মা কালীকে নিয়ে যত গল্প কথার প্রচলন রয়েছে তা বোধ হয় আর কোনও দেব দেবীকে নিয়ে নেই। তিনি দয়াময়ী, আবার তিনিই উগ্রচণ্ডা রণচণ্ডী। তাঁকে নিয়ে নানা কাহিনী প্রচলিত রয়েছে বিশ্বের নানা প্রান্তে। এই বাংলার নানা প্রান্তে আছে বহু জাগ্রত কালী মন্দির। সেই সব মন্দির ঘিরে আছে আবার অজস্র লৌকিক ও অলৌকিক কাহিনী।
কোথাও খোদ মায়ের বুকে পা দিয়ে পুজো করেন পুরোহিত মশাই, কোথাও আবার পুরোহিতকে বাঁশি শুনিয়ে সন্তুষ্ট করতে হয় দেবীকে। কোথাও তিনি সাদা তো কোথাও আবার শ্যামবর্ণা। সারা বাংলার মতোই কলকাতাতেও আছে অজস্র কালী মন্দির। সেই সব মন্দির ঘিরেও আছে নানা ধরনের কাহিনী। তেমনই এক মন্দির হল উত্তর কলকাতার সুকিয়া স্ট্রিটের শ্যামসুন্দরী কালী মন্দির। যা শুনলে সকালবেলাও গায়ে কাঁটা দেবে।
কথিত, এই মন্দিরে কালী মায়ের জীবন্তরূপ বিরাজ করে। তাই অনেকে এই মন্দিরকে জীবন্ত কালীর মন্দিরও বলে থাকেন। দেবী এখানে পুজিত হন শিশু কন্যা রূপে। তাই এখানে অম্বুবাচি পালিত হয় না। এমনকি দেবীকে মাছ-মাংস ভোগ দেওয়া হয় না। বিশ্বাস, শ্যামসুন্দরী মা কখনও কাউকে খালি হাতে ফেরান না। ভক্তি ভরে পুজো দিলে পূরণ হয় মনবাঞ্ছা।
মন্দিরের গর্ভগৃহছে দেবীর ছোট মূর্তি। অদ্ভুত ভাবে এই কালী মন্দিরে দেবীর সঙ্গেই বিরাজমান জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলরাম। দেবীর পাশে আছেন ভৈরব।
এই মন্দিরে প্রতিদিন দু’বেলা অন্ন ভোগ রান্না করা হয়। প্রসাদ না নিয়ে কোনও ভক্তকে ফেরানো হয় না। শোনা যায়, দেবী নাকি একবার স্বপ্নাদেশ দিয়ে বলেছিলেন যদি ভোগ কম পড়ে তাহলে ভিক্ষা করতে হবে কিন্তু ভক্তদের ভোগ না দিয়ে ফেরানো যাবে না।
তবে সবচেয়ে অলৌকিক বিষয় হল, দেবী নাকি এখানে জীবন্ত রূপে বিরাজমান। ভক্তদের অনেকের দাবি, তাঁরা নাকি দেবীকে চোখের পলক ফেলতে দেখেছেন। শোনা যায়, অমাবস্যার রাতে গোটা মন্দির চত্বরে হেঁটে বেড়ান শ্যামাসুন্দরী মা, কথা বলেন ফিসফিস করে। তাই প্রতি অমাবস্যায় মাত্র একটি প্রদীপ জ্বালিয়ে মাতৃ আরাধনা করা হয়। এখন পৌষ কালী পুজো চলছে। এই সময় একবার যাবেন নাকি জ্যান্ত কালীর দর্শন পেতে?