Navratri: সারা বছর স্বাভাবিক থাকলেও নবরাত্রির দিনগুলিতে এই মন্দিরের দেবীমূর্তির আকার বৃদ্ধি পায়!
আপনি এটি জেনে অবাক হবেন যে ওই মন্দিরের প্রতিষ্ঠিত দেবীর মূর্তি সারা বছর স্বাভাবিক থাকলেও নবরাত্রির দিনগুলিতে মূর্তির আকার দিন দিন বাড়তে থাকে। নবমীর দিন গর্ভগৃহ থেকে মায়ের মূর্তি বের করা হয়।
লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, শেরওয়ালি ভক্তদের ডাকে নবরাত্রির সময় অনেক মন্দিরে দেবী দুর্গার আগমন ঘটে। যেখানে দেবী তাঁর ভক্তদের রক্ষা করতে উদ. হোন। এমন অনেক লৌকিক ও পৌরাণিক কাহিনি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের অন্যতম ও অলৌকিক মন্দিরের কথা না বললেই নয়। এই মন্দির পাণ্ডবদের কুলদেবীর মন্দির নামে পরিচিত। আপনি এটি জেনে অবাক হবেন যে ওই মন্দিরের প্রতিষ্ঠিত দেবীর মূর্তি সারা বছর স্বাভাবিক থাকলেও নবরাত্রির দিনগুলিতে মূর্তির আকার দিন দিন বাড়তে থাকে। নবমীর দিন গর্ভগৃহ থেকে মায়ের মূর্তি বের করা হয়।
মধ্যপ্রদেশের মোরেনার কাছে কৈলরাস-পাহাড়গড় সড়কে বনাঞ্চলের পাহাড়ে অবস্থিত। বনের দেবী ভবানী ‘মা বধির-ওয়ালি মাতা’ নামে মন্দিরে অধিষ্ঠিত। এই মন্দিরে বিশেষত্ব হল, নবরাত্রির নয়দিন ধরে দেবীর প্রতিমা প্রতিদিন আকারে বাড়তে থাকে। নবমীর দিন আধিষ্ঠিত মূর্তি গর্ভগুহা থেকে বাইরে বের করা হয়। মন্দির সম্পর্কে বলা হয়., নির্বাসনের সময় পাণ্ডবরা এখানে কুলদেবীর পুজো করেছিলেন। পুজোর সময় কুলদেবী একটি শিলার মধ্যে প্রবেশ করেছিলেন। জানা যায়, স্থানীয় লোকজন বহুবার মন্দিরের স্থাপিত শিলার প্রতিমার নতুন রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবারই সব প্রচেষ্টা ব্য়র্থ হয়ে গিয়েছে। একই কাহিনি মহাভারতেও পাওয়া যায় । যেখানে পাণ্ডবরা নির্বাসনের সময় এখানে দেবীকে নিয়ে এসছিলেন। সেখানেই দেবীকে প্রতিষ্ঠিত করেন। ঘন জঙ্গলে ঘেরা এলাকাতেই সেইসময় কুলদেবীর আরাধনা করেছিলেন পাণ্ডবরা। ১১৫২ সালে স্থানীয় বাসিন্দা বিহারি বাহারায় বাড়ি তৈরির করেন ও ১৬২১ সালে খান্দেরাও ভগতে বাহারা মাতার মন্দির স্থাপন করেন। তারপর থেকে সেই মন্দিরে পুজো-পর্ব চলে আসছে আজও।
বাসন্তী ও শারদীয় নবরাত্রির উপলক্ষ্যে এই মন্দিরেরর অলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন রূপ দেখতে প্রত্যেক রাজ্য থেকেই ভক্তদের ভিড় হয়। এমনকি এই সময় বিরাট মেলাও বসে মন্দির চত্বরে। এই মন্দির ঘিরে পৌরানিক কাহিনি রয়েছে। আচার অনুযায়ী পাণ্ডবরা কুলদেবীর পুজো করলে তিনি বেশ প্রীত হয়ে দেবী অর্জুনকে বলেন, হে অর্জুন, আমি তোমার ভক্তি ও উপাসনায় খুশি হয়েছি। তুমি কী বর চাও বলো। এই প্রশ্নের উত্তরে অর্জুন বলেন, হে মাতা, আমি তোমার কাছে কোনও বর চাই না। বা কোনও বরের আশায় পুজো করিনি। আমার একটাই ইচ্ছা যে সময় ও নীতি অনুযায়ী আমাদের পাঁচজনকে ১২ বছরের নির্বাসন কাটাতে হবে। সেই সময়ে আমাদের সঙ্গে সুখে-শান্তিতে থাকুন।
অর্জুনের উত্তরে খুশি হয়ে দেবী নিজেই অর্জুনকে বর দেন। তিনি বলেন, তুমি আমার কাছে প্রিয় একজন ভক্ত। আমি চাইলেও তোমাকে প্রত্যাখ্যান করতে পারব না। অর্জুন আমি তোমার সহ্গে থাকতে রাজি। কিন্তু তুমিই সবসময় আগে আগে থাকবে, আমি থাকব তোমার পিছনে। যেখানেই তুমি আমার দিকে ফিরে তাকাবে সেখানেই আমি স্থায়ীভাবে বাস করব। দেবীর কথায় রাজি হয়ে গেলেন অর্জুন। কথিত আছে, অনেক দূর হেঁটে যাওয়ার পর জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে অর্জুন শহরের পথে পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু কুলদেবী পিছনে আসছেন কিনা তা দেখার জন্য পিছনে ফেরেন তিনি। দেবীর বরের কথা একেবারেই ভুলে গিয়েছিলেন অর্জুন। হস্তিনাপুর থেকেই অর্জুনকে অনুসরণ করেছিলেন তিনি। অর্জুন দেবীর নির্দেশ অমান্য করতেই দেবী কস্তা একটি শিলার মধ্যে প্রবেশ করেন। অর্জুন বারবার কুলদেবীর কাছে অনুনয় -বিনয় করলেও কুলদেবী বললেন, অর্জুন, এখন আমি এই শিলার আকারে এখানেই থাকব।
তারপর থেকে আজ পর্যন্ত পাণ্ডবদের কুলদেবীকে এখনও শিলা আকারে পূজা করা হয়। জানা যায় যে, বধির মায়ের মন্দিরে একটি বিস্ময়কর জলাশয় আছে। এই পুকুরের জল কখনো শুকায় না। বিশ্বাস করা হয় যে ভক্তরা এই জল গ্রহণ করলে, তাঁদের সমস্ত পাপ এবং ত্রুটি দূর হয়ে যায়। এর পাশাপাশি সব ইচ্ছাও পূরণ হয়।
আরও পড়ুন: Navaratri Puja 2021: নবরাত্রীতে নয় দেবীর আরাধনায় ব্যস্ত থাকেন ভক্তরা, এই নয় দেবীর নাম জানা আছে?