ভারতীয়দের কাছে রাখি বন্ধন হয় একটি পবিত্র উৎসব। জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে সাম্প্রদায়িকতা মেটাতে কবিগুরু রাখি বন্ধন প্রচলন করলেও এর পিছনে রয়েছে কিছু পৌরাণিক কাহিনি । প্রতিবছর শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমার দিন পালিত হয় ভাইবোনের স্বর্গীয় সম্পর্কের মিলন উত্সব । ভ্রাতৃত্ব, সম্প্রীতি, বন্ধুত্ব, মানুষের প্রতি মানুষের গভীর ভালোবাসার অন্যতম প্রতীক হল এই পবিত্র উত্সব । আগামী ২২ অগস্ট, এ বছর পালিত হবে রাখি বন্ধন উৎসব।
তবে এই দিন হনুমান ও গণপতিকেও রাখি বাঁধার প্রচলন রয়েছে। এর পিছনে রয়েছে হিন্দুদের বিশ্বাস। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, হনুমান ও গণপতি দুজনেই মানবকূলের সর্বশ্রেষ্ঠ রক্ষক। পার্বতী-শিব পুত্র গণেশ প্রতিটি বাধাকে অতিক্রম করার প্রেরণা ও শক্তি প্রদান করেন। তাই ভাইয়ের পাশাপাশি এদিন হনুমান ও গনেশকেও রাখি বাঁধেন বহু মহিলা। তাঁদের বিশ্বাস হনুমান ও গনেশের হাতে রাখি বাঁধলে পূণ্য লাভ ও আশীর্বাদ লাভ করা যায়।
অনেকেরই বিশ্বাস করেন, রাখি বন্ধনের দিনে ভগবান হনুমানের কাছে রাখি বাঁধলে ভাই-বোনের মধ্যে অভিমান-রাগ-ঝগড়া মিটে গিয়ে পরিবেশ পরিস্থিতিত শান্ত হয়। এই দিন গনেশ পুজো করলে ভাই-বোনের মধ্যে ভালোবাসা দৃঢ় হয়। সম্পর্ক অটুট থাকে।
এইদিন বোনেদের হাত থেকে অক্ষত, সুপারি. গোলাপি কাপড় মোড়ামো একটি রূপোর মুদ্রা নেন ভাইয়েরা।এই দিন বোনেদের উপহার দেওয়ার প্রচলন রয়েছে। রাখি বন্ধনের দিন বোনকে কাপড় ও মিষ্টি দিয়ে উপহার দিন। পুজো শেষ হলে বাবা-মা ও বাড়ির প্রবীণদের পা স্পর্শ করে আশীর্বাদ নিতে একেবারেই ভুলবেন না যেন। বোনেদের সুরক্ষার খাতিরে ও ঘরের মধ্যে থেকে অশুভ শক্তিকে দূর করার জন্য একটি গোলাপী কাপড়ের মধ্যে সুপারি বেঁধে ধরের এককোণে রেখে দিন।
পূর্ণিমার ঈশ্বর হলেন চন্দ্র। আর এই দিন ধুমধাম করে গনেশ পুজো, নারায়ণ পুজো হয়ে থাকে। এই শুভ তিথিতে শিবের সঙ্গে চন্দ্রদেবের আরাধনা করলে উপাসকরে জন্য বিশেষ মর্যাদা প্রাপ্ত হয়। উভয়েরই পুজো করলে ঘরে শান্তি ও সুখ-সমৃদ্ধি বৃদ্ধি ঘটে।
আরও পড়ুন: রাখি বন্ধন কবে থেকে শুরু হল? এর নেপথ্যে পৌরাণিক ইতিহাস অনেকেরই অজানা!