আজ চতুর্থী। পাশাপাশি আজ নবরাত্রির চতুর্থ দিন। নবরাত্রির সময় ভারতের সর্বত্র দেবী দুর্গার আরাধনা করা হয়। কিন্তু হিন্দু পুরাণ মতে, নবরাত্রি দেবী দুর্গার নয়টি রূপের পুজো করা হয়। দেবীপক্ষ শুরু থেকে নবরাত্রির নবম দিন পর্যন্ত দুর্গার ওই নয়টি রূপের আরাধনা করা হয়। কী-কী এই নয় রূপ এবং এঁদের বিশেষত্ব কী চলুন জেনে নেওয়া যাক…
শৈলপুত্রী- নবরাত্রির প্রথম দিনে দেবী পার্বতীর শৈলপুত্রী রূপের আরাধনা করা হয়। শৈলপুত্রী হলেন শৈলরাজ হিমালয়ের কন্যা। পরজন্মে তিনি ছিলেন শিবের পত্নী। এই দেবীর বাহন হল বৃষ। দেবীর ডান হাতে থাকে ত্রিশূল এবং বাঁ হাতে পদ্ম থাকে। এই কারণে এই দেবীকে শূল-ধরিনিও বলা হয়।
ব্রহ্মচারিণী- নবরাত্রির দ্বিতীয় দিনে পূজিত হন দেবী ব্রহ্মচারিণী। ব্রহ্মচারিণী কথার অর্থ হল তপশ্চারিণী বা তপ আচরণকারী। এই দেবীর ডান হাতে থাকে রুদ্রাক্ষের জপের মালা এবং বাম হাতে থাকে কমণ্ডলু।
চন্দ্রঘণ্টা- নবরাত্রির তৃতীয় দিনে দেবীর তৃতীয় রূপ চন্দ্রঘণ্টার পুজো করা হয়। এখানে দেবীর মাথা অর্ধেক থাকে কিন্তু এই দেবীর শরীরের রঙ স্বর্ণের মতো উজ্জ্বল। দেবী দুর্গার মতো দেবী চন্দ্রঘণ্টাও দশভুজা। তাঁর দশ হাতে গদা, ত্রিশূল, কমণ্ডলু, তরোয়াল, ধনুর্বাণ, পদ্ম, জপমালা থাকে।
কুষ্মাণ্ডা- চতুর্থ দিনে, আজ নবরাত্রির চতুর্থী তিথিতে কুষ্মাণ্ডা দেবীর আরাধনা করা হয়। দেবী কুষ্মাণ্ডা হলেন সিংহবাহিনী, ত্রিনয়নী ও অষ্টভুজা। আটটি হাতে সুদর্শনচক্র, ধনুর্বাণ, রক্তপদ্ম, কমণ্ডলু, অমৃতপূর্ণ কলস রয়েছে।
স্কন্দমাতা- নবরাত্রির পঞ্চমী তিথিতে পূজিত হন দেবী স্কন্দমাতা। স্কন্দমাতা হলেন কার্তিকের জননী। মূলত এই কারণেই তাঁর নাম স্কন্দমাতা।
কাত্যায়নী- নবরাত্রির ষষ্ঠ দিনে নবদুর্গার ষষ্ঠ রূপ কাত্যায়নীর পুজো করা হয়। এই রূপেই দেবী দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন।
কালরাত্রি- নবরাত্রির মহাসপ্তমীতে দুর্গার সপ্তম রূপ কালরাত্রির আরাধনা করা হয়। এই দেবীর বাহন হল গাধা। দেবীর তিন হাতে থাকে বিভিন্ন অস্ত্র। আর একটি হাত দিয়ে দেবী ভক্তদের আশীর্বাদ দেয়।
মহাগৌরী- মহাষ্টমীর রাতে নবদুর্গার অষ্টম রূপ মহাগৌরীর পুজো করা হয়। হিন্দু ধর্মে কথিত রয়েছে যে, দেবীর এই রূপের পুজো করলে সমস্ত পাপ ধুয়ে যায়। চার হাত বিশিষ্টা মহাগৌরী দেবীর বাহন ষাঁড়। এই দেবীর হাতে থাকে মুদ্রা, পদ্ম, ত্রিশূল এবং ডমরু।
সিদ্ধিদাত্রী- নবদুর্গার নবম তথা শেষ রূপ হল সিদ্ধিদাত্রী। নবদুর্গার এই রূপও অষ্টভুজা। দেবীর এই রূপের পুজো করলে সিদ্ধি লাভ করা যায়। পুরাণে কথিত রয়েছে, স্বয়ং মহাদেব দেবী পার্বতীকে সিদ্ধিদাত্রী রূপে পুজো করেছিলেন।