Sawan 2022: শিবপুরাণ মতে, শিবপুজোয় ভুলেও শঙ্খ বাজাবেন না! জানুন এর আসল কারণ
Importance Of Conch Shell: শিবের পুজোয় শঙ্খের ব্যবহার কী? কী কারণে মহাদেবকে শঙ্খ জল দেওয়া হয় না বা শিবের পুজায় শঙ্খ বাজানো হয় না, তা অনেকেই জানেন না।
ধর্মে প্রতিটি দেবতার পুজো করার জন্য কিছু বিশেষ নিয়ম রয়েছে। যেভাবে শঙ্খ (Conch Shell) ভগবান বিষ্ণুর (Lord Vishnu) কাছে অত্যন্ত প্রিয় এবং শঙ্খ থেকে জল নিবেদন করলে ভগবান বিষ্ণু অত্যন্ত প্রসন্ন হন, কিন্তু মহাদেবের (Lord Shiva) পুজোয় শঙ্খ ব্যবহার করা হয় না। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে শঙ্খকে অত্যন্ত পবিত্র মনে করা হয়। যে কোনও ধরনের পুজোই হোক, প্রতিটি পুজোয় আরতি করার পর সকলের গায়ে শঙ্খের জল ছিটিয়ে দেওয়া হয়। শিবের পুজোয় শঙ্খের ব্যবহার কী? কী কারণে দেবাদিদেব শিবকে শঙ্খ জল দেওয়া হয় না বা শিবের পুজায় শঙ্খ বাজানো হয় না, তা অনেকেই জানেন না। তবে শিবপুরাণে এর উল্লেখ রয়েছে। হিন্দু শাস্ত্র মতে, শিবের মাথার উপরের দিকে কোথাও কখনও শঙ্খ রাখবেন না। শঙ্খের জল যেন শিবের মূর্তি অথবা শিবলিঙ্গেও না পড়ে, তা লক্ষ্য রাখা দরকার। তা নাহলে কোনও বিপদ ঘটে যেতে পারে।
পুত্রের উপহার
শিব পুরাণের কিংবদন্তি অনুসারে, রাক্ষস রাজা দম্ভের কোনও সন্তান ছিল না। সন্তান লাভের জন্য তিনি ভগবান বিষ্ণুর কঠোর তপস্যা করেছিলেন। অসুর রাজার কঠোর তপস্যায় খুশি হয়ে ভগবান বিষ্ণু তাকে বর চাইতে বললেন। তখন অহংকার বলবান পুত্রের বর চাইল। বিষ্ণুজী ‘তস্তস্তু’ বলে অদৃশ্য হয়ে যান। এরপর দম্ভের একটি পুত্রের জন্ম হয়, যার নাম ছিল শঙ্খচূর।
শঙ্খচুরের তপস্যা
শঙ্খচূর ব্রহ্মাজীকে খুশি করার জন্য পুষ্করে কঠোর তপস্যা করেছিলেন। তার তপস্যায় খুশি হয়ে ব্রহ্মদেব তাকে বর চাইতে বলেন। তাই শঙ্খচুর তাকে দেবতাদের কাছে অজেয় হতে বললেন। ব্রহ্মাজী অস্তু বলে তাঁকে শ্রীকৃষ্ণ কবচ দেন। এরপর শঙ্খচূরের তপস্যায় খুশি হয়ে ব্রহ্মার ধর্মধ্বজ কন্যা তুলসীকে বিয়ে করার আদেশ দিয়ে অন্তর্হিত হন। ব্রহ্মার আদেশে তুলসী ও শঙ্খচূরের বিবাহ সম্পন্ন হয়।
শিবও হত্যা করতে ব্যর্থ হন
ব্রহ্মাজীর বর পেয়ে শঙ্খচূরের অহংকারবোধ বেড়ে যায়। সেই অহংকারে ত্রিভুবনে নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। শঙ্খচূরের কাছে হেরে গিয়ে স্বর্গের সব দেবতারা বিষ্ণুর কাছে গিয়ে সাহায্য চান। কিন্তু ভগবান বিষ্ণু স্বয়ং অহংকারী পুত্রের বর দিয়েছিলেন। এই কারণেই বিষ্ণু শঙ্করের পুজো করেছিলেন, তারপরে শিব দেবতাদের রক্ষা করতে এগিয়ে আসেন। কিন্তু শ্রী কৃষ্ণ কবচ এবং তুলসীর পুণ্য ধর্মের কারণে শিবও তাকে হত্যা করতে সক্ষম হননি।
হাড় থেকে জন্ম হয়েছে শঙ্খের
বধ করতে সক্ষম হয়ে বিষ্ণু ব্রাহ্মণের রূপ ধারণ করেছিলেন। অসুর রাজার কাছ থেকে তাঁর কৃষ্ণ বর্ম কেড়ে নিয়ে শঙ্খের রূপ ধারণ করেছিলেন বিষ্ণু। শুধু তাই নয় তুলসীর বিনয় হরণ করেছিলেন। এর পর ভগবান শিব তার ত্রিশূল দিয়ে শঙ্খচূরকে বধ করেন। বিশ্বাস করা হয় যে তাঁর হাড় থেকে শঙ্খের জন্ম হয়েছিল এবং তিনি বিষ্ণুর প্রিয় ভক্ত ছিলেন। এই কারণেই ভগবান বিষ্ণুকে শঙ্খ দিয়ে জল নিবেদন করা অত্যন্ত শুভ। তবে তাঁকে বধ করা মহাদেবের পুজোয় শঙ্খের ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।