর মতো করে তৈরি করা হয় দোলা। সপ্তমীতে ওই দোলায় করে নবপত্রিকা আনা হয়। অষ্টমীতে রয়েছে ছাগ বলির প্রথা। দশমীতে দেবীকে বিসর্জন দেওয়া হয় ঘটকে।
