মালদা: বাতাসে পুজোর গন্ধ। দুর্গাপুজোয় মেতে উঠেছে বাঙালি। আর দুর্গাপুজোর (Durga Puja) একটা রীতি কুমারী পুজো। সাধারণত অষ্টমীতে হয় কুমারী পুজো। কিন্তু, মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদা সরকার বাড়িতে দশমীতে হয় কুমারী পুজো। কিন্তু, দশমীতে কেন কুমারী পুজো? সরকার বাড়ির সদস্য নীলেন্দ্র সরকার জানান, ২২০ বছরের এই পুজোয় পূর্বপুরুষদের চালু করা রীতি অনুসারে কুমারী পুজো হয় দশমীতে।
এই পুজোর প্রতিষ্ঠাতা ক্ষেত্রমোহন সরকার। তিনি ছিলেন পোকমা এলাকার জমিদার। হাতিতে চেপে চাঁচলের রাজার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু কুশিদায় হাতির পা মাটিতে বসে যায়। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষেত্রমোহনের আর চাঁচলে যাওয়া হয়নি। কুশিদায় রাতে থাকার সময় স্বপ্নাদেশ পান তিনি। তারপর কুশিদাতেই পুজো শুরু করেন। তাঁর উত্তর পুরুষরা আজও নিষ্ঠার সঙ্গে সেই পুজো করে চলেছেন।
চাঁচল বিধানসভার কুশিদা এলাকায় রয়েছে সরকার বাড়ি। চল্লিশ শতক জমির উপরই গড়ে উঠেছে জমিদার ক্ষেত্রমোহনের আদি বাড়ি ও দুর্গাদালান। বোধনের আগে দেবীকে বেনারসি ও সোনার অলংকার দিয়ে সাজিয়ে তোলেন বাড়ির মেয়ে বউরা। নিয়ম রীতি মেনে ষষ্ঠীর দিন হয় বোধন। সপ্তমীতে নবপত্রিকাকে স্নান করিয়ে নিয়ে এসে তাঁকে স্থাপন করা হয় দুর্গা দালানে। তারপর চলে পুজো।
সরকার বাড়ির দুর্গা পুজোয় কুমারী পূজিতা হন দশমী তিথিতে। পাশের নদীতে ঘট বিসর্জনের পরই নদী থেকে মাছ সংগ্রহ করে আনা হয়। যে কুমারী মেয়ের পুজো হবে তাকে নদী থেকে সংগ্রহ করা মাছ দেখানোর রীতি রয়েছে। দশমীর দিন দেবীর বিদায় বেলায় ধুনুচি নাচ এবং সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন সরকার বাড়ির মহিলারা। গোধূলি লগ্নে দেবীর মৃন্ময়ী প্রতিমা নিরঞ্জন দেওয়া হয় গ্রামের পাশের নদীতে।